শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

আইসিটি এন্ড ক্যারিয়ার

চাকুরির নিশ্চয়তার জন্য প্রস্তুতির গাইডলাইন

মো. ইকরাম | প্রকাশের সময় : ১০ অক্টোবর, ২০১৯, ১:৫২ পিএম

মামু-চাচা ছাড়া চাকুরি হয়না, কিংবা ঘুষ ছাড়া চাকুরি হয়না, এ অভিযোগটি বর্তমান তরুণ ও বেকার সমাজের মধ্যে বহুল প্রচলিত একটি ভ্রান্ত ধারণা। ভ্রান্ত ধারণা শব্দটি পড়ার পর পুরো লেখাটি লেখার আগেই হয়ত লেখককে গালি দিচ্ছেন। কিন্তু চাকুরীদাতা হিসেবে বেশিরভাগের মনের হতাশার কথাগুলো এ লেখাটিতে লিখার চেষ্টা করেছি।

বেকারদের হতাশা, চাকুরি নাই, কিন্তু চাকুরীদাতার হতাশা চাকুরি করার উপযুক্ত লোক নাই। এ লেখাটি পড়ার পর প্রতিটি পয়েন্ট অনুযায়ি নিজেকে প্রস্তুত করলে ২ দিকের হতাশা অনেকটাই কমে আসবে।

মিলিয়ে দেখুন, কতটুকু প্রস্তুত চাকুরি পাওয়ার জন্য?
- আপনার কি আধুনিক প্রফেশনাল স্ট্যান্ডার্ড সিভি প্রস্তুত রয়েছে?
- আপনার টেকনিক্যাল নলেজ কি বর্তমান যুগের চাহিদার সাথে যথেষ্ট?
- আপনার কি যুগের চাহিদা পূরনে অন্যান্য যোগ্যতা রয়েছে, যা আপনার সিভিকে সমৃদ্ধশালী করবে?
- পূর্বের চাকুরির অভিজ্ঞতা না থাকলেও সিভিতে উল্লেখ করার মত এমন কোন অতীত কর্মকান্ডের অভিজ্ঞতা কি রয়েছে যা দেখে চাকুরিদাতা আপনার যোগ্যতার ব্যপারে হালকা ধারনা পাবে?
- কমিউনিকেশন দক্ষতা এ যুগের সবচাইতে চাহিদাসম্পন্ন যোগ্যতা। এ যোগ্যতার ব্যপারে আপনি নিজেকে কত মার্ক দিতে পারবেন?

চাকুরিদাতাদের কিছু তিক্ত অভিজ্ঞতা
- বেকারদের হতাশাভরা গল্প শুনে থাকলেও জব পোস্টের বিপরীতে সিভি পাওয়া যায় ১০-১২টা
- সিভি পাঠানোর ধরন দেখলেই প্রথমেই বাদ পড়ে যায় ৮০%
( ** মেইলের সাবজেক্টে মেইল করার কারণ উল্লেখ নাই
** মেইলে ঢুকলে কভার লেটার নাই।
** অনেকে মেইল না করে ফেসবুকে সিভি দেয়।)
- সিভি পড়ার পর বাকি ১০% বাদ পড়ে যায়। সিভির ফরম্যাট দেখে অফিসের পিয়ন পদের জন্যেই শুধুমাত্র তাকে বিবেচনা করা যায়।
- এতগুলো বাদ পড়ার পর যে ভাগ্যবানরা ইন্টারভিউয়ের জন্য ডাক পায়, তাদের ইন্টারভিউ নিতে গিয়ে ইন্টারভিউ বোর্ডে উপস্থিত কর্তাব্যক্তিদের কন্ঠে সময় নস্ট করার জন্য হতাশার কথা শোনা যায়।

চাকুরি পাওয়ার যোগ্য হিসেবে প্রস্তুতিতে কয়েকটি পরামর্শ

- অনলাইনে সার্চ দিলে প্রফেশনাল সিভি ফরম্যাট পাওয়া যায়, সেগুলোর কোনটাকে অনুসরণ নিজের সিভি রেডি করে রাখেন।
- যত চাকুরির অফার দেখবেন, আপনার যোগ্যতার সাথে মিললে সবগুলোতে সিভি সেন্ড করুন।
- সিভি পাঠাতে অবশ্যই মেইলের সাবজেক্টে মেইল করার কারনটি উল্লেখ করুন।
- মেইলের ভিতরে অবশ্যই কভার লেটার লিখুন, সেটি আপনার ব্যপারে পজিটিভ ধারণা তৈরি করবে।
- সিভিতে অ্যাকাডেমিক ব্যাকগ্রাউন্ডের চাইতে দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা চাকুরিদাতাকে আকর্ষিত করে। তাই ছাত্রজীবনেই দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা অর্জনের টার্গেট নির্ধারণ করুন।
- টেকনিক্যাল নলেজ বর্তমান যুগের যেকোন চাকুরির জন্য অত্যাবশ্যকীয় যোগ্যতা। তাই এ দক্ষতা অর্জনে সময় দিন।

সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করার পর ৪০-৫০ টা চাকুরির অফারে আবেদন করুন। আশা করি, তখন চাকুরি না পাওয়ার হতাশাকে ঢাকতে সান্তনা বানী হিসেবে পরিবারকে কিংবা কাছের মানুষকে বলতে হবে না, মামু-চাচা নাই দেখে চাকুরি হচ্ছে না।

লেখক: প্রধান সমন্বয়ক, বইবাজার.কম

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (4)
মোহাম্মদ আলী ১৫ নভেম্বর, ২০১৯, ৭:৫০ পিএম says : 0
কথা সত্য। কিন্তু বাস্তবতা হলো একাধিক প্রার্থী নির্বাচিত হলে মামা খালু ছাড়া উপায় থাকেনা। যার মামা খালু আছে , তারাই চাকরি পায়, যার বাস্তব প্রমান সব যায়গায়ই ছড়িয়ে আছে।
Total Reply(0)
মোহাম্মদ আলী ১৫ নভেম্বর, ২০১৯, ৭:৫০ পিএম says : 0
কথা সত্য। কিন্তু বাস্তবতা হলো একাধিক প্রার্থী নির্বাচিত হলে মামা খালু ছাড়া উপায় থাকেনা। যার মামা খালু আছে , তারাই চাকরি পায়, যার বাস্তব প্রমান সব যায়গায়ই ছড়িয়ে আছে।
Total Reply(0)
Ivan ২১ এপ্রিল, ২০২০, ৭:৪২ পিএম says : 0
বাংলাদেশের মত দেশে চাকরী পেতে হলে অবশ্যই মামু খালা প্রয়োজন। আপনার কোয়ালিফিকেশন যাই হোক না কেনো ভালো কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে কিছু ভিন্নতা ছাড়া কেউ যদি নতুন চাকরী খোঁজে তাহলে অবশ্যই তাকে কারো না কারো মাধ্যমে ঢুকতে হবে। এছাড়া প্রোফেশনাল লেভেলেও এই কথা খুব বেশি প্রযোজ্য। আপনার অনেক কোয়ালিফিকেশন, আপনি একটি অপরিচিত কোম্পানী বা ফার্মে এপ্লাই করেছেন তখন তাঁরা যদি আপনাকে ডাকেও তাহলে এমন রিম্যুনারেশন অফার করবে যে তা আপনার বর্তমান রিম্যুনারেশনের অর্ধেক। এরপর দেখা যাবে আপনার অর্ধেক কোয়ালিফাইড একজন সেখানে রিক্রুট হয়েছে যার রিম্যুনারেশন আপনাকে অফার করা রিম্যুনারেশনের থেকেও বেশি, কারণ সে তাদের পরিচিত। এখনানে মূলত কমফোর্ট জোন এর কারণে আপনি ডিস্‌কোয়ালিফাইড হলেন। এই অভিজ্ঞতা শুধু আমার না বরং আমার আশে পাশে পরিচিত অনেক মানুষের। এর কারণ আমাদের দেশের মানুষ পরিচিত মানুষকে আস্থায় নিতে পারে, সাইকোলজিক্যাললি এটাই আমাদের কমফোর্ট জোন, যার কারণে একজন পরিচিত অদক্ষ লোকও দেখা যায় অনেক উপরের পদ ধরে আছে। কমফোর্ট জোনের বাহিরে আমাদের দেশে কাউকে খুব সহজে নিয়োগ করা হয় না। এর জন্যই মামু চাচা তানাহলে পরিচিতি প্রয়োজন।
Total Reply(0)
রফিকুল ২৩ এপ্রিল, ২০২০, ১০:০৯ এএম says : 0
এসব কথা বাংলাদেশ ছাড়া আর সব দেশের জন্য প্রযোজ্য। যদি এক্সপার্টিজ, স্কিল -এর কদর বাংলাদেশে থাকতো তাহলে এত এত বাংলাদেশী এক্সপার্টরা বিদেশে পালাতো না। Online এ আমরা যত ভালো ভালো লেখা দেখি তার একটাও বাংলাদেশের জন্য প্রযোজ্য নয়। বাংলাদেশের জন্য প্রযোজ্য তেলবাজী, চাপাবাজী, মিথ্যা আশ্বাস, মামু ধরা, মানুষের অসহায়ত্বের সুযোগ নেয়া। সিস্টেমেটিক ওয়েতে চলা এদেশের মানুষের ধাতে সয় না, বাংলাদেশী কোনো কোম্পানীর মালিক বলতে পারবে যে তার কোম্পানী ৮০% কমপ্লাইন্সে চলে?
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন