শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

ধর্ষণের পর অন্তঃসত্ত্বা হওয়ায় হত্যা

নোয়াখালীতে ছাত্রীসহ শিকার ৪

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১২ অক্টোবর, ২০১৯, ১২:০১ এএম

হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে ধর্ষণের পর অন্তঃসত্ত্বা হওয়ায় কিশোরীকে হত্যা করা হয়েছে। নোয়াখালীতে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় মামলা করতে চাওয়ায় ধর্ষণের শিকার ছাত্রীর পরিবারকে হুমকি দিচ্ছে ধর্ষকের পরিবার। গতকাল দুপুর পর্যন্ত কোন মামলা হয়নি। বরগুনায় মাকে রক্ত দেয়ার কথা বলে কলেজছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া মহেশপুরে স্কুলছাত্রী ও মুন্সীগঞ্জে মাদরাসাছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

নোয়াখালী : নোয়াখালী সদর উপজেলার এওজবালিয়া ইউনিয়নে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী (১১) কে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনায় মামলা করতে চাওয়ায় ধর্ষিতার পরিবারকে হুমকি দিচ্ছে ধর্ষকের পরিবারের লোকজন। ঘটনার পর থেকে ধর্ষক সুমন (১৮) পলাতক রয়েছে। ঘটনায় গতকাল শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত কোন মামলা হয়নি। এর আগে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১টার দিকে ভিকটিমকে উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ধর্ষিতা স্থানীয় চরশুল্লকিয়া খাসেরহাট দাখিল মাদরাসার পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী ও অটোরিকশা চালক সেলিমের মেয়ে।

ভিকটিমের বরাত দিয়ে তার বাবা সেলিম কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে মাদরাসার অপর ছাত্রীদের সাথে বাড়ীতে আসছিল তার মেয়ে (১১)। খাসেরহাট বাজার অতিক্রম করে আসলে তার বান্ধবীরা তাদের বাড়ীতে চলে যায়। পরে সে একা বাড়ীর দিকে আসছিল। পথে স্থানীয় আব্দুল আজিজের ছেলে বখাটে সুমন তার গতিরোধ করে মুখ চেপে ধরে তাকে পাশ্ববর্তী একটি কলা বাগানে নিয়ে যায়। এরপর তার মেয়ের মুখ চেপে ধরে ধর্ষণ করে পালিয়ে যায় সুমন। পরে অসুস্থ অবস্থায় সে বাড়ীতে এসে ঘটনা তাদের খুলে বলে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, সুমনের বড় ভাই হালিম পাটোয়ারী ও ইউছুফ এ ঘটনায় কোন মামলা করলে তাদের ভালো হবেনা বলে হুমকি দিচ্ছে। বর্তমানে তিনি পরিবার ও অসুস্থ মেয়ে নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। সুধারাম মডেল থানার ওসি নবীর হোসেন জানান, ঘটনায় থানায় কোন অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

হবিগঞ্জ : হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার দুধপাতিল গ্রামের তামান্না আক্তার পিয়া (১৫) নামের এক কিশোরী ধর্ষণের পর অন্তঃসত্ত্বা হওয়ায় তাকে হত্যা করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুল ইসলামের আদালতে ১৬৪ ধরায় স্বীকারোক্তিম‚লক জবানবন্দিতে এই ঘটনা স্বীকার করেছেন ঘাতক আলমগীর মিয়া (২৫)। আলমগীর পিয়ার চাচাতো ভাই ও একই গ্রামের আব্দুল হাশিমের ছেলে।
এর আগে গেল গত বুধবার রাতে তাকে বাহুবলের চন্ডপুর মাজারের পাশ থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। জবানবন্দির বরাত দিয়ে চুনারুঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ নাজমুল জানান, পিয়া ও আলমগীর সম্পর্কে চাচাতো ভাই-বোন। বিয়ের কথা বলে মেয়েটিকে একাধিকবার ধর্ষণ করে আলমগীর।

মুন্সীগঞ্জ : মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে ১১ বছরের এক মাদরাসাছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় মামলা হয়েছে। মামলার আসামি মো. ইমন ঐ এলাকার সামাদ শেখের ছেলে। উপজেলার বালাসুরের বউ বাজারে এ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। ছাত্রীর বাবা মামলার এজাহারে উল্লেখ করেন, তিন মাস আগে একই এলাকার বাসিন্দা তার চাচাত ভাই সামাদ শেখের ছেলে শ্রীনগর সরকারি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র মো. ইমন শেখ (২২) মেয়েটিকে একাধিকবার জোরপ‚র্বক ধর্ষণ করে। ঘটনার মাসখানেক পরে হঠাৎ মেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়লে সে তার মাকে সব খুলে বলে।

স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে নিয়ে মেয়ের প্রাথমিক পরীক্ষা করানোর পরে জানা যায়, সে প্রায় তিন মাসের গর্ভবতী হয়ে পড়েছে। মান-সম্মানের ভয়ে মেয়ের বাবা প্রথমে ইমনের পরিবারকে বিষয়টি জানান। ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য বালসুর বাজারের ব্যবসায়ী হাসু মোল্লা ও আলমগীর মোল্লা মেয়ের বাবাকে সঠিক বিচারের আশ্বাস দেন এবং ১০ হাজার টাকা দিয়ে মেয়ের গর্ভপাত করানোর পরামর্শ দেন।

এরপরে ঢাকার একটি হাসপাতাল থেকে মেয়ের গর্ভপাত শেষে প্রায় ২০ দিন অতিবাহিত হলেও সমঝোতার ব্যাপারে হাসু মোল্লা ও আলমগীর মোল্লা কালক্ষেপণ করতে থাকে। পরে উপায় না দেখে মেয়ের বাবা স্থানীয় মেম্বার হারুন বেপারীকে ঘটনাটি জানান। ইমনের বাবা সামাদ শেখ হাসু মোল্লার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার হওয়ায় প্রভাবশালী হাসু মোল্লার সহযোগিতায় ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছিল। তবে হাসু মোল্লা ও আলমগীর মোল্লা তাদের বিরুদ্ধে মেয়ের বাবার আনীত অভিযোগ অস্বীকার করেন।

বরগুনা : বরগুনা সরকারি কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের এক ছাত্রীকে মাকে রক্ত দেয়ার কথা বলে বরিশাল আবাসিক হোটেল কক্ষে একাধিকবার ধর্ষণ করে জসিম নামের এক যুবক। ধর্ষণের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল করার অভিযোগ পাওয়া গেছে ওই ধর্ষকের বিরুদ্ধে। এ ব্যাপারে ভিকটিমের মা বাদী হয়ে বরগুনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা করেন। গত বৃহস্পতিবার ওই ট্রাইব্যুনালের বিচারক ও জেলা জজ হাফিজুর রহমান মামলাটি গ্রহণ করে বরগুনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে সাত দিনের মধ্যে এজাহার রুজু করার নির্দেশ দিয়েছেন। আসামি হল বরগুনা জেলাধীন পাথরঘাটা উপজেলার বটতলা নাচনাপাড়া গ্রামের জসিম উদ্দিন।

মহেশপুর(ঝিনাইদহ) : মহেশপুরে রাসেদুল নামক এক বখাটে যুবক বাড়ীর পাশ থেকে ৭ম শ্রেণির এক স্কুল ছাত্রীকে তুলে নিয়ে কলা বাগানে ধর্ষণ করে। এ ব্যপারে ধর্ষিতার পিতা বাদী হয়ে মহেশপুর থানায় মামলা করেছে।
এলাকাবাসী জানিয়েছে, গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মহেশপুর উপজেলার বালুহুদা গ্রামের শরিফুল ইসলামের স্কুল পড়–য়া ছেলে একই গ্রামের গরীব পরিবারের এক শিশু কন্যাকে বাড়ীর পাশ থেকে উঠিয়ে পার্শ্ববতী কলা বাগানে নিয়ে ধর্ষণ করে। মেয়েটি বাড়ীতে এসে পরিবারের সবাইকে ঘটনা জানিয়ে দেয়। গতকাল শুক্রবার সকালে ধর্ষণের শিকার শিশুটির পিতা বাদি হয়ে মহেশপুর থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। তবে পুলিশ এখন পর্যন্ত ধর্ষককে আটক করতে পারেনি।

মহেশপুর থানার অফিসার ইনর্চার(ওসি) রাশেদুল আলম জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধায় ওই স্কুলছাত্রী তাদের নিজ বাড়ির সামনে দাড়িয়ে ছিল। সেসময় পার্শবর্তী কালুহুদা গ্রামের শরিফুল ইসলামের ছেলে নবম শ্রেণির ছাত্র রাশেদুল ইসলাম তাকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে পার্শবর্তী কলাবাগানে নিয়ে ধর্ষণ করে। মেয়েটি বাড়ি এসে ঘটনাটি পরিবারকে জানায়। এরপর ধর্ষিতার বাবা বাদী হয়ে সকালে রাশেদুল ইসলামকে আসামী করে ধর্ষণ মামলাটি দায়ের করে। সকালেই ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য ধর্ষণের শিকার শিশুটিকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (8)
Tahrima Islam ১২ অক্টোবর, ২০১৯, ১:২৩ এএম says : 0
নারী সংগঠনগুলো এতটা নীরব কেন? মৃত্যুদন্ডের শাস্তি হলেতো মানবাধিকার সংগঠনগুলো আবার ফেটে পড়বে। রেপে আর মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছেনা! কয়েকটার ফাঁসি না হলে, এরা থামবেনা। আর নারীবাদীরা ব্যস্ত বড় বড় টিপ নিয়ে, মেয়েদের একান্ত বিষয়সম্পর্কিত রগরগে লেখা নিয়ে। Constructive wayতে এগুচ্ছে কই?
Total Reply(0)
Anarul Sarkar ১২ অক্টোবর, ২০১৯, ১:২৩ এএম says : 0
আমাদের সরকার কি এইসব দেখেননা একের পর এক অপরাধ বেরেই চলেছে এদেশে কি কোন আইন নেইএই আমাদের স্বাধীন বাংলদেশ এদেরকে প্রকাশে দিবালোকে সবার সামনে ফাঁসি দিয়ে মারা হোক যাতে করে এদের এই কঠিন শাস্তি দেকে দুই চার জনেন গা শিউরে ওটে।
Total Reply(0)
Azam Rahmatullah ১২ অক্টোবর, ২০১৯, ১:২৩ এএম says : 0
ধর্ষককে আমরা ধর্ষক হিসেবেই চিনতে চেয়েছিলাম। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এদের রাজনৈতিক পরিচয় আছে এবং এরা বিশেষ দলের নেতাকর্মী। অপকর্ম ঢাকতে এরা সাধারণত বিশেষ এক ধরনের চেতনার দোহাই দিয়ে থাকে।
Total Reply(0)
MD Shahin Ali Sabuz ১২ অক্টোবর, ২০১৯, ১:২৪ এএম says : 0
এই দেশে কি কোন আইন এর শাসন আছে।যে দেশে ছোট থেকে মেয়েদের পড়িবার থেকে উত্তেজনা পোশাক পড়ানোর শিক্ষা দেয়া।এদেশে এখন ভারতের কালচার অনুসরন করেচে মেয়েদের মায়েরা।মেয়েদের মায়েদের মনে রাখা উচিত এটি একটি ইসলামী রাষ্ট।
Total Reply(0)
Islam Saif ১২ অক্টোবর, ২০১৯, ১:২৫ এএম says : 0
এদেশে যার টাকা থাকে সেই ন্যায়বিচার পায়।যেমন বনানীর ধর্ষণ।পুরা দেশকে কাপিয়ে দিয়েছে।এদেশে ধর্ষণ এখন গ্লোবাল ওয়ার্মিং এর মতো।কারো এতে কিছু যায় আসে না।আর দরিদ্রদের ন্যায়বিচার আর সূর্য পশ্চিম দিকে ওঠার সমান
Total Reply(0)
Milaan Sinha ১২ অক্টোবর, ২০১৯, ১:২৫ এএম says : 0
চারদিকে এত ধর্ষন আর ধর্ষন, এজন্যই লোকে বলে কাচের ঘরে থেকে আপনি পরের ঘরে ঢিল ছুরতে পারেন না।
Total Reply(0)
Mazumdar Sagar ১২ অক্টোবর, ২০১৯, ১:২৫ এএম says : 0
আমি জানিনা কথাটা বলা ঠিক হবে কিনা বা কতটা নজর কাড়বে প্রশাসনের। আসলে আমাদের কমেন্টে তাদের কি আসে যায় তারা বলে আর দরেই খালাশ। বাকিটা টাকার উপর দিয়ে যায়। আর এমপি মন্ত্রী বা প্রশাসনের লোকদের ছেলে হলে তো কথাই নেই।। যাক থাক আর বলে লাভ নেই, আমি মনে করি ধর্ষণের শাস্তি সর্বচ্ছো মৃত্যুদণ্ড এবং সর্বনিম্ন আমৃত্যু বা যাবৎজীবন কারাদণ্ড করা হোক।
Total Reply(0)
Klinton Mistry Ardhendu ১২ অক্টোবর, ২০১৯, ১:২৫ এএম says : 0
তিব্র নিন্দা, দুঃখ প্রকাশ এসব ছেড়েছ ধর্ষণকারীর শাস্তি তার লিঙ্গ কর্তন তাও জনসম্মুখে এমন আইন করা হোক।। শিক্ষা ব্যবস্থার পরিবর্তন ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিবেশ শালীন করতে হবে।।।।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন