আসিফ সাহেব মধ্যবয়সি । একটি কোম্পানিতে চাকরি করেন । অফিসের দায়িত্বপূর্ন কাজে সবসময় ব্যস্ত থাকতে হয় । শত ব্যস্ততার মাঝেও স্বাস্থ্যের ব্যাপারে সচেতন ইদানীং পায়খানার ব্যাপারে একটু সমস্যা হচ্ছে । পায়খানা এখন আর আগের মতো নয়। আগে প্রতিদিন সকালে নিয়মিত কোষ্ঠ পরিস্কার হতো। এখন তা কখনও সকালে কখনও বিকালে কখনও একাধিকবার হচ্ছে। আসিফ সাহেব তেমন পাত্তা দেননি। হয়তো খাওয়া-দাওয়ায় কোন সমস্যা হয়েছে, সেজন্য এরকম সমস্যা হচ্ছে। সমস্যাটি তার ক্রমান্বয়ে বাড়তে লাগল। কিন্তু তিনি কার সঙ্গে আলাপ করবেন। এ বিষয়ে আলাপ করতে সঙ্কোচ বোধ হয়। তিনি পেঁপে ইত্যাদি খেয়ে স্বাভাবিক থাকার চেষ্টা করেন। এভাবে অনেক মাস চলে যায়। শেষে তিনি তার ব্যক্তিগত চিকিৎসকের কাছে বিষয়টি খুলে বলেন। তিনি পেট টিপেটুপে পরীক্ষা করে বললেন সব ঠিক আছে। আপনার মনে হয় খাবারে গন্ডগোল আছে। তবুও আপনার সন্দেহ হলে একজন বিশেষজ্ঞ কোলোরেকটাল সার্জনের কাছে যান। এরপর যাব যাব করেও আসিফ সাহেব বেশ কিছুদিন পার করে দেন। তারপর হঠাৎ একদিন তার পায়খানা বন্ধ হয়ে যায়। পেট একটু ফেঁপে যায়। তড়িঘড়ি করে তিনি একজন সার্জনের শরণাপন্ন হন। সার্জন সাহেব তাকে পরীক্ষা করেন এবং পাররেক্টাল অর্থাৎ পায়ুপথের পরীক্ষা করেই তার মুখ কালো হয়ে যায়। কারন সেখানে একটি টিউমার পায়খানার রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে ।পরীক্ষা করে দেখা গেল সেটি রেক্টাল ক্যান্সার। রেক্টাল ক্যান্সার বর্তমানে বেশ বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্তের মধ্যে যাদের খাদ্যাভাস পরিবর্তিত হয়ে গেছে। যারা ফাস্টফুড, রিফাইন্ড ফুড বেশি খাচ্ছেন, শাকসবজি কম খাচ্ছেন তাদের এই রোগ হয়ার সম্ভাবনা আসিফ সাহেবের মতো বাড়ছে।
রেক্টাল ও কোলন ক্যান্সারের লক্ষন কী? এ ক্যান্সার হওয়ার অনেকদিন পর্যন্ত কোনো লক্ষণ দেখা নাও দিতে পারে। তারপরও রোগের প্রথম দিকে রোগী খেয়াল করলে যেসব বিষয় বুঝতে পারবেন সেগুলো হচ্ছে- পায়খানার অভ্যাস পরিবর্তিত হওয়া অর্থাৎ আগে যদি দিনে একবার কোষ্ঠ পরিস্কার হতো, এখন তা কয়েকবার হওয়া। মলের প্রকৃতি পরিবর্তিত হওয়া অর্থাৎ আগে স্বাভাবিক মল হলে এখন তা আগের চেয়ে কঠিন অথবা নরম হওয়া, কালো পায়খানা হওয়া, সকাল বেলা পাতলা পায়খানা হওয়া, মিউকাস যাওয়া, একবার টয়লেটে যাওয়ার পর মনে হয় পায়খানা রয়ে গেছে আবার হবে ইত্যাদি। আর হতে পারে ওজন কমে যাওয়া, পেট ব্যথা করা ইত্যাদি। একটি বিষয় মনে রাখতে হবে, প্রাথমিক পর্যায়ে রেক্টাল ক্যান্সার নির্নয় করা গেলে তার চমৎকার চিকিৎসা আছে বাংলাদেশেও । বাংলাদেশেই কোলোরেক্টাল সার্জনের চিকিৎসার ফলে অনেক রোগী সুস্থ আছেন ১০/১২ বছর । কিন্তু রোগ অগ্রসর হয়ে গেলে এর চিকিৎসা পৃথিবীর কোথাও নেই। তাই এই জাতীয় লক্ষন দেখা দিলে দ্রুত একজন বিশেষজ্ঞ সার্জন বিশেষত কোলোরেক্টাল সার্জন এর শরণাপন্ন হওয়া অত্যন্ত জরুরী।
কোলোরেকটাল সার্জন
জাপান বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশীপ হসপিটাল,
৫৫, সাতমসজিদ রোড, জিগাতলা মোড়, ধানমন্ডি, ঢাকা ।
হেল্পলাইনঃ ০১৮৬৫৫৫৫৫১১ ; ০১৬২৬৫৫৫৫১১।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন