বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

ভারতে ভর্তুকির ৫শ টাকা কেজি দরে ইলিশ রপ্তানি হলেও দক্ষিণাঞ্চলের অভ্যন্তরীণ বাজারে দেড় হাজার টাকা কেজি

৫শ টনের স্থলে অনেক বেশী রপ্তানির অভিযোগ

নাছিম উল আলম | প্রকাশের সময় : ৫ অক্টোবর, ২০১৯, ৫:০৬ পিএম

মূল প্রজনন ক্ষণ ঘনিয়ে আসার আগে ভর্তুকি দরে পার্শ্ববর্তী দেশে রফতানি হলেও দেশের প্রধান উৎপাদন এলাকা দক্ষিণাঞ্চলে এখনো ভালমানের প্রতি কেজি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা দরে। অথচ গত সপ্তাহ থেকে বরিশাল ও ভোলার পাইকারী মোকাম থেকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে প্রতিকেজি ৫ ডলার মূল্যে ইলিশ রপ্তানী হচ্ছে। বাংলাদেশী টাকার মানে যার দাম প্রতি কেজি ৫শ টাকারও কম। শারদীয় দুর্গা পূজা উপলক্ষে শুভেচ্ছার নিদর্শন হিসেবে বাংলাদেশ থেকে ৫শ টন ইলিশ ভর্তুকি দরে ভারতে রপ্তানির কথা জানিয়েছিল সরকার। যার সিংহভাগই বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চল থেকে প্রেরণ করা হচ্ছে। তবে ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, ‘সারা দেশ থেকে মোট ৫শ টন ইলিশ প্রেরণের কথা থাকলেও শুধু দক্ষিণাঞ্চল থেকেই তার অনেক বেশী ইলিশ পাঠান হয়েছে’। এরফলে অভ্যন্তরীণ বাজারে ইলিশের দামও বেড়ে গেছে। 

বিষয়টি নিয়ে মৎস্য অধিদপ্তর বা সংশ্লিষ্ট কোন দপ্তরই সঠিক কিছু বলতে পারেন নি। মৎস্য অধিদপ্তর সহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ের অন্য দপ্তরও এ পর্যন্ত ঠিক কতটন ইলিশ দক্ষিণাঞ্চল থেকে ভারতে গেছে তা বলতে পারেনি শণিবার পর্যন্ত। তাদের মতে, ‘ বিষয়টি দেখভাল করছে বানিজ্য মন্ত্রনালয়। ভারতে রপ্তানির জন্য এক কেজি সাইজের ভাল মানের ইলিশ বাছাই করেই পাঠান হয়েছে। যেহেতু সারা দেশের ৬৫Ñ৭০ ভাগ ইলিশ দক্ষিণাঞ্চলে উৎপাদন ও আহরন হয়, সেহেতু এঅঞ্চল থেকেই বেশী যাবার কথা’।

এদিকে ভারতে ভতর্’কি দরে ইলিশ রপ্তানী হলেও বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চলের বাজারে এক কেজি সাইজের প্রতিমন ইলশের পাইকারী দর ৪০ হাজার টাকার ওপরে। ফলে খুচরা বাজারে ঐ সাইজের ইলিশ বিক্রী হচ্ছে এলাকা ভেদে ১২শ থেকে দেড় হাজার টাকা কেজি দরে। আর ৫শ গ্রাম থেকে সাড়ে ৭শ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রী হচ্ছে হাজার টাকা কেজি দরে। ৮শ গ্রাম থেকে সাড়ে ৯শ গ্রাম ওজনের ইলিশের কেজি ১১শ টাকা থেকে ১২শ টাকা ।

এবারো সারা দেশের মত দক্ষিণাঞ্চলে বিলম্বিত বৃষ্টিপাতের কারনে মূল প্রজনন ক্ষনের আগেই সাগর থেকে ঝাকে ঝাকে ইলিশ উপক’ল নদ-নদী মোহনা সহ অভ্যন্তরীন জলাশয়ে চলে আসায় গত প্রায় মাস খানেক যাবত দক্ষিণাঞ্চলে প্রচুর ডিমওয়ালা ইলিশ ধরা পড়ছে। অথচ মাস খানেকের মধ্যেই এসব মা ইলিশ উপক’লে ডিম ছাড়ার কথা। গত মাস খানেক ধরে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ায় বাজারে এর দামও কমে এসেছিল। আর ইলিশের প্রভাবে অন্য মাছের দামও কিছুটা হৃাস পায়। তবে ভারতে ৫শ টনের ‘সিমিত রপ্তানী’ কার্যক্রম শুরু হবার পারে বাজারে এ মাছের দাম চড়া। ফলে অন্য মাছের দামও বেড়েছে। বরিশাল ও ভোলার পাইকারী মোকাম থেকে ভারতে রপ্তানীর জন্য এখনো ভাল মান ও সাইজের ইলিশ সংগ্রহ চলছে। ব্যাবসায়ীদের মতে, ৯অক্টোবর পর্যন্ত ইলিশ রপ্তানী অব্যাহত থাকতে পারে। ‘মাত্র ৫শ টন ইলিশ রপ্তানীর ফলে অভ্যন্তরীন বাজারে তার কোন বিরূপ প্রভাব পড়ার কথা নয়’, এমন প্রশ্নের জবাবে নাম প্রকাশে একাধীক ব্যাবসায়ী জানিয়েছেন, ‘৫শ টনের আড়ালে কয়শ টন যাচ্ছে তার খবর কেউ রাখে কি ?’

এদিকে আশিণের বড় পূর্ণিমার সময়কে ইলিশের মূল প্রজনন কাল ধরে আগে পড়ের ২২দিন ইলিশ আহরন, পরিবহন ও বিপননে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হচ্ছে ৯অক্টোবর মধ্য রাত থেকে। এ সময়কালে উপক’লের ৭হাজার বর্গ কিলোমিটার মূল প্রজনন এলাকায় সব ধরনের মৎস্য আহরন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকবে। পাশাপাশি সারা দেশের অভ্যন্তরীন ও উপকূলীয় জলাশয় সহ সাগর এলাকায় ইলিশ আহরন, পরিবহন সহ দেশের বাজারে তার বিপননও বন্ধ থাকবে। মৎস বিজ্ঞানীদের সুপরিশের আলোকে ১৯৫০ সালের মৎস্য আইনের আওতায় এলক্ষে সব প্রস্তুতিও ইতোমধ্যে গ্রহন করেছে সরকার।

তবে দক্ষিণাঞ্চলের মৎসজীবীগন ‘নিষেধাজ্ঞার এ ২২দিনে ভারতীয় জেলেরা যাতে কোন অবস্থাতেই বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের সাগর সীমায় প্রবেস করে কোন মাছ ধরতে না পারে তা নিশ্চিত করা’র দাবী জানিয়েছেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন