শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

পীরগাছায় নির্মম নির্যাতনের শিকার নববধূ

যৌতুকের জন্য নববধূ’র হাত-পায়ের রগ কেটে দিলেন স্বামী

পীরগাছা (রংপুর) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৭ অক্টোবর, ২০১৯, ৪:৫৮ পিএম

রংপুরের পীরগাছায় বিয়ের ৩৬ দিনের মাথায় যৌতুকের দাবিতে নববধূকে নির্মম ভাবে নির্যাতন করে হাত-পায়ের রগ কেটে দিয়েছে নিষ্ঠুর স্বামী ও তার স্বজনরা। এরপর দু’দিন ধরে বাড়িতে ওই নববধূকে আটকে রাখার পর গতকাল রবিবার সকালে পীরগাছা থানা পুলিশ উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে। এ ঘটনায় পীরগাছা থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
জানা গেছে, উপজেলার ছাওলা ইউনিয়নের রতনপুর গ্রামের মুনছুর আলীর ছেলে শাহজাদা মিয়ার সাথে গত ২০ সেপ্টেম্বর পার্শ^বর্তী তাম্বুলপুর ইউনিয়নের ঘগোয়া (সরদারপাড়া) গ্রামের ফজলুল হকের মেয়ে শিউলি বেগমের বিয়ে হয়। এসময় ফজলুল হক নগদ ৮৫ হাজার টাকা ও স্বর্ণালংকার মেয়ে জামাইকে দেন। মেয়ের বিয়ের মেহেদীর রং মুছতে না মুছতেই জামাতা শাহজাদা মিয়া আরো ২ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে এবং নববধূকে নির্যাতন করতে থাকে। এরই এক পর্যায়ে গত ২৬ অক্টোবর সন্ধ্যায় যৌতুক নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া সৃষ্টি হলে স্বামী শাহজাদা মিয়া নববধূ শিউলি বেগমকে শারীরিক নির্যাতন শুরু করেন। এসময় শাহাজাদা মিয়ার স্বজনরা যোগ দিয়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় নববধূর হাত পায়ের রগ কেটে দেন। এসময় প্রতিবেশিরা এগিয়ে আসলে তাঁরা অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে তাড়িয়ে দেন। পরে রাতে স্থানীয় এক হাতুড়ে ডাক্তার দ্বারা নববধূর পায়ে ৫টি এবং হাতে ১৫টি সেলাই দিয়ে বাড়িতে আটকে রাখে। এ সংবাদ পেয়ে মেয়ের মা রহিমা বেগম ও মামী পেয়ারা বেগম ঘটনাস্থলে গেলে শাহাজাদা ও তাঁর স্বজনরা বাড়িতে প্রবেশ করতে বাঁধা দেন এবং ভয়ভীতি দেখিয়ে তাড়িয়ে দেন। পরে গতকাল রবিবার সকালে নববধূর পিতা ফজলুল হক পীরগাছা থানা পুলিশকে বিষয়টি জানান। পীরগাছা থানার এসআই রিয়াজুল ইসলাম সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ওই বাড়ি থেকে নববধূকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে পীরগাছা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
গতকাল রবিবার বিকেলে হাসপাতালে গেলে মেয়ের পিতা ফজলুল হক বলেন, আমার মেয়ের বিয়ের ৩৬ দিনের মাথায় যৌতুকের জন্য হাত-পায়ের রগ কেটে দেয়া হয়েছে।
পীরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডাঃ আল হাদী মোহাম্মদ জানান, মেয়েটির অবস্থা আশংকাজনক। হাতুড়ে ডাক্তার দিয়ে চিকিৎসা করায় সুস্থ হতে অনেক সময় লাগবে।
পীরগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম বলেন, আমি খবর পেয়ে তাকে দ্রুত উদ্ধার করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি। এঘটনায় মেয়ের ভাই শফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন