ক্ষুধা ও অপুষ্টির নিরিখে বাংলাদেশ এগিয়ে গেল ভারত ও পাকিস্তান থেকে। দুই দাতব্য সংস্থা যারা মানবিক সহায়তা নিয়ে কাজ করে তাদের তৈরি ১১৭টি দেশের তালিকা থেকে এমনটাই জানা যাচ্ছে। বিশ্ব ক্ষুধা সূচক (গ্লোবাল হাঙ্গার ইনডেস্ক) অনুসারে যে ১০০ পয়েন্টের এক ‘তীব্রতা স্কেল’ রয়েছে, যেখানে শূন্য হল সেরা স্কোর। শূন্য অর্থে, সেদেশে কোনও কোনও মানুষ অনাহারে নেই।
এই তালিকা থেকে জানা যাচ্ছে, ভারতের স্কোর ৩০.৩। জানানো হয়েছে, ভারতে এই অনাহারের সমস্যা বেশ তীব্র আকার ধারণ করেছে। আয়ারল্যান্ডের ‘কনসার্ন ওয়ার্ল্ড ওয়াইড’ ও জার্মানির ‘ওয়েলথ হাঙ্গার লাইফ’ নামের দুই সংস্থা এই বার্ষিক রিপোর্ট তৈরি করে। জিএইচআই বা বিশ্ব ক্ষুধা সূচক অনুসারে ২০১৪ সালে ভারত তালিকায় ছিল ৫৫ নম্বরে। এবার নেমে এসেছে ১০২ নম্বরে। পাকিস্তান রয়েছে ৯৪ নম্বরে, বাংলাদেশ ৮৮ ও নেপাল ৭৩ নম্বরে রয়েছে।
প্রতিবারের হিসেব থেকে দেখা যাচ্ছে, ভারতের পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপের দিকে যাচ্ছে। ২০১৪ সালে ৭৬টি দেশের মধ্যে ভারত ৫৫ নম্বরে ছিল। ২০১৭ সালে ১১৯টি দেশের মধ্যে ভারতের স্থান ছিল ১০০। ২০১৮ সালে ১১৯টি দেশের মধ্যে ১০৩। আর এবার দেখা যাচ্ছে ১১৭টি দেশের তালিকায় ভারত ১০২ নম্বরে।
রিপোর্ট অনুসারে, বৃহৎ জনসংখ্যার কারণে ভারতের জিএইচআই ওই অঞ্চলের উপরে প্রভাব ফেলে। ভারতে ‘চাইল্ড ওয়েস্টিং রেট' অর্থাৎ পাঁচ বছরের নীচে শিশুমৃত্যু বা শিশুদের অপুষ্টিজনিত দৈহিক উচ্চতা ও ওজন হ্রাসের হিসেব ২০.৮ শতাংশ। সারা বিশ্বের মধ্যে যা সর্বোচ্চ। রিপোর্টে আরও জানানো হয়েছে, ক্যালরির অভাব এবং কম পুষ্টির দিকটি এর থেকে উঠে আসে। বিরোধী নেতারা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তথা কেন্দ্রকে এই জিএইচআই রিপোর্টকে সামনে রেখে প্রতিবাদ শুরু করেছেন।
কেরালার অর্থমন্ত্রী থমাস আইসাক টুইট করে জানিয়েছেন, ‘২০১৯ বিশ্ব ক্ষুধা সূচক প্রকাশিত হয়েছে। ভারতের র্যাঙ্ক আরও নেমে হয়েছে ১০২। প্রধানমন্ত্রী মোদি ক্ষমতায় আসার পর থেকেই এই অবনমন। ২০১৪ সালে ভারত ছিল ৫৫ নম্বরে। ২০১৭ সালে তা হয় ১০০। বিশ্বের অনাহারের সংখ্যাধিক্য এখন ভারতে।’ কর্নাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও কংগ্রেস নেতা সিদ্দারামাইয়াও এই নিয়ে কেন্দ্রকে আক্রমণ করে টুইটে করেন। তার টুইটে তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘অনেকেই বিশ্বাস করেন ‘আচ্ছে দিন আয়েগা। প্রশ্ন হল কবে?’ সূত্র: এনডিটিভি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন