শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

আবরারের মা হলে দেশবিরোধী চুক্তি বাতিল করবেন -রিজভী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১১ অক্টোবর, ২০১৯, ১২:১৩ পিএম

আবরারের মা হলে দেশবিরোধী চুক্তি বাতিলের দাবি জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘আন্দোলন কেন? আমি একজন মা হিসাবে আবরার হত্যার বিচারের দায়িত্ব নিয়েছি।’ কিন্তু উনি যদি আবরারের মা হন তাহলে তিনি প্রথমেই দেশবিরোধী চুক্তি বাতিল করবেন এবং আবরারের হত্যাকারীদের উপযুক্ত শাস্তি দিবেন। আর ছাত্রলীগকে হত্যা ও ঘাতকের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে তাদের অমানুষ না বানিয়ে হাতে বই-খাতা তুলে দেবেন। উনার কথা শুনে দেশের মানুষের স্মরণ হয়েছে কোটা আন্দোলন এবং নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের কথা। প্রধানমন্ত্রী তখনও কত রকম ঘোষণা অঙ্গীকার আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু আন্দোলন শেষ হয়ে গেলে তাদের দাবী পুরনতো দুরে থাক কেবল কটাক্ষ আর উপহাস করেছেন। তাই যারা আজ দেশ বিরোধী চুক্তি আর শহীদ আবরারের বিচারের দাবীতে পথে নেমেছেন তাদের প্রতি আহবান-দাবী আদায় না হওয়া পর্যন্ত আপনারা অবিচল থাকুন। বিজয় আপনাদের সুনিশ্চিত।
শুক্রবার (১১ অক্টোবর) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনে দায় এড়ানোর জন্য বললেন, 'ছাত্রলীগ আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠন নয়'। তাদের দলীয় গঠনতন্ত্রে হয়তো তাই লেখা রয়েছে। তবে বাস্তবতা ভিন্ন। বিপদে পড়লেই জনগণকে ধোকা দিতে 'ছাত্রলীগ আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠন নয়' এই কথা বললেও দেখা যায়, ছাত্রলীগের নেতা নির্বাচিত হয় প্রধানমন্ত্রীর রাষ্ট্রীয় ভবন-গণভবনে বসে। আবার গণভবনে বসেই ছাত্রলীগের কোনো কোনো নেতার নেতৃত্ব কেড়ে নেয়া হয়। অর্থাৎ রাষ্ট্রীয় ও সরকারি সুবিধা ব্যবহার করে সরকার ছাত্রলীগকে নিয়ন্ত্রণ করছে। ছাত্রলীগের হাতে অস্ত্র, হাতুড়ি চাপাতি লগি বৈঠা দিয়ে বিরোধী মতের-ছাত্রদের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিচ্ছে। কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় কিংবা কোমলমতি ছাত্রদের নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের সময় সারাদেশে সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগের বর্রব নিষ্ঠুরতা নির্মমতা দেশের জনগণ ভুলেনি। এরপরও ছাত্রলীগের চরিত্র একটুও পাল্টায়নি। সরকারের ছত্রচ্ছায়ায়, পৃষ্ঠপোষকতায় ছাত্রলীগ এখন নৃশংস হানাদার বাহিনীকেও ছাড়িয়ে গেছে। ছাত্রলীগের জঙ্গিদের হাতে আবরার ফাহাদের নির্মম মৃত্যু প্রমাণ করেছে, আওয়ামী লীগ ক্ষমতা আঁকড়ে রেখে খুন, দুর্নীতি, গুম, অপহরণ, চাঁদাবাজী, টেন্ডারবাজী, লুটপাট টাকা পাচার কিংবা ব্যাংকগুলোকেই খালি করেনি, রাষ্ট্র সমাজ থেকে কেড়ে নিয়েছে মানবিকতা, ভব্যতা, সভ্যতা, সহমর্মিতা ও সামাজিক মূল্যবোধ।
তিনি বলেন, বুয়েটের মতো সর্বোচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অসীম সম্ভাবনাময় জীবনের একজন শিক্ষার্থীকে ঠান্ডা মাথায় পিটিয়ে হত্যা করার এই বর্বরোচিত দীক্ষা ছাত্রলীগ কোথায় পেলো? কারা তাদের গডফাদার, কারা তাদের গড মাদার? একজন মাত্র ব্যক্তির ক্ষমতালিপ্সার কারণে ছাত্রলীগকে জঙ্গি সংগঠনে পরিণত করা হয়েছে। এখন ছাত্রলীগকে তৈরী করা হয়েছে বধ্যভূমির ঘাতক হিসেবে। একজন মাত্র ব্যক্তি তার ক্ষমতালিপ্সার কারণে এই সংগঠনটি এখন এতটাই অভিশপ্ত সংগঠনে পরিণত হয়েছে যে, বুয়েটের মতো মেধাবীদের প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হয়েও শুধুমাত্র ছাত্রলীগের কারণে মেধাবীরা পরিণত হচ্ছে খুনিতে। এরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর হল ও হোষ্টেলগুলোতে বুক সেলফের পরিবর্তে টর্চার শেল গড়ে তুলেছে। দেশের প্রতিবাদী ছাত্রসমাজ আজ স্ফুলিঙ্গের মতো জেগে উঠেছে। দেশের মানুষকে গুম-খুন-অপহরণ করে আর দেশের স্বার্থ বিকিয়ে দিয়ে গত একদশক ধরে যেভাবে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখা হয়েছে, এটি জনগণ আর চলতে দেবেনা। দেশের ছাত্র সমাজ এসব অনাচার আর মেনে নেবেনা। সরকারের পতন ঘন্টা বেজে গেছে। সাধারন শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনের শ্লোগানের ভাষা শুনুন।ক্ষমতাসীনদের জুলুম এবং আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে মানুষের রক্তে আগুনজ্বলা দ্রোহ দেখুন। জনগণের আওয়াজ শুনুন। সারাদেশের শিক্ষার্থীদের মধ্যে আওয়াজ উঠেছে, আধিপত্যবাদী-সম্প্রসারণবাদী অপশক্তির বিরুদ্ধে। আধিপত্যবাদী-সম্প্রসারণবাদী অপশক্তির এ দেশীয় দোসরদের বিরুদ্ধে। কোন আন্দোলন যেমন ব্যর্থ হয়না তেমনি দেশবিরোধী চুক্তি ও শহীদ আবরারের বিচারের দাবীতে গড়ে ওঠা ছাত্র আন্দোলনও ব্যর্থ হবেনা ইনশা-আল্লাহ।

ভারতের সাথে চুক্তি কার স্বার্থে প্রশ্ন তুলে রিজভী বলেন, বার বার ভারতে সফরে গিয়ে অসংখ্য দেশবিরোধী চুক্তি করে আসছেন বিনাভোটের প্রধানমন্ত্রী। জনগণ জানতেও পারছেনা কি চুক্তি হচ্ছে, কেন হচ্ছে এইসব চুক্তি? এইসব চুক্তিতে কার স্বার্থ রক্ষা হচ্ছে? বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক স্বামী স্ত্রীর মতো, নিশিরাতের সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রীর এই বক্তব্যে দেশের মানুষ এতই লজ্জা পেয়েছে যে, তারা এই কথায় হাসতেও ভুলে গেছে। আমরা মনে করি, পারস্পরিক স্বার্থ ও সমমর্যাদা রক্ষার ভিত্তিতে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক হবে বন্ধুত্বের। স্বামী স্ত্রীর নয়। এখানেই আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিএনপির মৌলিক বিরোধ। তাই জনগণের দল হিসেবে বিএনপির স্পষ্ট দাবি, ভারতের সাথে গত এক দশকে কি কি চুক্তি হয়েছে, কত চুক্তি হয়েছে, প্রতিটি চুক্তি সম্পর্কে জনগণকে বিস্তারিত জানাতে হবে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বন্দী রাখা আওয়ামী সরকারের পাশাপাশি তাদের প্রভুরাও জড়িত বলে জনগণ মনে করে।
তিনি বলেন, অন্যায় চুক্তির প্রতিবাদ করার অপরাধে শুধু আবরারকে একাই পিটিয়ে মারা হয়নি। আগ্রাসনের বিরোধিতা ও বাক স্বাধীনতাকেও পিটিয়ে মারা হয়েছে। ক্ষমতাসীনরা তাদের মসনদ রক্ষার জন্য প্রতিবেশী দেশের দাসত্ব ও অন্ধ দালালীকে তাদের চেতনা হিসাবে গ্রহণ করেছে। ফলে দেখা যাচ্ছে এই স্বাধীন দেশে ভিসিরা ‘জয়হিন্দ’ শ্লোগান দিয়ে পাচ্ছে পুরস্কার, আর আওয়ামী লীগের নেতারা পর্যন্ত অন্যায় চুক্তির বিরুদ্ধে কথা বললে দল থেকে বহিস্কার হচ্ছেন। ভারতের সঙ্গে দেশবিরোধী চুক্তিতে ক্ষুব্ধ হয়ে বিবেকের তাড়নায় ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও বিএমএ খুলনা শাখার সভাপতি ডা. শেখ বাহারুল আলম। তাকে গতকাল বহিষ্কার করেছে আওয়ামী লীগ। কুষ্টিয়ার এসপি তানভীর আরাফাতের ন্যাক্কারজনক ভুমিকার বিরুদ্ধে স্ট্যাটাস দেয়ার কারণে শহীদ আবরারের ভাইয়ের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ব্লক করে দিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বিটিআরসি। কুষ্টিয়ায় সরকারী পেটোয়া বাহিনী মারধর করেছে আবরারের ছোট ভাই এবং ভাবীকে। একটি ফেসবুক গ্রুপ পেইজে দানবলীগের নির্যাতনের অভিযোগ করছিলেন ছাত্ররা। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বা সিএসই বিভাগের শিক্ষার্থীদের চালু করা সেই পেইজটি ব্লক করে দিয়েছে বিটিআরসি। বিটিআরসির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জহুরুল হক বিবিসিকে বলেছেন, যতদিন আন্দোলন চলবে ততদিন ব্লক থাকবে ওয়েবসাইটটি। প্রভুদের সহযোগিতায় জনগণের মালিকানা জোরপূর্বক ছিনতাই করে ক্ষমতা দখলের কারণে আজ গণতন্ত্রের শেষ চিহ্নটুকুও মুছে যেতে বসেছে। এই সর্ববিনাশী পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগ নেতাদেরও বলবো ডা. শেখ বাহারুল আলমের মতো আপনারাও দেশবিরোধী চুক্তির প্রতিবাদ করুন। দেশ বাঁচানোর লড়াইয়ে শরিক হোন।
ছাত্রলীগের শোকর‌্যালি দ্বিচারিতা মন্তব্য করে ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, আবরার ফাহাদ হত্যার প্রতিবাদে ছাত্রলীগ লোক দেখানো একটি শোক র‌্যালী করেছে। এই র‌্যালীটিতেও তারা চরম অমানবিক আচরণ প্রদর্শন করেছে। গুরুতর অসুস্থ রুগীবাহী কয়েকটি অ্যাম্বুলেন্স দীর্ঘক্ষণ আটকে রেখেছিল। রুগীর স্বজনরা কাকুতি মিনতি করলেও হাসপাতালের দিকে যেতে দেয়া হয়নি। এই ছাত্রলীগ বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে এক সংবাদ সম্মেলনের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, ‘গেষ্টরুমে শিক্ষার্থীদের কোনও নির্যাতন করা হয় না, বরং ভালো কিছু শেখানো হয়।’ অথচ আজকেও বিভিন্ন পত্রিকায় খবর আছে-গেষ্টরুম, গণরুম, পলিটিকাল রুম নামক টর্চার সেলগুলোতে ছাত্রলীগ গেষ্টাপো বাহিনীর কায়দায় নির্যাতন করে ছাত্রদের। এই ছাত্রলীগের রুমে এখন বইপত্র খাতা কলম থাকে না, থাকে মদের বোতল, রাম দা-চাপাতি-লাঠিসোটা-অস্ত্র ও গোলাবারুদ। এখন সেই তারাই আবার তাদের নেতাকর্মীদের হাতে খুন হওয়া আরেকজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর জন্য শোকর‌্যালি করে ! এ দ্বিচারিতা কেবল তাদের পক্ষেই সম্ভব।
বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্রলীগের হাতে শিক্ষার্থী হত্যার কয়েকটি তথ্য তুলে ধরে বিএনপির এই নেতা বলেন, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ-চমেকের ৫১তম ব্যাচের ব্যাচেলর অব ডেন্টাল সার্জারি (বিডিএস) ৩য় বর্ষের মেধাবী ছাত্র, ছাত্রদল নেতা আবিদুর রহমান এবং সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজের এমবিবিএস চতুর্থ বর্ষের মেধাবী শিক্ষার্থী ও ছাত্রদলের কলেজ শাখার নেতা তাওহীদুল ইসলামকে বুয়েটের শহীদ আবরার ফাহাদের মতোই ছাত্রাবাসে তাদেরকে পিটিয়ে হত্যা করেছিল ছাত্রলীগের খুনিরা। কিন্তু কোন বিচার হয়নি। চমেক ছাত্রাবাসে ২০১১ সালের ১৯ অক্টোবর আবিদুর রহমান আবিদকে ছাত্রদল করার কারনে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা খুনীলীগ। তবে আলোচিত এ খুনের মামলার কোন আসামির সাজা হয়নি। গত ১০ জুলাই আবিদ হত্যা মামলার রায়ে ১২ জন আসামি ছাত্রলীগের নেতাকর্মীকে বেকসুর খালাস দিয়েছে আদালত। আওয়ামী বিচারে ছাত্রলীগ-যুবলীগের খুন-জখম-ক্যাসিনো জুয়ার মতো অপরাধগুলোর বিচার হয় না। খুনীচক্রের অন্যতম আসামী তৎকালীন ছাত্র সংসদের ভিপি মফিজুর রহমান জুম্মা, চমেক ছাত্রলীগ সভাপতি সোহেল পারভেজ, সাধারণ সম্পাদক বিজয় সরকার, সহ-সাধারণ সম্পাদক হিমেল চাকমারা এখন বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। ২০১৪ সালের ৪ জুন ওসমানী মেডিকেল কলেজের আবু সিনা ছাত্রাবাসের ১০০৩ নম্বর কক্ষে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয় জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কলেজ শাখার আপ্যায়ন বিষয়ক সম্পাদক তাওহীদুল ইসলামকে। ওসমানী মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সৌমেন দে ও সাধারণ সম্পাদক সাইফুলসহ ছাত্রলীগের খুনী ১৬ নেতা-কর্মীকে আসামি করে থানায় হত্যা মামলা হয়। পরে পালানোর সময় সৌমেনকে রেলষ্টেশন থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ৮ জুন সৌমেন আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিও দিয়েছিল। তারপরও তাওহীদ হত্যা মামলার সব আসামিকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত। অথচ এই দুইটি হত্যাকান্ডের পর ছাত্র আন্দোলনে ভীত হয়ে সরকার খুনিদের সাজা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর ছাত্রলীগের খুনীদের সাজাতো দূরে থাক খুন হওয়াদের পরিবারগুলো নিরাপত্তাহীনতায় জীবন কাটাচ্ছে। সুতরাং এই মিথ্যাবাদী রাখাল সরকারের আশ্বাস বিশ্বাস করলে শহীদ আবরারের হত্যাকারীদের বিচার হবে না।
শিক্ষামন্ত্রী দলদাস মেরুদণ্ডহীন ভিসির পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন অভিযোগ করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, আবরার ফাহাদ হত্যাকান্ডের বিচারের দাবীতে ফুঁসে ওঠা শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি শিক্ষকদের আন্দোলনে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তিনি বলেছেন, বুয়েটে আবরার হত্যাকান্ড ছাড়াও এমন ঘটনা আগেও ঘটেছে। তখন শিক্ষক ও অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন কোথায় ছিলেন? তখন তারা কেন আন্দোলনে নামেননি? কেন এখন সবাই মিলে আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন? প্রতিবেশী দেশের প্রতি নতজানু হয়ে কাজ করেছেন এই শিক্ষামন্ত্রী সেই সময় পররাষ্ট্র মন্ত্রী হিসেবে। তিনি এখন ব্যর্থ দলদাস মেরুদন্ডহীন ভিসির পক্ষে নগ্নভাবে অবস্থান নিয়েছেন। পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে: ‘পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি হিসেবে তার সার্বক্ষণিক থাকার কথা ক্যাম্পাসে। কিন্তু বর্তমান বুয়েটের ভিসি ড. সাইফুল ইসলাম থাকেন বাইরে, নিজের পছন্দের বাসায়। ভিসি হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার আড়াই বছরে তিনি বিদেশ সফর করেছেন অন্তত: ২২ বার। অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল চালিকা শক্তি শিক্ষক-কর্মচারীদের পেনশনের টাকা নিতে শুধু দৌড় ঝাঁপই নয় আদালতে পর্যন্ত যেতে হয়।
রিজভী বলেন, ভিসির অদক্ষতা ও ব্যর্থতায় মেধাবী শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ নিষ্ঠুর হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছেন। ভিসির স্বেচ্ছাচারিতার জন্য ভেঙে পড়েছে প্রশাসনিক শৃঙ্খলা। আবরার হত্যাকান্ডের ঘটনায় বুয়েট প্রশাসন জিডি করে। হত্যাকান্ডের ঘটনায় কি জিডি করতে হয়? এটা আবরারের লাশের প্রতি রসিকতা। এতে ৩০২ ধারায় মামলা করা যেতো। বুয়েট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিভঙ্গিতে মনে হয়-এই হত্যাকান্ডে তাদের কোন দায় নেই। ভিসি, প্রক্টোর ও ছাত্রবাসের প্রভোষ্টরা মনে করেন তাদের দায়িত্ব ছাত্রলীগের নেতাদের রক্ষা করা।
আবরার হত্যার ঘটনার প্রায় ৪০ ঘণ্টা পর ভিসি ক্যাম্পাসে প্রকাশ হন। শিক্ষার্থীদের সামনে এসে তিনি নিজেই জানান, অসুস্থ ছিলেন না বরং মন্ত্রী এবং সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেই তিনি এই সময় কাটিয়েছেন। তাই বুধবার তড়িঘড়ি করে তিনি রওনা দিলেন কুষ্টিয়া। আবরারের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাত করতে। কিন্তু সে সুযোগ তাকে দিলেন না রায়ডাঙ্গা গ্রামের মানুষ। প্রতিবাদে সোচ্চার মানুষের বাধায় ঢাকায় ফিরতে বাধ্য হন ভিসি। কিন্তু তার এই আগমনে লঙ্কাকান্ড ঘটায় পুলিশ। ‘আওয়ামী পুতুল ভিসির পক্ষে অবস্থান নিয়ে এর আগে ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন-ভিসি অসুস্থ, তাই আবরারের লাশ দেখতে আসতে পারেন নি’। অথচ ভিসি বলেছেন, তিনি সুস্থ ছিলেন। তাহলে কে মিথ্যাবাদী সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের নাকি ভাইস চ্যান্সেলর? আওয়ামী লীগ নেতা-নেত্রীদের প্রধান যোগ্যতা তারা মিথ্যায় পারদর্শী। সত্যকে সহ্য করতে পারে না। শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্যে প্রমান হয় তিনি দেশের শিক্ষা মন্ত্রী নন, তিনি শিক্ষা ধ্বংসের মন্ত্রী।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন