দ্বীপ সরকার
নিওরের টিপ এবং কাশবন
আকাশ পেখম মেললেÑপৃথিবীও ছড়িয়ে ছিটিয়ে প›ড়ে
ছায়াঘেরা কুয়াশার চোখফোটে,দূর্বা ঘাসের কি য়ে উল্লাস!
কাশবনে মেঘকসুমের দরদভরা হাসি
কুকুরে কুকুরে ইশারার ঝরÑ অদ্ভূদ সঙ্গমের দিন ওদের
অতঃপর প্রযতেœর রোদগুলো কুয়াশার খাম থেকে বেরিয়ে আসে;
খিল খিল করে হাসে জানলার কার্টেইনের কাছে
এ কারণেই শরতকে বলিÑ আসো ফিরে ফিরে
বহকাল ঘুরে ঘুরে ফের আসো
পৃথিবী সমর্পিত হলেÑ পলাতক শীতও আসে দেশে ফিরে
কুহুক জড়ানো গোধূলীরা ডুবে যায় কখন্ড ‘নিওরের টিপ’নিয়ে
পরের সকালে খোঁপায় বেঁধে মুদ্রিত হয় নতুন করে
রকি মাহমুদ
বহুমাত্রিক মিথষ্ক্রিয়া
ঢেউয়ের অনুসঙ্গে আত্মস্থ কাশের শিল্প বাতায়ন
যেনবা বৈদগ্ধতা ভুলে নিরঙ্কুশ প্রতœবতী কৃষ্ণপক্ষ চাঁদ।
চলছে মহানুদ্দেশ্যে সম্পর্কের সরলায়ন, আশ্চর্য প্রসন্ন প্রত্যয়ে
অভিজ্ঞ বর্ষার সিঞ্চিত লাবন্যে চলে কাশেদের ছোঁয়াছুঁয়ি।
সীমাবদ্ধ উষ্ণতার অলিন্দে বহে খরগ্রোতা নদীর রূপোলী যৌবন
কবিকুল ব্যস্ত এখোন নৈশ নগরনন্দিনীর প্রশস্তি লিপি নির্মাণে
অথচ, নিম্নবিত্তের মেঠো আঙ্গিনায় চলে কান্নার মহোৎসব।
নৈঃসঙ্গের অন্তরঙ্গতা জটিল দ্বৈতরূপ, বহুমাত্রিক মিথষ্ক্রিয়া
পেঁজাতুলাবাদী মন নিরন্তর উড়ু উড়ু শরতের মনোলোভা মেঘ।
মিজানুর রহমান তোতা
প্রাণতরঙ্গে লজ্জার প্রেম
শরতের কাশফুলের ঢেউ নীল আকাশ ছুঁয়েছে
একদল সাদা মেঘ আপন মনে উড়ে খেলছে
দুর নীলিমায় হাতছানিতে ডাকছে।
বক সাদা শাড়ির আচল হেলে দুলে একাকার
যেদিকে তাকায় সাদা আর সাদা মাঝখানে
একফালি লাল চিকন পাড়।
হৃদয় ছোঁয়া হাসি দিয়ে মিলিয়ে গেল বহুদুরে
মেঘ উৎসবের রাজরাণী অন্তরে তপস্যার রঙ
প্রাণতরঙ্গে লজ্জার প্রেম।
শিশিরে বৃষ্টি বিনিময়ে দৃষ্টি কাড়া লজ্জা চাহনী
উড়ো মেঘ আলো আঁধারির কল্পনার রাজ্যে
রাজরাণীর মিষ্টি হাসি।
স্বর্ণময়ী শোভায় পড়ন্ত বিকালের মেঘ লালসূর্য
ঠোঁট চোখ কাঁপছে গভীর লজ্জার প্রেমে জড়িয়ে
জাল ফেলেছে সুদুরে।
প্রেমনদী আঁছড়ে পড়ছে সাগরে পাড়ে প্রেমগাছ
নুইয়ে অলিঙ্গন করছে রাশি পানির ছলাৎ শব্দ
অন্যরকম অনুভুতি।
প্রাণতরঙ্গ কখন থেমে গেছে জলতরঙ্গে নিঃশ্বাস
ঘন বাতাসে আগুনের হল্কায় কাশফুল মাটিতে
মুহূর্তে আকাশ ভাঙা বৃষ্টি।
রহমান মাজিদ
শরৎ আসে মোড়ে মোড়ে
প্রখর রোদে যখন মাদারের কোয়া ফেটে
আকাশে উড়তে থাকে তুলার দানা
ভোরের কুয়াশার মতো চুপিসারে তখন
প্রকৃতির পর্দায় লেপ্টে যায় শরতের গন্ধ
সন্ধ্যা ঘনালে ধীরে কলপাড় থেকে
কলসি কাঁখে বাড়ির দিকে হেঁটে আসা
খাদিজার নিতম্বের মতো মৃদু ঢেউ তুলে
শরৎ আসে তাঁতি পাড়ার প্রতি ঘরে ঘরে
ইউনিফর্ম পরিহিত দুরন্ত বালক
বেলা শেষে স্কুল থেকে ফিরে আসে যখন
ক্রিং ক্রিং ঘন্টা ধ্বনির মতো কেঁপে কেঁপে
শরৎ আসে তার সাইকেলের পিছন কেরিয়ারে
গাঁয়ের সীমানা ছেড়ে, দূরে, বহু দূরে
শাদা শাড়ি পরে মেঘেরা নেমে এলে
কাশের বনে কোন গোপন অভিসারে
হুড ছাড়া ভ্যানের উপর সওয়ার হয়ে
শরৎ আসে তখন গাঁয়ের মেঠো পথ ধরে
জনতার পদাঘাতে মিছিলের পাঁজর ভেঙ্গে
উড়ে আসা ধুলার মতো কিংবা ইটের ভাটার
চিমনি থেকে নির্গত ধোঁয়ার কুন্ডলির মতো
শশব্যস্ত হয়ে শরৎ আসে রাস্তার মোড়ে মোড়ে
আয়ল্যান্ডের ভাঁজে ভাঁজে প্রতিটি ট্রাফিক সিগনালে
প্রতিটি পাড়ায় মহলায় শহরে নগরে বন্দরে
শুভ্রতার চাদর গায়ে।
মোহাম্মদ মাসুদ
শরতের বিকেল
কাশফুলের গভীরতায়
তোমার প্রতিকৃতি
আমার আত্মার শব্দ
আমার গভীরতার স্পর্শ
আমার বেঁচে থাকার
শেষ নিশ্বাস
আমি হেঁটে চলব অন্তত মূহুর্ত
অন্তত নক্ষত্রের স্পর্শে
অন্তত শরতের বিকেল
জীবন কোন অর্থে টিকে থাকবে
সরল সমীকরণে সরলতায়
ক্লান্ত পৃথিবী ঘুমাবে এখনই
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন