বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

চালক ছাড়াই ট্রেন গেল রাজশাহী

রেল শ্রমিকলীগ নেতার কান্ড

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৫ অক্টোবর, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

চালক ছাড়াই ঈশ্বরদী থেকে রাজশাহী গেছে পাবনা এক্সপ্রেস ট্রেনটি। গত রোববার চাঞ্চল্যকর এ ঘটনাটি ঘটেছে ঈশ্বরদীতে। এ ঘটনায় দায়ী ৩ জনকে তাৎক্ষণিকভাবে সাময়িক বরখাস্ত করেছে রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় কর্তৃপক্ষ।
তারা হলেন, ঈশ্বরদী রেলওয়ে শ্রমিকলীগের সাধারণ সম্পাদক ও পাবনা এক্সপ্রেস ট্রেনের চালক লোকো মাস্টার (এলএম) আসলাম উদ্দিন খান মিলন, শ্রমিক লীগের একই কমিটির যুগ্ম সম্পাদক ও ওই ট্রেনের সহকারী লোকো মাস্টার (এএলএম) আহসান উদ্দিন আশা এবং ট্রেনের পরিচালক (গার্ড) আনোয়ার হোসেন-২।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, রোববার পাবনা এক্সপ্রেস ট্রেনের চালক আসলাম উদ্দিন খান মিলন শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক হওয়ায় প্রায়ই নিজে ট্রেনে না উঠে সহকারীর হাতে ছেড়ে দেন। বিষয়টি ওপেন সিক্রেট হলেও রেল শ্রমিক লীগ নেতা হওয়ায় এ নিয়ে কেউ কিছু বলার সাহস পেতো না। গত রোববারও তিনি নিজে ট্রেনে না উঠে তার সহকারী আহসান উদ্দিন আশাকে দিয়ে ট্রেনটি ঈশ্বরদী থেকে পাবনা হয়ে রাজশাহী পাঠান। এ ঘটনাটি ট্রেনের গার্ড জানলেও তিনি রেল কর্তৃপক্ষের কাউকে না জানিয়ে সহকারীকে নিয়ে ট্রেনটি পরিচালনা করেছেন।
এ খবর জানার পর পাকশী বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা (ডিটিও) আব্দুল্লাহ্ আল-মামুন ট্রেনের গার্ডকে এবং বিভাগীয় যান্ত্রিক প্রকৌশলী (ডিএমই লোকো) আশিষ কুমার চক্রবর্তী চালক ও সহকারী চালককে সাসপেন্ড করার নির্দেশ দেন।
পাকশী বিভাগীয় রেলের এই দুই কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, সময়মতো না ছাড়লেও একজন পূর্ণাঙ্গ চালক (এলএম) ছাড়া কোনো ট্রেন চালানোর সুযোগ রেলওয়েতে নেই। যেটি রোববার পাবনা এক্সপ্রেস ট্রেনে ঘটেছে। চালক ছাড়া ট্রেনটি রাজশাহীতে পৌঁছার পর রেলের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি জানতে পেরে তাৎক্ষণিকভাবে পাবনা এক্সপ্রেস ট্রেন থেকে তিনজনকে অব্যাহতি দিয়ে অন্য চালক ও গার্ডকে দিয়ে ফিরতি ট্রেন পাঠান ঈশ্বরদীতে। জানা গেছে, ফিরতি ট্রেনের যাত্রীরা এ ঘটনা শুনে আতঙ্কিত ও বিস্ময় প্রকাশ করেন।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, পাবনা এক্সপ্রেস ট্রেন ঈশ্বরদী রেলওয়ে জংশন স্টেশন থেকে প্রতিদিন মাঝগ্রাম জংশন, দাশুড়িয়া, টেবুনিয়া স্টেশন হয়ে প্রথমে পাবনা স্টেশনে যায়। পাবনা থেকে ঈশ্বরদী বাইপাস স্টেশন হয়ে রাজশাহী যায়। ফিরতি সময়ে রাজশাহী স্টেশন থেকে পাবনা হয়ে ঈশ্বরদী জংশন স্টেশনে ফিরে আসে ট্রেনটি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে রেল সূত্র জানায়, এই নিয়ম না মেনে প্রায়ই এই ট্রেনের চালক ও রেল শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক আসলাম উদ্দিন খান মিলন ঈশ্বরদী বাইপাস স্টেশন থেকে ট্রেনে ওঠেন। আবার মাঝে মধ্যেই তিনি তার সহকারীকে দিয়ে ট্রেন রাজশাহীতে পাঠিয়ে থাকেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে রেলওয়ের কর্মচারীরা জানান, শুধু ঈশ্বরদী নয়, পশ্চিমাঞ্চলে পার্বতীপুর, বোনারপাড়া ও লালমনিরহাটেও শ্রমিক লীগের নেতা নামধারীরা মিলনের মতোই ক্ষমতাধর। তারা রেলের নিয়মকানুন মানেন না। ডিউটি না করেও টাকা নিচ্ছেন। পার্বতীপুর লোকোশেডে অষ্টম শ্রেণি পাশ একজন পোর্টারকে ট্রেনের চালকদের ডিউটি বণ্টনের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। শ্রমিক লীগ নেতা নামধারী জামাল নামের ওই পোর্টারের অত্যাচারে ট্রেন চালকরা অতিষ্ঠ। একজন চালক বলেন, জামালের দাপটের কাছে লোকো ফোরম্যান এমনকি উপ সহকারী প্রকৌশলীরাও অসহায়। জামালের দুর্নীতি ও অনিয়মের প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে অনেকেই হয়রানীমূলক বদলির শিকার হয়েছেন।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন