বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

বিশ্ব পর্যটনের হাতছানি

কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ

শামসুল হক শারেক, কক্সবাজার থেকে | প্রকাশের সময় : ১৭ অক্টোবর, ২০১৯, ১২:০১ এএম

চলতি অক্টোবর মাস থেকেই শুরু হয়েছে পর্যটন মৌসুম। প্রতি বছর এই পর্যটন মৌসুমকে ঘিরেই দেশি-বিদেশি পর্যটক বরণ করতে কক্সবাজারে শুরু হয় সাজ সাজ রব। এ বছরও পর্যটক আকর্ষণে বেশ জাঁকজমকপূর্ণভাবে ১ অক্টোবর পালিত হয় পর্যটন দিবস। এখন কক্সবাজারের পর্যটনে নতুন মাত্রা যোগ করেছে কক্সবাজার থেকে টেকনাফ পর্যন্ত অপরূপ সৌন্দর্যের দীর্ঘ ৮০ কিলোমিটার মেরিন ড্রাইভ সড়ক।

পৃথিবীর দীর্ঘতম সৈকতজুড়ে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কটি এখন বিশ্ব পর্যটনের হাতছানি। মেরিন ড্রাইভ সড়কটি কক্সবাজার শহরের কলাতলী থেকে বঙ্গোপসাগর এর পাশ দিয়ে সীমান্ত শহর টেকনাফ পর্যন্ত দীর্ঘ ৮০ কিলোমিটার বিস্তৃত। দীর্ঘ এই সড়কের এক পাশে বঙ্গোপসাগর এর অথৈ নীল জলরাশি, আরেক পাশে উচুঁ নিচু বিস্তীর্ণ পাহাড়শৃঙ্গ যেন পর্যটকদের হাতছানি দিয়ে ডাকে।

আগে শুধু কক্সবাজার সৈকত, সোনাদিয়া-সেন্টমার্টিন ঘিরে পর্যটকদের স্বপ্ন থাকলেও মেরিন ড্রাইভ সড়ক এখন পর্যটকদের পদচারণা অবারিত করেছে টেকনাফ পর্যন্ত সাগর পাহাড়, বন-বনানী। সাগর পাহাড়ের মাঝদিয়ে অপরূপ মেরিন ড্রাইভ সড়ক নজর কেড়েছে দেশি বিদেশি পর্যটকের। ৪৫৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত মেরিন ড্রাইভ সড়কটি বর্তমান সরকারের উন্নয়ন ও সফলতার অন্যতম স্মারক।

কক্সবাজার সৈকত, সাগর পাহাড়ের মাঝদিয়ে অপরূপ মেরিন ড্রাইভ সড়কের আকর্ষণে এখন দেশি-বিদেশি পর্যটকের স্রোত বেড়েছে কক্সবাজারে। ২০১৭ সালে রোহিঙ্গা সঙ্কট সৃষ্টির পর থেকে দিন দিন গুরুত্ব বাড়ছে মেরিন ড্রাইভ সড়কের। রোহিঙ্গা ইস্যুতে কক্সবাজার ভ্রমণে আসা দেশি-বিদেশি ভিভিআইপিসহ বিশ্ব নেতৃবৃন্দ সবাই পুরাতন আরাকান সড়ক ছেড়ে মেরিন ড্রাইভ দিয়েই রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যাতায়াত করেছেন।

২০১৬ সালে পর্যটনবর্ষ উপলক্ষে আন্তর্জাতিক দুটি পথে বাংলাদেশ যুক্ত হয়েছে বিশ্ব পর্যটনের সাথে। সাগর পথে এখন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া ও ইউরোপের পর্যটকরা কক্সবাজার ভ্রমণে আসতে শুরু করেছেন। আন্তর্জাতিক ট্যুর অপারেটর জার্নিপ্লাসের সিইও তাওফিকুর রহমান এ প্রসঙ্গ জানান, সাগর পথে কক্সবাজার দিয়েই বাংলাদেশ বিশ্ব পর্যটনে যুক্ত হয়েছে। চলতি বছর জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসে দুন্দফায় ‹সিলভার ডিসকভার› জাহাজে করে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া ও ইউরোপের ২৪০ জন পর্যটক কক্সবাজার ভ্রমণ করে গেছেন। আগামী জানুুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে-এর সংখ্যা আরো বাড়তে পারে।

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১৬ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্যাটালিয়নের তত্ত্বাবধানে নির্মিত হয় দীর্ঘ ৮০ কিলোমিটার মেরিন ড্রাইভ সড়কটি। ২০১৭ সালের ৬ মে মেরিন ড্রাইভ সড়কের উদ্বোধন করে বিশ্ব পর্যটনে কক্সবাজারকে অবারিত করেছেন বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
মেরিন ড্রাইভ সড়ক নির্মাণের পরিকল্পনা হয় ১৯৮৯ সালে। ১৯৯৩ সালে তৎকালীন সরকার ৪৮ কিলোমিটার মেরিন ড্রাইভ সড়ক নির্মাণ প্রকল্প গ্রহণ করলেও ২ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণের পর এর কাজ বন্ধ হয়ে যায় এবং সড়কটি সাগরের প্রবল স্রোতে বিলীন হয়ে যায়। পরবর্তীতে ১৯৯৫ সালে এর নির্মাণ কাজ পুনরায় শুরু হয়। তখন এর নির্মাণ কাজের দায়িত্ব দেয়া হয় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে। সেনাবাহিনীর ১৬ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্যাটালিয়ন দীর্ঘ ৮০ কিলোমিটার মেরিন ড্রাইভটি তিনটি ধাপে নির্মাণ করেন। সড়কটির কাজ সেনাবাহিনী করার কারণে এর নির্মাণ কাজ ২০১৮ সালে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এক বছর আগেই তা শেষ হয়ে যায়। একই সাথে সুন্দর ও টেকসই হওয়ায় পর্যটক আকর্ষণেও সহায়ক হয় সড়কটি।

ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব কক্সাবাজার (টুয়াক)-এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এস.এম কিবরিয়া খান বলেন, জাহাজে করে কক্সবাজারে বিদেশি পর্যটক আসার যে ধারা শুরু হয়েছে তা শুধু কক্সবাজার নয় দেশের পর্যটন খাতের জন্য অত্যন্ত সুখবর। এই বার্তাটি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ছড়িয়ে দিতে পারলে কক্সবাজারে বিদেশি পর্যটক আগমণের সংখ্যা বাড়বে। এতে কক্সবাজারের পর্যটন শিল্পের প্রসার বাড়বে। সরকার নানাভাবে বিপুল রাজস্ব পাবে।

দীর্ঘ পর্যটন এলাকায় পর্যটকদের নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশ রাত-দিন কাজ করছে বলে জানান ট্যুরিস্ট পুলিশের এসপি জিল্লুর রহমান। এতে করে পুলিশের প্রতি পর্যটকদের আস্থা বেড়েছে। এ প্রসঙ্গে কক্সবাজার সদরের এমপি সাইমুম সরওয়ার কমল এমপি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কক্সবাজার উন্নয়নে বিশেষ নজর দিয়েছেন। কক্সবাজারে এখন হাজার হাজার কোটি টাকার কাজ চলছে। মেরিন ড্রাইভ সড়ক কক্সবাজারের অন্যতম আকর্ষণ। দেশি-বিদেশি পর্যটকদের নির্বিঘেœ কক্সবাজার ভ্রমণের আহবান জানান তিনি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
dr. m. islam medicine deptt. king saud university saudi arab. ১৭ অক্টোবর, ২০১৯, ১২:০৬ পিএম says : 0
abrar was beaten from 8PM TO 3AM. 8 HOURS1 VC (DAME CARE ABOUT STUDENT)AND GOOD ACTOR PROVOST could save his life within one minute! WHATISthere role? what is there job, what action and step has been by these ROBOTS? I WILL REQUEST OUR HOME MINISTER please investigate in details and explore the hidden facts? vc and provost are abettor of this tragic murder!
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন