মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ব্যবসা বাণিজ্য

টাকা ফেরত চান আমানতকারীরা

পিপলস লিজিং

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৫ অক্টোবর, ২০১৯, ১২:০২ এএম

 আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে আমানতের টাকা ফেরত চান অবসায়ন হওয়া ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান পিপলস লিজিংয়ের আমানতকারীরা। গতকাল কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে এক বৈঠকে এ দাবি করেন পিপলস লিজিংয়ের পাঁচজন আমানতকারী। বৈঠকে গভর্নর ফজলে করিম ছাড়াও ব্যাংকিং রিফর্ম অ্যাডভাইজার এস কে সুর চৌধুরী, নির্বাহী পরিচালক আব্দুর রহিম, উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. আসাদুজ্জামান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

অন্যদিকে আমানতকারীদের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেড আমানতকারী সমিতির আহ্বায়ক আনোয়ারুল হক, যুগ্ম আহ্বায়ক রানা ঘোষ, সম্পাদক প্রশান্ত কুমার দাস, সদস্য কামাল আহমেদ এবং সামিয়া বিনতে মাহবুব।
আমানতকারীরা বলছেন, পিপলস লিজিংকে লাইসেন্স দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তাদের অনিয়ম-দুর্নীতির দায়-দায়িত্ব বাংলাদেশ ব্যাংককে নিতে হবে। আমরা আমানতকারীরা বাংলাদেশ ব্যাংকের লাইসেন্সের ওপরে ভরসা করে সেখানে আমানত রেখেছি। আমরা দুর্বিষহ জীবনযাপন করছি। সবকিছু বিবেচনা করে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে আমরা আমাদের আমানতের টাকা ফেরত চাই।

বৈঠক শেষে আনোয়ারুল হক বলেন, আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে টাকা ফেরত পাওয়ার দাবি জানিয়েছি। খুব দ্রুত টাকা ফেরত দেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর। তবে এর জন্য নির্দিষ্ট কোনো সময় নির্ধারণ করতে পারেননি তিনি। আমরা আশা করছি, দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে অডিট কার্যক্রম শেষ হলেই আমরা টাকা ফেরত পাব। এ ছাড়া যারা অব্যবস্থাপনার সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা গ্রহণের কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন গভর্নর।
তিনি জানান, আমাদের এ বলেও আশ্বস্ত করা হয়েছে যে, যদি এর মধ্যে ২০ কোটি টাকাও উদ্ধার করতে সক্ষম হই তাহলে সঙ্গে সঙ্গেই আমরা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে সে টাকা বিতরণ করে দেব।

পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স লিমিটেডের আমানতকারীদের টাকায় নিজেদের ব্যবসা গোছাচ্ছেন প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান পরিচালকরা। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে এখনও পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পিপলস লিজিংয়ের আমানতকারী সামিয়া বিনতে মাহবুব।
সামিয়া বিনতে মাহবুব জানান, বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে নিবন্ধন দেয়া হয়েছে বলেই আমরা পিপলস লিজিংয়ে টাকা রেখেছি। এমনকি আমানতের বিপরীতে আমরা উপযুক্ত ট্যাক্স দিয়ে আসছি। সুতরাং আমাদের টাকার নিরাপত্তা দেয়ার দায়িত্ব বাংলাদেশ ব্যাংকের। সে দাবি আমরা প্রথম থেকে করে আসছি এবং টাকা পাওয়ার আগ পর্যন্ত করে যাব। কারণ, আমরা এই প্রতিষ্ঠানে টাকা রেখে এখন অসহায়।

এদিকে চলতি বছরের ১৪ জুলাই পিপলস লিজিং অবসায়নের জন্য আদালতে মামলা দায়ের করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ওইদিনই মামলার শুনানি শেষে প্রতিষ্ঠানটি অবসায়নে পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দেন আদালত। একই সঙ্গে পিপলস লিজিংয়ের নামে থাকা সব হিসাব ও অনিয়মের দায়ে বহিষ্কৃত ৯ পরিচালকের নামে থাকা শেয়ার ও তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দের নির্দেশ দেয়া হয়।

এ ছাড়া অবসায়ন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগের উপ-মহাব্যবস্থাপক পদমর্যাদর একজনকে অবসায়ক নিয়োগের আদেশ দেন আদালত। জানা যায়, আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগের উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. আসাদুজ্জামান খানকে অবসায়ক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে ৫৭০ কোটি টাকা বের করে নেন প্রতিষ্ঠানটির পরিচালকেরা।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন