শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

তিন জেলায় ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত ৪

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৯ অক্টোবর, ২০১৯, ১২:০২ এএম

এক রাতে তিন জেলায় বন্দুকযুদ্ধে দুই রোহিঙ্গাসহ চারজন নিহত হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে গতকাল ভোর পর্যন্ত পৃথকভাবে বিজিবি ও পুলিশের সঙ্গে এ ঘটনা ঘটে। এদের মধ্যে কক্সবাজারের টেকনাফে দুইজন, জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে একজন ও ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে একজন। নিহতদের মধ্যে ইয়াবা কারবারি, সন্ত্রাসী ও ডাকাত দলের সর্দার রয়েছে বলে দাবি করেছে পুলিশ। এসময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ঘটনাস্থল থেকে একটি পাইপগান, একটি বিদেশি পিস্তল, একটি এলজি, ২৫ রাউন্ড গুলি ও ২০ রাউন্ড গুলির খোসা, ৫০ হাজার পিস ইয়াবা এবং দুটি লম্বা দা উদ্ধার করেছে। আহত হয়েছেন সাত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য।
কক্সবাজার : কক্সবাজারের টেকনাফে বিজিবির সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ দুই রোহিঙ্গা নিহত হয়েছেন। গতকাল ভোররাতে উপজেলার হোয়াইক্যং লম্বাবিল নাফ নদ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন- কক্সবাজারের উখিয়া কুতুপালং রোহিঙ্গা শিবিরের ব্লক-এ/৩ এর সোলতান আহমেদের ছেলে আবুল হাসিম (২৫) ও ব্ক/র-সি/১ এর আবু ছিদ্দিকের ছেলে ন‚র কামাল (১৯)। বিজিবির দাবি- নিহতরা ইয়াবা কারবারি। এ সময় বিজিবির তিন সদস্য আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে ৫০ হাজার পিস ইয়াবা, একটি এলজি অস্ত্র, দুই রাউন্ড গুলি এবং দুটি লম্বা দা উদ্ধার হয়েছে।
টেকনাফ-২ বিজিবির কমান্ডার লে. কর্নেল ফয়সাল হাসান খান বলেন, হোয়াইক্যং বিওপির সদস্যরা বৃহস্পতিবার দিনগত রাত ১২টার দিকে নাফ নদের কিনারায় টহল দিচ্ছিল। এ সময় একটি নৌকায় করে কিছু লোক বাংলাদেশের জলসীমায় প্রবেশ করে। বিজিবি সদস্যরা ওঁৎ পেতে থাকেন। দুজন লোক ক‚লে নামামাত্র বিজিবি সদস্যরা তাদের চ্যালেঞ্জ করলে তারা তীর দিয়ে দৌড় দেন। নৌকায় থাকা লোকজন নৌকাটি নিরাপদ আশ্রয়ে নেয়। পালিয়ে যাওয়ার সময় তারা বিজিবি সদস্যদের ওপর গুলি বর্ষণ করে। তাদের দেখাদেখি নৌকায় থাকারাও গুলি চালায়। বিজিবিও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি চালায়।
উভয়পক্ষের গোলাগুলি শেষে ঘটনাস্থল থেকে দুইজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তাদেরকে টেকনাফ উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন। তাদের পকেটে থাকা পরিচয়পত্রে তারা রোহিঙ্গা বলে শনাক্ত হয়। এ ঘটনায় বিজিবির তিন সদস্যও আহত হন। তারা টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
বিজিবি কমান্ডার আরও জানান, ঘটনাস্থল থেকে দেশীয় তৈরি একটি এলজি, দুই রাউন্ড গুলি, দুটি রাম দা ও ৫০ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশগুলো কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট আইনে মামলা করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
গফরগাঁও : ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের(ডিবি) সাথে কথিত বন্দুক যুদ্ধে মোতালেব(৪১) নামে আন্তজেলা ডাকাত দলের সর্দার নিহত হয়েছে। এ সময় ডাকাতের গুলিতে ডিবি পুলিশের এসআই (নিরস্ত্র)আক্রাম হোসেন আহত হন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি পাইপগান, ১৫ রাউন্ড শর্টগানের গুলি ও ২০ রাউন্ড গুলির খোসা উদ্ধার করেন। ঘটনাটি গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টায় উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের আঞ্চলিক সড়কে ঘটেছে। নিহত ডাকাত সর্দার মোতালেব উপজেলার ছয়ানী রসুলপুর গ্রামের মৃত কেতু শেখ ওরফে আব্দুল গফুরের ছেলে। মোতালেবের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ৫টির বেশি মামলা রয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের (গফরগাঁও সার্কেল) কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে ময়মনসিংহ ডিবি পুলিশের দুইটি পৃথক টিম উপজেলার রসুলপুর এলাকায় মাদক বিরোধী বিশেষ অভিযান চালানোর সময় গোপন সূত্রে জানতে পারেন রসুলপুর আঞ্চলিক সড়কে আন্তজেলা ডাকাত দল ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছে। পুলিশ দল ঘটনাস্থলে পৌঁছামাত্র ডাকাত দল পুলিশের উপর অতর্কিতে গুলি করতে থাকে। এতে এসআই আক্রাম হোসেন আহত হন। এ সময় আত্মরক্ষার্থে ডিবি পুলিশ পাল্টা ফাঁকা গুলি চালালে এক পর্যায়ে ডাকাত দল গুলি করতে করতে পালিয়ে যায়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আন্তজেলা ডাকাত দলের সর্দার মোতালেবকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি পাইপগান, ১৫ রাউন্ড শর্টগানের গুলি ও ২০ রাউন্ড গুলির খোসা উদ্ধার করেছেন।
গফরগাঁও সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলী হায়দার চৌধুরী বলেন, নিহত মোতালেব আন্তজেলা ডাকাত দলের সর্দার ছিল এবং তার নেতৃত্বে দীর্ঘদিন যাবত আঞ্চলিক সড়কে যানবাহনে ডাকাতি করে আসছিল। মোতালেবের বিরুদ্ধে ৫টির অধিক মামলা রয়েছে।
জয়পুরহাট : জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার ভুতগাড়ী গ্রামে পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ আমিনুল ইসলাম ক্যাসেট (৩৫) নামে এক শীর্ষ অপহরণকারী নিহত হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার ভোররাতে এ ঘটনা ঘটে । নিহত আমিনুল ইসলাম ক্যাসেট জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার পিয়ারা গ্রামের মৃত শাহাবুল ইসলামের ছেলে।
পাঁচবিবি থানা পুলিশেরর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুনসুর রহমান বলেন, অপহরণ, মুক্তিপণ আদায়, মাদক কারবার, ছিনতাইসহ প্রায় এক ডজন মামলার পলাতক আসামি ছিলেন নিহত আমিনুল ইসলাম ক্যাসেট। রাতে একই উপজেলার ভুতগাড়ী গ্রামে ক্যাসেটসহ তার দলবল নতুন করে অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়ের উদ্দেশ্যে একত্রিত হচ্ছিলেন। খবর পেয়ে পুলিশের টহল দল ঘটনাস্থলে যায়। এ সময় পুলিশকে লক্ষ্য করে তারা গুলি ছুড়লে পুলিশও পাল্টা গুলি ছোড়ে। এতে অন্যরা পালিয়ে গেলেও ক্যাসেট গুলিবিব্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই নিহত হন। এ সময় দুই পুলিশ সদস্যও আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে একটি বিদেশি পিস্তল ও সাত রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন