আইএস প্রধান আবু বকর আল বাগদাদির বিরুদ্ধে চালানো অভিযানের ভিডিও প্রকাশ করেছে পেন্টাগন। মার্কিন সেনারা কী ভাবে ঘিরে ফেলেছিল বাগদাদির আস্তানা এবং কী ভাবে আকাশ পথে হামলা চালানো হয়েছিল, তার মোটামুটি একটা ছবি ধরা পড়েছে বৃহষ্পতিবার প্রকাশিত ওই ভিডিওতে। সেই সঙ্গে বেশ কিছু ছবিও প্রকাশ করা হয়েছে মার্কিন প্রশাসনের পক্ষ থেকে।
মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের পক্ষ থেকে ভিডিওটি প্রকাশ করেন ইউএস সেন্ট্রাল কমান্ডের কমান্ডার কেনেথ ম্যাকেঞ্জি। সংবাদ সম্মেলনে তিনি দাবি করেন, অভিযানের সময় বাগদাদি একটি সুড়ঙ্গে ঢুকে পড়েন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, কুকুরের মতো মরেছে বাগদাদি। তার সঙ্গে তিন ছেলেকে নিয়ে বোমায় নিজেকে উড়িয়ে দেয় সে। কিন্তু ম্যাকেঞ্জি জানান, তিন নয়, দুই ছেলেকে নিয়ে আত্মঘাতী বোমা ফাটায় বাগদাদি। মৃত্যুর আগে বাগদাদি চিৎকার-আর্তনাদ করেছিলেন বলে যে বর্ণনা দিয়েছিলেন ট্রাম্প, পরিস্থিতি যে অতটা নাটকীয় ছিল না, ম্যাকেঞ্জির কথায় সেটি স্পষ্ট হয়েছে।
আকাশ থেকে তোলা ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, উঁচু পাচিলে ঘেরা একটি কম্পাউন্ড। সেটার দিকে ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছে মার্কিন সেনা। ওই আস্তানার আশেপাশে থাকা বেশ কিছু মানুষও দেখা যাচ্ছে। ম্যাকেঞ্জির দাবি, মার্কিন বিমান লক্ষ্য করে গুলি চালানোর চেষ্টা হয়েছিল। এর কিছুক্ষণ পরেই দেখা যায়, উপর থেকে ওই বাড়িটির উপর একের পর এক বোমা আছড়ে পড়ছে। তার পরেই বাড়িটি পুরো কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যায়। একটা সময় আগুন জ্বলতেও দেখা যায় ওই বাড়িটিতে। ভিডিওর পরের অংশে দেখা যায়, উচু পাঁচিল ঘেরা বাড়িটি পুরো ধুলিসাৎ হয়ে গিয়েছে। কোথাও সামান্য নির্মাণও অবশিষ্ট নেই। ফাঁকা জায়গায় কয়েকটি গর্তের মতো। কয়েক জনের আনাগোনাও লক্ষ্য করা যায় ওই ধ্বংসস্তূপে। কিন্তু ভিডিওতে ট্রাম্পের বর্ণনার কোনও ছবি বা প্রমাণ নেই। উপর থেকে বোমা পড়ার পরেই ধ্বংসস্তূপ। মাঝের সময়ের কোনও ছবি বা ভিডিও নেই। অথবা প্রকাশ করা হয়নি। তাই অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, পুরো ভিডিও কেন প্রকাশ করা গেল না। আবার যদি মার্কিন সেনার হাতে না থাকে, তাহলে অভিযানের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে পারে।
বাগদাদি মৃত্যুর বিসয়ে ম্যাকেঞ্জির দাবি, ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার বাগদাদির দেহের অংশ থেকে নমুনা নিয়ে মিলিয়ে দেখা হয় ২০০৪ সালে ইরাকের জেলে বন্দি থাকা বাগদাদির ডিএনএ-র সঙ্গে। তাতেই নিশ্চিত হওয়া গেছে বলে দাবি ম্যাকেঞ্জির। এর আগে বলা হয়েছিল, মার্কিন সেনার হাতে দু’জন আটক হয়েছিল অভিযানে। কিন্তু সে বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলতে চাননি ম্যাকেঞ্জি। তিনি শুধু জানান, বাগদাদি ছাড়াও আরও ছ’জনের মৃত্যু হয়েছে। উদ্ধার হয়েছে বেশ কিছু ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী ও কাগজপত্র। সূত্র: আল-জাজিরা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন