বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

মহানগর

জুনিয়রদের আতঙ্ক ছিলেন ছাত্রলীগ নেতা অমিত

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১০ অক্টোবর, ২০১৯, ২:১৯ পিএম

বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার সন্দেহে গ্রেফতার হয়েছেন আলোচিত ছাত্রলীগ নেতা অমিত সাহা। তার গ্রেফতারের পর বুয়েট শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে উঠে আসছে নানা চাঞ্চল্যকর তথ্য। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ অমিত সাহা বুয়েটের জুনিয়রদের ওপর বেশি আগ্রাসী ছিলেন। তার মারধরের স্বীকার হয়েছেন বেশ কয়েকজন। এ কারণে অমিত সাহাকে আতঙ্ক হিসেবেই জানত জুনিয়র ব্যাচের শিক্ষার্থীরা।

অমিত বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৬তম ব্যাচের ছাত্র। মেধাবী শিক্ষার্থী হিসেবে বুয়েটে ভর্তি হলেও পরে জড়িয়ে পড়েন রাজনীতিতে। বিশ্ববিদ্যালয় কমিটিতে পদ পেতে নিজেকে আগ্রাসী হিসেবে পরিচিত করেন ক্যাম্পাসে। ফলও পান দ্রুত। স্বল্প সময়ে বনে যান বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের উপ-আইন বিষয়ক সম্পাদক।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ১৭ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা জানান, তাদের ব্যাচের অধিকাংশ শিক্ষার্থী সিনিয়রদের মধ্যে একজনকে পেছন থেকে সবচেয়ে বেশি গালমন্দ করতেন। তিনি হচ্ছেন অমিত সাহা। তাকে সব সময় আগ্রাসী ও মারমুখী দেখা যেত। তাকে কেউ দেখতে না পারলেও সামনাসামনি কেউ কিছু বলার সাহস পাননি।

আবরার হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে অমিতের সংশ্লিষ্টতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অমিত সাহার নির্যাতনের বিভিন্ন ঘটনা প্রকাশ পায়। বুয়েট ছাত্রলীগের ফেসবুক গ্রুপে কাকে কবে র‌্যাগ দেয়া হবে সে বিষয়ে আলোচনা হতো।

সেরকম একটি ঘটনায় এক সিনিয়রকে চটকানি দেয়ার জন্য আহ্বান জানানো একটি পোস্টে অমিত কমেন্ট করেন, বুয়েট ছাত্রলীগ সুশীল হবে, মারবেও না, বাট কোনো সুশীল নন-পলিটিক্যাল একটা কথা বলার সাহসও রাখবে না। ইদানিং সুশীলদের কথা অনেক বেশি বাড়ছে।

আবরার হত্যাকাণ্ডে অমিত সাহা যে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত, সেই অভিযোগ দুদিন ধরেই করে আসছিলেন বুয়েটের শিক্ষার্থীরা। জানা যায়, আবরার ফাহাদ হলে আছেন কিনা সে বিষয়ে প্রথম খোঁজ নিয়েছিলেন বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের উপ-আইনবিষয়ক সম্পাদক অমিত সাহা। ঘটনার দিন সন্ধ্যায় অমিত সাহা আবরারের এক বন্ধুকে ইংরেজি অক্ষরে 'আবরার ফাহাদ হলে আছে কিনা' মেসেজ দেন।

মেসেজের এক ঘণ্টার মধ্যেই শেরেবাংলা হলের ছাত্রলীগ নেতারা আবরারকে ১০১১ নম্বর কক্ষ থেকে ডেকে নিয়ে যায়। ২০১১ নম্বর কক্ষে এনে তাকে লাঠি, চাপাতি ও স্টাম্প দিয়ে পেটায়।

সূত্র বলছে, ৬ আগস্ট রাতে অমিত সাহার রুমে প্রথম দফায় মারধরের নেতৃত্ব দেন ছাত্রলীগ বুয়েট শাখার সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল। তার সঙ্গে মারধর শুরু করেন বুয়েট ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান রবিন ও উপসমাজসেবা সম্পাদক ইফতি মোশাররফ সকাল।

পরে যোগ দেন অনিক, জিয়ন, মনির ও মোজাহিদুলসহ অন্যরা। প্রথম দফায় মারধর চলে রাত ১১টা পর্যন্ত। এর পর রাতের খাবার খাওয়ানো হয় আবরারকে। খাওয়ানো হয় ব্যথানাশক ট্যাবলেটও। দেয়া হয় মলম। দ্বিতীয় দফা মারধর শুরুর সময় অনিক ছিলেন সবচেয়ে মারমুখী।

আবরার এ সময় বারবার বমি করছিলেন। একপর্যায়ে তাকে টেনে নিয়ে যাওয়া হয় মুন্নার কক্ষে। সেখানে আবরারের শরীরের ওপর অনিক ক্রিকেট স্টাম্প ভাঙেন। পরে আরেকটি স্টাম্প দিয়ে বেধড়ক পেটানো হয়। তৃতীয় দফার মারধর শুরু হয় মুন্নার কক্ষে। তখন মধ্যরাত।

নির্মম পিটুনিতে আবরার লুটিয়ে পড়েন। এর পর নিথর দেহ টেনেহিঁচড়ে নিচে নামানোর চেষ্টা করেন ঘাতকরা। মাঝ সিঁড়িতে যেতেই তারা বুঝতে পারেন আবরার মারা গেছেন। সিঁড়িতেই মরদেহটি রেখে তখন ওই স্থান ত্যাগ করেন তারা।

ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, যারা নির্বিঘ্নে আবরারকে পিটিয়ে হত্যা করেছে, তারাই রাতে দীর্ঘ একটি সময় কাটিয়েছেন হল প্রভোস্ট জাফর ইকবাল খান ও বুয়েট ছাত্রকল্যাণ পরিচালক মিজানুর রহমানের সঙ্গে। ঘটনার পর তারা বেরিয়ে হলের গেটেই অবস্থান করেন।

সকালের দিকে হল সরগরম হয়ে উঠলে শুরু হয় ঘাতকদের ছোটাছুটি। সবচেয়ে বেশি মারধর করা অনিক ওরফে মাতাল অনিক দৌড়ে চলে যান তার রুমের দিকে। পরে ডাকা হয় ডাক্তার। সাদা পাঞ্জাবি-পায়জামা পরা ওই ডাক্তার আবরারকে দেখে মৃত ঘোষণা করেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (16)
ash ১০ অক্টোবর, ২০১৯, ২:২৮ পিএম says : 0
EBAR OR TENGRI VAGGA WICHITH !
Total Reply(0)
Rafiqul Islam ১০ অক্টোবর, ২০১৯, ৩:৩০ পিএম says : 0
আল্হামদুলিললাহ্ নাটের গুরু গ্রেফতার হয়েছে, এবার সিএইডি ও ডিবির প্রতি অনুরোধ থাকলো যে ভাবে আবরারকে হত্যা করছে সেই ভাবেই ওঁকে শাস্তি দেওয়া হয় ।
Total Reply(1)
abrur rajjakar ১০ অক্টোবর, ২০১৯, ১১:৩৫ পিএম says : 4
বুয়েট এর সানি আর অন্য অনেক কে ও তো অন্য সরকারের আমলে হত্যা করা হয়েছিল তখন ওদের পিছনে কারা ছিল যেন? শুধু মাত্র বেশি মদ খেয়ে একজন বেধড়ক পিটিয়ে এই ছেলেটাকে মেরে ফেলেছে. আজকে এর দায় কিন্তু বুয়েট এ পড়ুয়া ওই রাতে উপস্তিত সবার
সালমান ১০ অক্টোবর, ২০১৯, ৩:৪২ পিএম says : 0
ওর তো কয়েকবার ফাঁসি হওয়া দরকার
Total Reply(0)
নাঈম ১০ অক্টোবর, ২০১৯, ৩:৪৩ পিএম says : 0
অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে এভাবেই চলে নির্যাতন
Total Reply(1)
abrur rajakar ১০ অক্টোবর, ২০১৯, ১১:৩৫ পিএম says : 4
বুয়েট এর সানি আর অন্য অনেক কে ও তো অন্য সরকারের আমলে হত্যা করা হয়েছিল তখন ওদের পিছনে কারা ছিল যেন? শুধু মাত্র বেশি মদ খেয়ে একজন বেধড়ক পিটিয়ে এই ছেলেটাকে মেরে ফেলেছে. আজকে এর দায় কিন্তু বুয়েট এ পড়ুয়া ওই রাতে উপস্তিত সবার
Anwar ১০ অক্টোবর, ২০১৯, ৩:৫২ পিএম says : 0
আল্হামদুলিললাহ্ গ্রেফতার হয়েছে, এবার সিআইডি ও ডিবির প্রতি অনুরোধ থাকলো যে ভাবে আবরারকে হত্যা করছে সেই ভাবেই ওঁকে শাস্তি দেওয়া হক ।
Total Reply(0)
আসাদ ১০ অক্টোবর, ২০১৯, ৪:১৩ পিএম says : 0
ন্যায় বিচার চাই
Total Reply(0)
ইমরান ১০ অক্টোবর, ২০১৯, ৫:২০ পিএম says : 0
বর্তমান সময়ে রাজনীতি নিয়ে যে পরিমান অপচর্চা চলছে তাতে আমাদের বাংলাদেশে কয়েকজন আবরারের মৃত্যু হলেও আমরা বেশিদিন মনে রাখি না।যেভাবে ভুলে গেছি রিফাত-মিন্নীর মতো বিচ্ছিন্ন ঘটনা।হয়তো আবরারের মৃত্যু নিয়েও মাতামাতি শেষ হবে অল্প কিছুদিনের মধ্যে।
Total Reply(2)
abrur rajakar ১০ অক্টোবর, ২০১৯, ১১:৩৬ পিএম says : 4
বুয়েট এর সানি আর অন্য অনেককে ও তো অন্য সরকারের আমলে হত্যা করা হয়েছিল তখন ওদের পিছনে কারা ছিল যেন? শুধু মাত্র বেশি মদ খেয়ে একজন বেধড়ক পিটিয়ে এই ছেলেটাকে মেরে ফেলেছে. আজকে এর দায় কিন্তু বুয়েট এ পড়ুয়া ওই রাতে উপস্তিত সবার
ahmed mujtaba razi ১৫ অক্টোবর, ২০১৯, ৮:০৬ পিএম says : 4
abrur rajakar নামের জনাব কি চান? এখানে আবরার হত্যাকান্ড এবং এরোগ্যান্ট ছাত্রলীগ কর্মীদের কথা সবাই বলছে। এরা যে কাজ করেছে তা কতটা নির্মম তা কি আপনি বুঝতে পারেন? অন্য সরকার এর আমলে এমন যা কিছু হয়েছে তা কেউ সমর্থন করেনি। জল ঘোলা করার চেষ্টা করছেন কেন? অমিত সাহা বলেন আর ছাত্রলীগ বলেন নির্মমতার মাত্রা দেখে যে কারোরই ভয় হওয়ার কথা। আপনি কি এর পরেও তাদের বিরুদ্ধে কথা বলাকে দোষের ভাববেন?
হানিফ গাজী , বসন্তপুর ১০ অক্টোবর, ২০১৯, ৫:২৪ পিএম says : 0
আবরার ফাহাদের খুনের সাথে সবাইকেআইনেরআওতায়আনাবিচারেরমুখোমুখিকরতেহবে
Total Reply(0)
hossain ১০ অক্টোবর, ২০১৯, ৫:২৬ পিএম says : 0
অমিত দের বিষয়ে আপনাদের আরও সজাগ দৃষ্টি রেখে দেশের স্বার্থে তাদের আসল শক্তির উৎস বাহির করে জনগণের কাছে প্রকাশিতকরতে হ।
Total Reply(1)
abdur rajjakar ১০ অক্টোবর, ২০১৯, ১১:৩৪ পিএম says : 4
বুয়েট এর সানি আর অন্য অনেক কে ও তো অন্য সরকারের আমলে হত্যা করা হয়েছিল তখন ওদের পিছনে কারা ছিল যেন? শুধু মাত্র বেশি মদ খেয়ে একজন বেধড়ক পিটিয়ে এই ছেলেটাকে মেরে ফেলেছে. আজকে এর দায় কিন্তু বুয়েট এ পড়ুয়া ওই রাতে উপস্তিত সবার
রেরের ১০ অক্টোবর, ২০১৯, ৭:১০ পিএম says : 0
সংখ্যালঘুদের নির্যাতন করা হচ্ছে নাকি সংখ্যালঘুরা আমাদের নির্যাতন করছে? বেটা অমিতের মত ...কে কেন এত পরে ধরা হল ? কেন আগে ধরা হল না?
Total Reply(0)
Jamal ১০ অক্টোবর, ২০১৯, ৮:৪৫ পিএম says : 0
কিছুই বলার চেষ্টা করি না কোন সময় আবার হামলা করে
Total Reply(0)
Jamal ১০ অক্টোবর, ২০১৯, ৮:৪৫ পিএম says : 0
কিছুই বলার চেষ্টা করি না কোন সময় আবার হামলা করে
Total Reply(0)
মাওলানা ওমর ফারুক ১০ অক্টোবর, ২০১৯, ৯:৩৪ পিএম says : 0
আমি চিৎকার করিয়া কাঁদিতে চাহিয়া করিতে পরিনি চিৎকার, বুকের ব্যাথাকে বুকে চাপিয় নিজেকে দিয়েছি ধিক্কার।
Total Reply(0)
মাওলানা ওমর ফারুক ১০ অক্টোবর, ২০১৯, ৯:৩৫ পিএম says : 0
আমি চিৎকার করিয়া কাঁদিতে চাহিয়া করিতে পরিনি চিৎকার, বুকের ব্যাথাকে বুকে চাপিয় নিজেকে দিয়েছি ধিক্কার।
Total Reply(0)
আবুল কাশেম ১২ অক্টোবর, ২০১৯, ৭:৫৯ পিএম says : 1
আমি হলপ করে বলতে পারি, এই ...দের কোন শাস্তি হবে না। আমার কথা টা লিখে
Total Reply(0)
S M SAGAR ১৩ অক্টোবর, ২০১৯, ৩:০২ এএম says : 0
Manush Manush k a vaba marta para amar vabtao kasto hossa. Ha Allah help karo.Ameen.
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন