বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

নিষিদ্ধ সময়ে ইলিশ শিকারে চাঁদপুরে ১৯৩ জেলের কারাদণ্ড

৯০ ভাগ মাছ ডিম ছেড়েছে

চাঁদপুর থেকে স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩১ অক্টোবর, ২০১৯, ৫:৪৪ পিএম

প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ শিকারের অপরাধে ১৯৩ জন জেলেকে আটকের পর কারাদ- দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা ৩০ অক্টোবর শেষ হয়েছে। এসময়ের মধ্যে টাস্কফোর্স সদস্যরা নদীতে অভিযান চালালেও অনেক অসাধু জেরালে গোপনে জাল ফেলে মাছ শিকার করেছেন। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ায় বুধবার মধ্যরাত বারোটার পর থেকে ইলিশ শিকার করছেন জেলেরা।
চাঁদপুর জেলা মৎস্য অফিস জানায়, জেলা ও উপজেলা টাস্কফোর্স ৯ অক্টোবর থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত ২৭৭টি অভিযান পরিচালনা করে। এ অভিযানে প্রায় সাত মেট্রিক টন ইলিশ ও ৭৩ লাখ মিটার কারেন্ট জাল জব্দ করা হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হয়েছে ১০০টি। এসব ঘটনায় মামলা হয়েছে ২১১টি। জরিমানা আদায় হয়েছে তিন লাখ ৬০ হাজার টাকা এবং কারাদ- হয়েছে ১৯৩ জন জেলের।
নিষেধাজ্ঞার শেষ সময়ে মতলব উত্তর, হাইমচর, সদর উপজেলার হরিণা, রাজরাজেশ্বর, লক্ষ্মীপুর ইউনিয়ন, আখনের হাট, দোকানঘর, আলুর বাজার, আনন্দ বাজারসহ বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা গেছে নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও মা ইলিশ ধরা এবং বিক্রি চলছে। প্রতি কেজি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৪০০-৫০০ টাকায়। তবে এই সময়ের মধ্যে আইন মেনে অধিকাংশ জেলেই মা ইলিশ ধরেননি।
হাইমচরের জেলে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমরা নিষেধাজ্ঞা মান্য করে চললেও বিভিন্ন স্থানে মাছ শিকার করা হয়েছে। আশা করি, এখন আমরা ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরতে পারবো।
চাঁদপুর সদর উপজেলার বহরিয়া এলাকার জেলে করিম মাঝি বলেন, সরকারি আদেশ মেনেছি। কারণ মা ইলিশ ধরলে ভবিষ্যতে উৎপাদন কমে যাবে।
এদিকে মা ইলিশ রক্ষায় সরকারি নিষেধাজ্ঞা সফল করতে সচেষ্ট ছিল কোস্টগার্ড, নৌ-পুলিশ, জেলা পুলিশ, মৎস্য বিভাগ ও জেলা প্রশাসন। ভবিষ্যতে এ কর্মসূচি আরও সফল করতে জেলেদের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর কথা বলেছেন সংশ্লিষ্টরা।
কোস্টগার্ড চাঁদপুর স্টেশনের চিফ পেটি অফিসার মো. ইছাহাক আলী বলেন, মা ইলিশ রক্ষায় অভিযান চালাতে গিয়ে আমরা বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার শিকার হয়েছি। তবু নিষিদ্ধ সময়ে জেলেদের মাছ ধরা থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করেছি। অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর অভিযান অনেকটাই সফল বলে দাবি করেন তিনি।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আসাদুল বাকী বলেন, জেলা টাস্কফোস কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক নদীতে অবস্থান করেছে। যে কারণে আমাদের ৭০ কিলোমিটার নদী এলাকায় মা ইলিশ প্রজননের ক্ষেত্রে যথেষ্ট সফলতা এসেছে। তিনি আরও বলেন, শতকরা ৯০ ভাগের ওপরে মাছ ডিম ছেড়েছে- এমন মাছ জালে আসছে। আমাদের পরবর্তী বছরগুলোতে ধারাবাহিকভাবে জাতীয় ইলিশ উৎপাদনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করি।
বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের চিফ সায়েন্টিফিক অফিসার ও ইলিশ গবেষক ড. আনিছুর রহমান বলেন, এবারের অভিযান মোটামুটি ভালো হয়েছে। কিছু অসাধু জেলেরা রাতের আঁধারে মাছ ধরেছে। তারপরও আমরা আশাবাদী আগামীতে ইলিশের উৎপাদন ভালো থাকবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন