বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

সরকারের সিন্ডিকেটের কারণে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে -সংবাদ সম্মেলনে রিজভী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১ নভেম্বর, ২০১৯, ২:০০ এএম

সরকারের সিন্ডিকেটের কারনেই পেঁয়াজের দাম অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় এ পণ্যটির দাম সব রেকর্ড ভেঙেছে। খুচরা বাজারে পেঁয়াজের দাম ১৫০ টাকা ছুঁই ছুঁই অবস্থা। দেশি পেঁয়াজ খুচরা বাজারে ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। কোথাও কোথাও ১৫০ টাকাও দাম চাওয়া হচ্ছে। আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজও ১৩০ থেকে ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মিয়ানমার বা মিশর থেকে আনা পিঁয়াজের দামও সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছে আরও আগে। বাজারে প্রতিদিনই দাম বাড়ছে। এক বছরে পণ্যটির দাম বেড়েছে ২০০ শতাংশ। আর এ মাসে বেড়েছে ৬১ শতাংশ। গত ২৯ সেপ্টেম্বর দেশি ও আমদানি করা পেঁয়াজের দাম ছিল কেজি ৬৫ থেকে ৭৫ টাকা। ঠিক এক মাস পর পেঁয়াজের দর হয়েছে কেজি ১০৫ থেকে ১২০ টাকা। পেঁয়াজের দাম এখন শক অব দি কান্ট্রি। দুর্নীতি ও ভুলনীতি সরকারের নীতি হওয়ার কারনে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম আকাশ ছুঁয়েছে। তিনি অবিলম্বে পেঁয়াজের দাম সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে আনার দাবি জানান। 
গতকাল (বৃহস্পতিবার) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। 
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা বিএসএমএমইউ’র (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়) পরিচালককে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে রুহুল কবির রিজভী বলেন, বিএসএমএমইউ’র পরিচালক বলেছেন বেগম জিয়া প্রস্তুত নিতে নিতে ২টা আড়াইটা বেজে যায়, অনেক সময় ৪টা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয় চিকিৎসকদের। আমি পরিচালক সাহেবকে চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলছি-বিকেল ৪টা পর্যন্ত কবে কোন কোন ডাক্তার দেশনেত্রীর চিকিৎসার জন্য অপেক্ষা করেন, তাদের নাম জনগণকে বলুন। 
রিজভী বলেন,পরিচালকের বক্তব্য সত্যের অপলাপ। বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে এটি শুধু ডাহা মিথ্যাচারই নয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর অসুস্থতা নিয়ে একটি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের পরিচালক সরকারের পঙ্কিল রাজনৈতিক আবর্তের মধ্যে ঢুকে পড়বেন এটি কেউ প্রত্যাশা করেনি। প্রধানমন্ত্রীর উৎসাহ ও প্রণোদনায় পিজির পরিচালক সাবেক প্রধানমন্ত্রীর অসুস্থতা নিয়ে অসৌজন্যমূলক বক্তব্য রেখেছেন। নীতি-নৈতিকতা, আদর্শের উপরে কেউ কেউ নিজের ব্যক্তি স্বার্থকে গুরুত্ব দেন। সেনাবাহিনীর একজন উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা এবং চিকিৎসক হিসেবে এই দুটি উচ্চমানের পেশাকে তিনি অবজ্ঞা করেছেন। আমরা খোঁজ নিয়ে জেনেছি, বেগম খালেদা জিয়া প্রতিদিন সকালের দিকেই রেডি হয়ে যান ইনস্যুলিন নিতে, চিকিৎসা নিতে, তিনি চিকিৎসকদের অপেক্ষায় বসে থাকেন কিন্তু চিকিৎসকরা দুপুর ১২টা থেকে ১টার আগে তাঁর কেবিনে আসেন না। 
বিএসএমএমইউ পরিচালক বেগম জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে সরকারের বক্তব্য তোতা পাখির মতো বলছেন অভিযোগ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, তারা বলছেন দেশনেত্রীর সুগার নিয়ন্ত্রণে, আসলে সকালের ফাষ্টিংয়ে সুগার ১১ থেকে ১৪ এর মধ্যে থাকে। তাহলে পরিচালক সাহেব এটিকে কিভাবে নিয়ন্ত্রণ বলছেন। বুধবারও তাঁর সুগার ছিল নিয়ন্ত্রণের বাইরে। দেশনেত্রীর বাই ল্যাটারাল ফ্রোজেন সোল্ডার অর্থাৎ দুটি হাতের সোল্ডার জয়েন্টই ফ্রোজেন হয়ে গেছে। তাঁর রিস্ট জয়েন্ট এবং হাতের স্মল জয়েন্টগুলি বাঁকা হয়ে যাচ্ছে। তিনি হাইলি এক্টিভ ডিফরমিং, রিমেটয়েড আর্থ্রাইটিস, হাইপারটেনশন, অ্যাডহেসিভ ক্যাপসুলাইটিসসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছেন। তিনি জেলখানায় সঠিক চিকিৎসা না পাওয়ায় এবং স্বাভাবিক পরিবেশ না থাকায় এসব রোগ সংক্রান্ত বিভিন্ন জটিলতা দেখা দিয়েছে। এক দুর্বিষহ অসুস্থার মধ্যে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া দিনযাপন করছেন। তাঁর কোন চিকিৎসাই হচ্ছে না। 
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, পরিচালক প্রেস কনফারেন্স করে প্রমান করলেন যে, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া অসুস্থ। পরিচালকের বক্তব্যে মনে হয়েছে পিজিতে বেগম জিয়ার সঠিক চিকিৎসা হবে না। দেশনেত্রীর জীবন নিয়ে যে ছিনিমিনি চলছে সেটি পরিচালকের বক্তব্যের মধ্যেই নিহিত রয়েছে। একটা নীল নকশা অনুযায়ী যে বেগম জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে তাচ্ছিল্য করা হচ্ছে-এটার প্রমান-তিনি বলেছেন জীবন-মৃত্যু নিয়ে আমাদের কিছু করার নেই। এই বক্তব্য বিএনপি নেতাকর্মীসহ দেশবাসীর মধ্যে ভয়াবহ আশংকা ও উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। তিনি অবিলম্বে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন। 
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরিকে সাজানো মিথ্যা মামলায় আদালত তিন বছরের কারাদ- দিয়েছে অভিযোগ করে রিজভী বলেন, মামলায় বলা হয়েছে তিনি প্রধানমন্ত্রীকে হুমকি দিয়ে বক্তব্য দিয়েছেন, তাই তাকে সাজা দেওয়া হয়েছে। জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে গতমাসের শেষ সপ্তাহে চার্জ গঠনের জন্য তারিখ নির্ধারিত ছিল। ঐ তারিখে গিয়াস কাদের চৌধুরী সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন থাকায় সময়ের আবেদন করা হয়। চার্জগঠনের জন্য ১ম তারিখেই সময়ের আবেদন নামঞ্জুর করে ওয়ারেন্ট দেয়া হয় এবং মামলায় চার্জ গঠন করে সাক্ষীর জন্য তারিখ ধার্য রাখা হয়। মাত্র ২০ মিনিটে ৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য নেয়ার পরদিনই রায় প্রচারের জন্য দিন ধার্য রাখা হয়। এটা একটা নজীরবিহীন ঘটনা। বিচারকের এই রায় পূর্বপরিকল্পিত ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। মিথ্যা সাজানো মামলায় আদালতকে ব্যবহার করে সাজা দেওয়ায় আবারো প্রমাণিত হলো-দেশে নাৎসীবাদী শাসন এখন নগ্নরুপে আত্মপ্রকাশ করেছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
ahammad ১ নভেম্বর, ২০১৯, ২:৫৫ এএম says : 0
সরকারের জবাবদিহীতা না থাকা ও নিয়মিত বাজার মনিটরিং না করার কারনেই পিয়াজের এই উধ্বগতি। এইটা বনিজ্য মন্ত্রীরই ব্যার্থতা। বহিবিশ্বে এইধরনের ঘটনা ঘটলে দ্বায় স্বীকার করে অনেক আগেই মন্ত্রী পদত্যাগ করতেন।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন