বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

আত্মহত্যায় রক্ষা সম্ভ্রম!

শেরপুরে অন্তঃসত্ত্বা নারীসহ আরো ৭

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২ নভেম্বর, ২০১৯, ১২:০০ এএম

লালমনিরহাটে আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও ধারণ করে দিনের পর দিন ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে পুলিশ কনস্টেবলের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেছেন ভুক্তভোগী নারী। গফরগাঁওয়ে জেডিসি পরীক্ষার্থীকে অপহরণ করে পালাক্রমে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। মানিকগঞ্জের আটকে কলেজছাত্রীকে ধর্ষণ করেছে স্থানীয় যুবলীগ নেতা । এছাড়া রাজশাহীতে চাকরি দেয়ার কথা বলে তরুণী, নওগাঁয় এক দিনে ২ মাদরাসার শিক্ষার্থী ও ঠাকুরগাঁওয়ে যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে বিধবাকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এদিকে, সাভারের ভার্কুতায় গৃহবধূকে ধর্ষণের অভিযোগে ৬০ বছরের বৃদ্ধসহ বিভিন্ন স্থানে ৫ জনকে আটক করেছে পুলিশ।

লালমনিরহাট : আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও ধারণ করে দিনের পর দিন ধর্ষণের অভিযোগে পুলিশ কনস্টেবলের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেছেন লালমনিরহাটের এক নারী। এ অভিযোগে ওই পুলিশ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে আল আমিন নামে ওই পুলিশ সদস্যকে গ্রেফতার দেখিয়ে লালমনিরহাট চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। আদালত তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সাল থেকে ওই নারীর সঙ্গে পরকীয়া প্রেমে জড়ান আল আমিন। অন্তরঙ্গ মুহ‚র্তের স্থির ও ভিডিওচিত্র ধারণ করে ওই নারীকে ধর্ষণ করে আসছিলেন তিনি। একপর্যায়ে বিয়ে করার কথা দিয়ে ২০১৮ সালের ডিসেম্বর স্বামীকে তালাক দিতে বাদীকে বাধ্য করেন অভিযুক্ত পুলিশ কনস্টেবল। কিন্তু দীর্ঘদিন পেরিয়ে গেলেও বিয়ে করতে টালবাহানা শুরু করলে বিষয়টি পুলিশকে জানান ওই নারী। অভিযুক্ত পুলিশ কনস্টেবল মো. আল আমিনের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোনও কথা বলতে রাজি হননি। লালমনিরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজ আলম বলেন, বাদীর লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে কনস্টেবল আল আমিনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

গফরগাঁও (ময়মনসিংহ) : ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার কলুরগাঁও গ্রামের এক দিনমজুর কন্যা জেডিসি পরীক্ষার্থীকে (১৩) অপহরণ করে পালাক্রমে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ধর্ষণের পর অচেতন অবস্থায় গতকাল শুক্রবার ভোরে উপজেলার দাইরগাঁও মাদরাসার সামনে ফেলে রেখে যায় অপহরণকারীরা। এর আগে গত ০৬ অক্টোবর ওই ছাত্রীকে তার বাড়ি থেকে অপহরণ করা হয়।

জানা গেছে, ঢাকা, ময়মনসিংহসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ওই ছাত্রীকে আটকে রেখে পালাক্রমে ধর্ষণ করে দুই সন্তানের জনক বিপ্লব মেকার (৪৪), দুই সন্তানের জনক ওয়াশির খাঁ (২৬) ও দুই সন্তানের জনক শারফুল শেখ (২৫)।
এ ব্যাপারে ভুক্তভোগীর পিতা বলেন, ‘আমি অসহায়, টাকা পয়সা নাই। আমার মেয়ের ধর্ষণের বিচার চাই। এদের নামে আগেও নারী নির্যাতনের মামলা আছে। এরা প্রভাবশালী, এদের কেউ কিছু করতে পারে না। পাগলা থানার ওসি মো. শাহিনুজ্জামান বলেন, এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি এবং জড়িতদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। ভুক্তভোগীর ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
নওগাঁ : একই দিনে নওগাঁর ধামইরহাট উপজেলার পৃথক গ্রামে দুই মাদরাসার শিক্ষার্থী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। ধর্ষণের অভিযোগে দুই যুবককে আটক করেছে পুলিশ। আটকরা হলেন- উপজেলার বড়থা গ্রামের আব্দুস ছাত্তারের ছেলে হেলাল হোসেন (২৫) ও বৈদ্যবাটি এলাকার সাবের আলীর ছেলে মাহফুজুর রহমান (২৮)।

ধামইরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাকিরুল ইসলাম জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে মাদরাসা ছুটির পরে বাড়ি ফেরার পথে বড়থা-কাজিপুর গ্রামের ধান খেতের মাঠে সপ্তম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে হেলাল জোরপ‚র্বক ধর্ষণ করে। এ সময় মেয়েটির চিৎকারে কৃষকরা এগিয়ে এলে ধর্ষক পালিয়ে যায়। পরে মেয়েটি তার পরিবারকে বিষয়টি জানালে তারা পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ স্থানীয়দের সহযোগিতায় ধর্ষক হেলালকে আটক করে।
এদিকে, একইদিন উপজেলার অন্য একটি গ্রামে নবম শ্রেণীর মাদরাসার ছাত্রীকে একা পেয়ে মাহফুজুর রহমান প্রতিবেশীর বাড়িতে কৌশলে ডেকে নিয়ে জোরপ‚র্বক ধর্ষণ করে। মেয়েটির চিৎকারে স্থানীয়রা ধর্ষক মাহফুজুর রহমানকে হাতেনাতে আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে।
ঠাকুরগাঁও : ঠাকুরগাঁওয়ে বিধবা নারীকে ধর্ষণ চেষ্টার দায়ে সদর থানায় যুবলীগ নেতা সোহেল রানার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার ভ‚ক্তভোগী নারী সোহেল রানার বিরুদ্ধে ঠাকুরগাঁও সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

স্থানীয়রা জানায়, ঠাকুরগাঁও শহরের জেলা শিল্পকলা একাডেমির সম্মুখে ডিসি বস্তির বাসিন্দা মৃত তসলিম উদ্দিনের ছেলে ঠাকুরগাঁও পৌর যুবলীগের প্রভাবশালী নেতা সোহেল রানা দীর্ঘদিন যাবত এলাকার নারীদের উত্যক্ত করে আসছে। গত সোমবার দিবাগত রাত একটার দিকে একই এলাকার এক ঘরে অনুমতি ছাড়াই প্রবেশ করে। এসময় সেই নারীকে জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা করে।
অভিযুক্ত যুবলীগ নেতা সোহেল রানার কাছে ঘটনার বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার সম্মানহানি করার জন্য একটি মহল নানা রকম কথা ছড়াচ্ছেন। পৌর যুবলীগের আহ্বায়ক আমির হোসেন রুবেলের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, জেলা যুবলীগ ও পৌর যুবলীগ বরাবর এক মহিলা সোহেলের বিরুদ্ধে ধর্ষণের চেষ্টার এক লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। সোহেলকে ইতিমধ্যে সংগঠনের নিয়ম অনুযায়ী সাত দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রেরণ করা হয়েছে।

মানিকগঞ্জ : মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার একটি হোটেলে অনৈতিক কাজের সময় পুলিশের হাতে গ্রেফতার যুবলীগ নেতা কাউসার আহমেদকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে তাকে আদালতে নেয়া হলে জামিন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক। এ ঘটনায় কাউসারকে দল থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।
উপজেলার মহাদেব ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক কাউসারের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে বুধবার রাতে মামলা করেছেন এক কলেজছাত্রী। শিবালয় থানা পুলিশের ওসি মিজানুর রহমান বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বুধবার দুপুরে পাটুরিয়া ঘাটের পদ্মা রিভারভিউ আবাসিক হোটেলের ৯০৩ নম্বর রুম থেকে অনৈতিক কাজে লিপ্ত থাকার সময় কলেজছাত্রীসহ কাউসার আহম্মেদকে গ্রেফতার করা হয়। রাতে ওই কলেজছাত্রী ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেছেন। গত বৃহস্পতিবার দুপরে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভিকটিমের ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়। এরপর আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন কলেজছাত্রী। কাউসারকে আদালতে তোলা হলে বিচারক জামিন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠান।

রাজশাহী : চাকরি দেয়ার কথা বলে রাজশাহীর তানোর উপজেলা থেকে এক তরুণীকে (২৫) শহরে এনে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পাশের গ্রামের দুই তরুণের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ। এ নিয়ে ওই তরুণীর বাবা গত বৃহস্পতিবার রাতে নগরীর রাজপাড়া থানায় মামলা করেছেন।
মামলার আসামিরা হলেন- সজিব রায়হান ও পলাশ আলী। তানোর উপজেলার শংকরপুর গ্রামে তাদের বাড়ি। এদের মধ্যে সজিবকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। নির্যাতনের শিকার ওই তরুণীর শারীরিক পরীক্ষাও করা হয়েছে।

সাভার (ঢাকা) : সাভারের ভার্কুতায় এক গৃহবধূকে ধর্ষণের ঘটনায় ৬০ বছরের এক বৃদ্ধকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ভার্কুতার মুগদাকান্দা এলাকা থেকে রফিকুল ইসলাম নামে ওই বৃদ্ধকে গ্রেফতার করা হয়। গতকাল সকালে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ধর্ষণের শিকার গৃহবধূকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় সাভার মডেল থানায় মামলা করেছেন গৃহবধূ। গ্রেফতার রফিকুল ইসলাম সাভারের ভাকুর্তা ইউনিয়নের মুগদাকান্দা গ্রামের বাসিন্দা। সাভার মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএফএম সায়েদ বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে গৃহবধূর ঘরে ঢুকে ধর্ষণ করে প্রতিবেশী রফিকুল। ওই গৃহবধূ মামলা করলে অভিযান চালিয়ে রফিকুলকে গ্রেফতার করা হয়।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (6)
মোহাম্মদ মোশাররফ ২ নভেম্বর, ২০১৯, ১:২৫ এএম says : 0
ইসলামে আত্মহত্যা মহাপাপ ও অত্যন্ত ঘৃণ্য কাজ হওয়া সত্ত্বেও এমন অনেক লোক আছে, যারা জীবনযাপনের কঠিন দুঃখ-দুর্দশা ও ব্যর্থতার গ্লানি থেকে পরিত্রাণের জন্য অথবা জেদের বশবর্তী হয়ে বেছে নেয় আত্মহননের পথ।
Total Reply(0)
সত্য বলবো ২ নভেম্বর, ২০১৯, ১:২৫ এএম says : 0
ধৈর্য ধারণ করে আল্লাহর ওপর ভরসা ও দৃঢ় আস্থা থাকলে কারও আত্মহত্যার মতো ক্লেশকর পথে পা বাড়াতে হয় না।
Total Reply(0)
মিনহাজ উদ্দিন রিমন ২ নভেম্বর, ২০১৯, ১:২৫ এএম says : 0
আত্মহত্যা থেকে বিরত থাকতে আল্লাহ তাআলা বিশেষভাবে নির্দেশ দিয়েছেন এবং আত্মহত্যার পরিণামে কঠোর শাস্তির বর্ণনা দিয়ে পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেছেন, ‘তোমরা নিজেদের হত্যা কোরো না, নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের প্রতি পরম দয়ালু এবং যে কেউ সীমা লঙ্ঘন করে অন্যায়ভাবে তা (আত্মহত্যা) করবে, তাকে অগ্নিতে দগ্ধ করব; এটা আল্লাহর পক্ষে সহজ।’ (সূরা আন-নিসা, আয়াত: ২৯-৩০)
Total Reply(0)
মোঃ তোফায়েল হোসেন ২ নভেম্বর, ২০১৯, ১:২৫ এএম says : 0
আজকাল আত্মহত্যার ঘটনা প্রায়ই সংঘটিত হচ্ছে। বিশেষ করে তরুণ-তরুণীদের মধ্যে এমন প্রবণতা বেশি। বখাটেদের উৎপাতের কারণে কেউ আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছে, আবার মা-বাবার সামান্য বকুনির কারণেও আত্মহননের মতো ঘটনা ঘটছে।
Total Reply(0)
কাজী হাফিজ ২ নভেম্বর, ২০১৯, ১:২৬ এএম says : 0
ইসলামে আত্মহত্যা মহাপাপ জেনেশুনেও যাদের পরিস্থিতি সামলানোর ক্ষমতা দুর্বল, তারাই ধ্বংসাত্মক ও মর্মান্তিক ভ্রান্ত পথে পা বাড়ায়। তরুণ প্রজন্মকে ধ্বংস নয়, সৃষ্টির পথে এগিয়ে যেতে হবে।
Total Reply(0)
মোহাম্মদ মোশাররফ ২ নভেম্বর, ২০১৯, ১:২৬ এএম says : 0
মুসলিম পরিবার ও সমাজজীবনে আত্মহত্যার মতো মহাপাপ থেকে সর্বস্তরের নর-নারী ও সন্তানসন্ততির বেঁচে থাকার জন্য ইসলামের বিধিবিধান ও ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলাই সর্বোত্তম পন্থা।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন