বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

ভারতের সাথে এক দশকে করা সকল চুক্তির বিস্তারিত জনগণ জানতে চায় -রিজভী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৩ অক্টোবর, ২০১৯, ১২:৫৯ পিএম

বুয়েটসহ সারাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে যে আন্দোলন এটি শুধু আবরার ফাহাদের হত্যাকা-ের বিচারের দাবিতেই নয় মন্তব্য করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে ভারতের সঙ্গে করা অসম এবং অধীনতামূলক চুক্তিগুলোর বিরুদ্ধে যেই যৌক্তিক সাহসী প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন তার সেই দাবির বাস্তবায়নই হচ্ছে চলমান আন্দোলনের মূলমন্ত্র। তিনি বলেন, দেশের প্রতিটি দেশপ্রেমিক মানুষ অসম এবং অধীনতামূলক ও সার্বভৌমত্ব বিপন্নকারী চুক্তির বাতিল চায়। দেশের জনগণ, গত একদশকে ভারতের সঙ্গে করা সকল চুক্তির বিস্তারিত জানতে চায়। এই দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। হুমকি ধামকি দিয়ে আন্দোলন দমন করা যাবেনা। এই আন্দোলন বাংলাদেশের মানুষের গোলামীর জিঞ্জির ছিঁড়তে স্বাধীনতা রক্ষার আন্দোলন।

রোববার (১৩ অক্টোবর) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রধানমন্ত্রী হুমকী দিচ্ছেন অভিযোগ করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, গতকাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের হুমকি দিয়ে বলেছেন, ‘ছাত্রদের ১০ দফা মেনে নেয়া হয়েছে আবার কিসের আন্দোলন?’ প্রথম কথা হচ্ছে, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ১০ দফা শেখ হাসিনা কিংবা তাদের নিয়োগকৃত ভিসি এমনিতেই মেনে নেয়নি, তাদেরকে মেনে নিতে বাধ্য করা হয়েছে। আবরার ফাহাদের মতো আর কোনো অসীম সম্ভাবনাময় জীবন যাতে ঝড়ে না যায় সেইজন্য বুয়েটের শিক্ষার্থীদের এই ১০ দফা। সুতরাং, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের এই ১০ দফা মানার ঘোষণা দিলেই সরকারের সব অপরাধ মাফ হয়ে যায়না। ভারতের সঙ্গে অসম এবং অধীনতামূলক চুক্তির বিরুদ্ধে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়ার কারণে আবরার ফাহাদকে নির্মমভাবে বন্যপ্রাণীর মতো পিটিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছে ছাত্রলীগ। সেইসব চুক্তি বাতিল বাতিল করতে হবে।

রিজভী বলেন, কি অপরাধ ছিল শহীদ আবরার ফাহাদের? আবরার ফাহাদ তো বাংলাদেশের পক্ষে কথা বলেছিলো। লিখেছিলো বাংলাদেশের স্বার্থের পক্ষে। তাহলে ছাত্রলীগের যেসব অস্ত্রধারীরা আবরার ফাহাদকে হত্যা করেছে তারা কোন দেশের স্বার্থ রক্ষা করেছে। কোন অপশক্তির স্বার্থ রাখা করেছে? এই বিবেকশূণ্য ক্যাডারদের মগজ ধোলাই করলো কারা? সুতরাং, আবরার ফাহাদের বর্বরোচিত হত্যাকা-ের বিরুদ্ধে যেই আন্দোলন, এটি শুধুমাত্র একটি হত্যাকা-ের বিচার চাওয়ার আন্দোলনই নয়, বরং আবরার ফাহাদ তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে ভারতের সঙ্গে করা অসম এবং অধীনতামূলক চুক্তিগুলোর বিরুদ্ধে যেই যৌক্তিক সাহসী প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন তার সেই দাবির বাস্তবায়নই হচ্ছে চলমান আন্দোলনের মূলমন্ত্র। তাই শুধুমাত্র বুয়েটের শিক্ষার্থীদের ১০ দফা মানলেই পার পাওয়া যাবেনা।

ছাত্রলীগ মনুষ্য চরিত্র হারিয়ে বন্য পশুর চরিত্র নিয়েছে মন্তব্য করে ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, ছাত্রলীগের বন্য পশুর চরিত্রেরই সর্বশেষ বহিঃপ্রকাশ বুয়েটে আবরার হত্যাকা-। ছাত্রলীগ একেকবার একটির চেয়ে আরেকটি ভয়ঙ্কর কা- ঘটানোর পর বেরিয়ে আসতে শুরু করে সারাদেশে তাদের ভয়ঙ্কর অপকর্মের কথা। এখন গণমাধ্যমে আলোচিত হচ্ছে, দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্রলীগের টর্চার সেলের কথা। এটি তো নতুন নয়। নিকট অতীতে, লগি বৈঠা হাতুড়ি চাপাতি নিয়ে সারাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের উপর ছাত্রলীগ যখন বর্বর আক্রমণ চালিয়েছিল, ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে নির্যাতন চালিয়েছিল তখনও ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়েছিল ছাত্রলীগের টর্চারে সেলের কথা। তখন যদি ছাত্রলীগের বর্বরতার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হতো তাহলে আবরার হত্যাকা- ঘটতো না। ঠা-া মাথায় সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠের একজন মেধাবী শিক্ষার্থীকে ছয়টি ঘণ্টা ধরে নির্যাতন করতে করতে মেরে ফেলার মতো নৃশংসতা কোনো সভ্য রাষ্ট্র কল্পনাও করতে পারেনা। আবরার হত্যাকা-ের দায় ছাত্রলীগের অভিভাবক আওয়ামী লীগ এড়াতে পারেনা।

রিজভী বলেন, শুধুমাত্র ক্ষমতা আঁকড়ে থাকার লোভে আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক চরিত্র হারিয়ে যেহেতু একটি দেউলিয়া সংগঠনে পরিণত হয়েছে ফলে ছাত্রলীগের বৈশিষ্ট্য ভালো হবে, এটা আশা করাও বোকামি। আবরার হত্যাকা- দেশে বিদেশে প্রতিটি বিবেকবান মানুষের হৃদয়ে নাড়া দিয়েছে। সেই আবরার হত্যাকা- নিয়ে যখন আওয়ামী লীগের নেতারা মুখরোচক মন্তব্য করেন, তখন অনেকেই স্বগোতক্তি করেন-পাগলরা এখন আওয়ামী লীগ করে, নাকি আওয়ামী লীগ করলে মানুষ পাগল হয়ে যায়।

নোবেল নিয়ে চট্টগ্রামের মেয়রের বক্তব্যের সমালোচনা করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, চট্টগ্রামের মেয়র ও চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির বলেছেন, ‘শেখ হাসিনা যাতে নোবেল পুরস্কার না পান, সেই ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই নাকি বুয়েটের ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যাকা- ঘটানো হয়ে থাকতে পারে। তিনি আরো বলেছেন, যেদিন নোবেল কমিটি নোবেল প্রাইজ ঘোষণার জন্য বসেছে, সেদিনই আবরার হত্যাকা- হয়েছে। তার মতে এখানে দুরভিসন্ধি থাকতে পারে। ষড়যন্ত্র, চক্রান্ত থাকতে পারে। যাতে শেখ হাসিনা নোবেল প্রাইজ না পান।’

রুহুল কবির রিজভী বলেন, মেয়র নাছির এই বক্তব্যে প্রমাণিত হয়, তিনি আসলেই আওয়ামী লীগ। অন্যথায় তার বোঝা দরকার ছিল, নোবেল পুরস্কার র‌্যাব-পুলিশের হাতে নয় যে, চাইলেই শেখ হাসিনাকে দেয়া সম্ভব। কিংবা অনুগত দলদাস সাংবাদিক দিয়ে প্রচারণা চালিয়েও নোবেল পাওয়া সম্ভব নয়।

তিনি বলেন, যে কোনো ঘটনায়, নিজেদের দায় দায়িত্ব এড়িয়ে অপরকে দোষারোপ করা কিংবা ষড়যন্ত্র খোঁজা আওয়ামী লীগের মজ্জাগত অভ্যাস। আসলে অপ্রিয় হলেও সত্য, যে দেশে আওয়ামী লীগের মতো রাজনৈতিক দল থাকে সে দেশের অনিষ্ট করতে শত্রুর প্রয়োজন হয়না। যে দলের অঙ্গ কিংবা সহযোগী সংগঠন হিসেবে ছাত্রলীগ-যুবলীগের মতো সংগঠন থাকে সে দলের অনিষ্ট করতে কোনো ষড়যন্ত্রকারীর প্রয়োজন হয়না।

র‌্যাব সদস্যকে সীমান্তে পিটিয়ে ফেরত পাঠানোর ঘটনায় সরকারের পক্ষ থেকে কোন কথা না বলায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, প্রতিবেশী বন্ধুদের ফেনী নদীর পানি,চট্টগ্রাম ও মংলা সমুদ্র বন্দর, বঙ্গোপসাগরের উপকূল পর্যবেক্ষণে রাডার স্থাপনের অধিকার, আমদানিকৃত এলপিজি দিয়ে আসার এক সপ্তাহ না যেতেই সেই বন্ধুরাই আমাদের কয়েকজন র‌্যাব সদস্যকে ধরে নিয়ে গিয়ে নির্মমভাবে বেধড়ক পিটিয়ে ফেরত পাঠিয়েছে। ভারতীয় সীমান্ত বাহিনীর এতো বড় অন্যায়ের খবর পত্রপত্রিকায় দেখে মানুষ ক্ষুব্ধ হয়েছে। কিন্তু শুধুমাত্র মসনদ টিকিয়ে রাখার জন্য এই তাবেদার সরকার কানে দিয়েছে তুলো, পিঠে বেঁধেছে কুলো, চোখে পরেছে ঠুলো। দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব এবং আত্মমর্যাদাবোধ সব বিকিয়ে দিয়েছে। নতজানু পররাষ্ট্রনীতির মাধ্যমে দেশের মানুষকে অধমে পরিণত করা হয়েছে। এতো বড় ঘটনার পরও সামান্য প্রতিবাদ পর্যন্ত করলো না এই নিশুতি সরকার। প্রায় প্রতিদিনই সীমান্তে পাখির মতো মানুষ হত্যা করছে বিএসএফ। মানুষ ধরে নিয়ে গিয়ে পঙ্গু করে দিচ্ছে। অথচ বিএসএফ এর বন্দনা করছে এই সরকার। প্রধানমন্ত্রী দাসখত লিখে দিয়ে আসার সময় সীমান্ত হত্যা নিয়ে কোন কথাও বলেনি। তিনি নতজানু সরকারের আচরণের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।

বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতার বর্ণনা দিতে গিয়ে রুহুল কবির রিজভী বলেন, তাঁর শারীরিক অবস্থার আশংকাজনক অবনতি ঘটেছে। অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার ব্যক্তিগত প্রতিহিংসায় ৬১৩ দিন যাবত বন্দী করে রেখেছেন তাঁকে। কারাগারে নেয়ার সময় সম্পূর্ণ সুস্থ, দেশনেত্রী এখন হুইল চেয়ার ছেড়ে উঠতে পারেন না। তিনি কারও সাহায্য ছাড়া দাঁড়াতে পারেন না। নিজের খাবার নিজে খেতে পারেন না। মাথার চুলও বাঁধতে পারেন না। তাঁর পোশাকও আরেকজনকে পরিয়ে দিতে হয়। হাত-পা শক্ত হয়ে গেছে। হাত-পায়ের আঙ্গুল ফুলে গেছে। এ অবস্থায় তিনি পিজি হাসপাতালের আট বাই দশ ফুটের ছোট্ট কক্ষে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এমনিতেই কারাগারের অস্বাস্থ্যকর কক্ষে অমানবিক পরিবেশের মধ্যে দেশনেত্রীর বন্দী রাখা হয়েছে। পঁচাত্তর বছর বয়সী নেত্রীর ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে জীবন ঝুকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। বারবার ইনস্যুলিন পরিবর্তন এবং ইনস্যুলিনের মাত্রা বৃদ্ধি করার পরেও কোন অবস্থাতেই তার সুগার নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। কোন কোন সময় এটি ২৩ মিলিমোল পর্যন্ত উঠে যাচ্ছে। সুগার নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে খাবারের পরিমাণ অনেক কমিয়ে দেয়াতে শরীরের ওজন অনেকখানি হ্রাস পেয়েছে। যথাযথ চিকিৎসার বিষয়ে আমরা বারবার দাবি করা সত্ত্বেও দেশনেত্রীকে উন্নতমানের যন্ত্রপাতি বিশিষ্ট দেশের কোন বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়নি।

বেগম জিয়ার জরুরিভাবে উন্নত চিকিৎসা দরকার জানিয়ে তিনি বলেন, ব্যথার কারণে রাত্রে তাঁর ঘুম হচ্ছে না এবং সারাক্ষণ তিনি অস্থির থাকছেন। আর্থ্রাইটিস ও ফ্রোজেন শোল্ডার সমস্যার কারণে স্বাস্থ্যের আরও গুরুতর অবনতি ঘটছে। ঘাড়-মাথা সোজা রাখতে পারছেন না। কয়েক বছর আগে অপারেশন করা চোখ এবং হাঁটুর ব্যাথা ক্রমশ: বৃদ্ধির ফলে অসহ্য ব্যথায় কাতরাচ্ছেন ‘গণতন্ত্রের মা’। দেশবাসী দেশনেত্রীর জীবনের পরিণতি নিয়ে অজানা আতঙ্ক ও শঙ্কার মধ্যে রয়েছে। সরকার অমানবিক এবং বেআইনি কাজে এতো অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে যে তারা বেগম খালেদা জিয়ার বিপদজনক অসুস্থতাও ভ্রুক্ষেপ করছে না। সরকারের অমানবিক ও অসুস্থ আচরণ প্রমাণ করে দেশনেত্রীকে প্রাণনাশের ষড়যন্ত্র করছেন তারা। ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য ও দেশ বিক্রি করার জন্য আইন আদালতকে কব্জা করে দেশনেত্রীর জামিনে বাধা দেয়া হচ্ছে।

কাঁটাতারে ঝুলন্ত ফেলানি থেকে মেধাবী তরুণ আবরার ফাহাদকে হত্যা ও বেগম জিয়ার বন্দিত্ব একই সুতায় গাঁথা মন্তব্য করে বিএনপির এই নেতা বলেন, বেগম জিয়ার সুচিকৎসা হচ্ছে না। দেশনেত্রীর প্রাণনাশ করার গভীর নীলনকশা বাস্তবায়নে ব্যস্ত অবৈধ সরকার জামিনে বাধা দিয়েই ক্ষান্ত হচ্ছে না, বিএসএমএমইউর পরিচালক সাহেবকে দিয়ে প্রেসব্রিফিংয়ে বলানো হচ্ছে -‘খালেদা জিয়া ভালো আছেন, তার অবস্থার কোনও অবনতি হয়নি।’কতটা অমানবিক হলে এতো বড় মনগড়া কথা তারা বলতে পারেন। জরুরিভিত্তিতে তাঁর উন্নত চিকিৎসা দরকার। অন্যথায় যে কোন সময় অঘটন ঘটে যেতে পারে। এই উদ্বেগজনক পরিস্থিতিতে আমরা আজই দেশনেত্রীকে নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করছি।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করে বিএনপির এই নেতা বলেন, গতকাল চিকিৎসা শেষে ঢাকা আর্ন্তজাতিক বিমান বন্দরে নামার সাথে সাথেই সাজানো মিথ্যা মামলায় মুক্তিযোদ্ধা মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ-বীরবিক্রমকে গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী। প্রথমে বিমানবন্দর থানা পুলিশ গ্রেফতার করে পরে পল্লবী থানায় হস্তান্তর করে। এ গ্রেফতার সু-পরিকল্পিত রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও মানুষের চোখকে অন্য দিকে ঘুরিয়ে দেওয়ার অপকৌশলমাত্র। সাবেক পানি সম্পদ মন্ত্রী হিসেবে তিনি পানির ন্যয্য হিস্যা ও দেশের স্বার্থের পক্ষে একজন নির্ভিক ভাষ্যকার। পানির চুক্তির চক্রান্তের নানাদিক তুলে ধরতে পারতেন সাবেক এ পানি মন্ত্রী। এ কারণেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। দেশবিরোধী চুক্তি করে দেশের সার্বভৌমত্বকে দুর্বল করার বিরুদ্ধে সোচ্চার মেজর হাফিজের কণ্ঠকে স্তব্ধ করানোর জন্যই এ গ্রেফতার। চিকিৎসা শেষে অসুস্থ মেজর হাফিজ নিস্তার পেলেন না। কীর্তিমান দেশপ্রেমিক এ মুক্তিযোদ্ধাকে গ্রেফতার করে সরকার তার প্রভুদের সন্তুষ্ট করতে চাচ্ছে। তাঁর গ্রেফতার সুদুরপ্রসারী ষড়যন্ত্রের নগ্ন বহিঃপ্রকাশ। আমরা এ মুহুর্তে তাঁর মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে নিঃশর্ত মুক্তির জোর দাবি জানাচ্ছি।

বিএনপির জনসভায় পুলিশের বাধা ও গ্রেফতারের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে রিজভী বলেন, দেশবিরোধী চুক্তি বাতিল ও বুয়েটের মেধাবী শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের হত্যাকারিদের শাস্তির দাবিতে গতকাল ছিল বিএনপির কেন্দ্র ঘোষিত প্রতিবাদ কর্মসূচি ও মহানগরীতে জনসমাবেশ। এ কর্মসূচিকে ঘিরে পুলিশ আওয়ামী লীগের স্বভাবের মতোই আচরণ করেছে। নয়াপল্টনে বিএনপির সমাবেশকে ঘিরে তৈরি করা হয়েছিল আতঙ্কের বলয়। মিটিংয়ে আসতে থাকা কয়েকশ নেতা-কর্মীকে পুলিশ বিনা উস্কানিতে গ্রেফতার করেছে। ফরিদপুরে বিএনপির কর্মসুচিতে পুলিশ আক্রমণ চালিয়ে সভা প- করেছে এবং স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান চৌধুরি কামাল ইবনে ইউসূফ ও সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদের সাথে পুলিশ প্রচ- র্দুব্যবহার করেছে। তিনি গ্রেফতারি অভিযানের তীব্র নিন্দা জানান, অবিলম্বে গ্রেফতারকৃতদের মুক্তি দাবি করেন।

কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপারের অপসারণ দাবি করে বিএনপির এই নেতা বলেন, কুষ্টিয়া পুলিশ সুপার তানভীর আরাফাতের ভূমিকা অত্যন্ত ন্যক্কারজনক। তিনি যেন মাহবুবুল হক হানিফ সাহেবের নিজস্ব কর্মচারি, আইনের লোক নয়। বিএনপির কর্মসূচিকে বাধা দেওয়াই যেন এসপির একমাত্র কাজ। তিনি বিএনপির কোন কর্মসূচি কুষ্টিয়ায় হতে দেন না। এমনকি শহীদ আবরার ফাহাদের পরিবারকেও তিনি নানাভাবে হুমকি ধামকি দিয়েছেন, তার নেতৃত্বেই শহীদ আবরারের পরিবারের সদস্যদের উপর আক্রমণ করা হয়েছে। বর্তমানে শহীদ আবরারের পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনর মধ্যে দিনযাপন করছে। তিনি মাহবুবুল আলম হানিফ সাহেবের কথায় বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাকে শহীদ আবরারের পরিবারের সাথে দেখা করতে দিচ্ছেন না। এমনকি এ এসপি সাহেব শহীদ আবরারের পরিবারকে নানা কায়দায় জিম্মি করে রেখেছেন, নানা ভয়ভীতি প্রদর্শন করছেন। আবরার ফাহাদের হত্যাকা- নিয়ে কেউ যাতে টু শব্দ না করতে পারে সেজন্য এসপি হানিফ সাহেবের লাঠিয়াল বাহিনীতে পরিণত হয়েছেন। আবরার ফাহাদের নির্মম হত্যাকা- ভুলিয়ে দেয়ার জন্য কুষ্টিয়ার এসপি যথাযথ ভূমিকা পালন করছেন। তার কারণে কুিষ্টয়া জেলায় এক ত্রাসের রাজত্ব কায়েম হয়েছে। এ দলদাস এসপিদের আস্কারাতে ক্ষমতাসীন দলের ক্যাডাররা সারাদেশজুড়ে নির্দয় খুন, জখম, দখল, ক্যাসিনো জুয়াতে জড়িত হয়ে পড়েছে। তিনি এ মুহুর্তেই কুষ্টিয়ার এসপির ন্যাক্কারজনক কর্মকা-ের তীব্র নিন্দা জানান এবং কুষ্টিয়া থেকে অপসারণ দাবি করেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন