নগরীতে অস্ত্রসহ সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের এগারো জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আজ (শনিবার) কোতোয়ালী থানার টাইগার পাস মোড় থেকে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে। তাদের কাছ থেকে দুটি দেশীয় এলজি, দুটি কার্তুজ, দুটি টিপ ছোরা, ছয়টি কিরিচ উদ্ধার এবং একটি পিকআপ ও একটি প্রাইভেট কার জব্দ করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলো- মো. সালাহউদ্দিন (২৪), মো. রাজু (১৯), ইসরাফিল হোসেন আলম (২২), আকবর হোসেন (২২), মো. সেলিম (২৮), মো. টিটু (২৫), মো. ইয়াসিন (২৩), ফজর আলী (৩৫), মো. সুমন (২৫), মো. রহিম (২২) এবং পলাশ হোসেন (২৫)।
পুলিশ জানায়, গ্রেফতারকৃত এগারো যুবক পেশাদার অপরাধী। সড়ক-মহাসড়কে ছিনতাই-ডাকাতি, লোকজনকে জিম্মি করে টাকা আদায়সহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধের সঙ্গে এরা জড়িত। অপরাধ সংঘটন করে চট্টগ্রামের সীতাকুÐ এলাকার দুর্গম পাহাড়ের গুহায় ওদের ডেরায় (আস্তানা) লুকিয়ে থাকতো। আজ নগরীর মোমিন রোডে মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) এর কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযানের বিস্তারিত জানানো হয়।
নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) এস এম মেহেদী হাসান বলেন, এদের দলনেতা মো. সালাউদ্দিন আড়াই বছর জেলে ছিল। এরপর দুই মাস আগে বেরিয়ে আবার ডাকাতির কাজে জড়িয়ে পড়ে। চট্টগ্রাম নগরী, সীতাকুÐ ও মীরসরাই উপজেলা, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক, ফেনী, কুমিল্লা, লাকসাম ও নোয়াখালী এলাকায় এরা ডাকাতি করে। ডাকাতি শেষে সীতাকুÐের পাহাড়ের গুহায় চলে যায়। যে কারণে তাদের সন্ধান পাওয়া যেত না। দুই মাস আগে গ্রেফতার অন্য একটি ডাকাত দলের কাছে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এ ডাকাত দলটিকে অনুসরণ করছিল পুলিশ।
পুলিশ কর্মকর্তা মেহেদী হাসান বলেন, গত চার-পাঁচ বছরে তারা ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের প্রায় দুইশ ঘটনার সাথে জড়িত বলে জানিয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মীরসরাই ও আকবর শাহ থানায় মামলা আছে। অন্য থানাগুলোতেও মামলা আছে কি না খোঁজ নেয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, এরা গাড়ি নিয়ে মহাসড়কে ঘুরতো। চলন্ত বাস দাঁড় করিয়ে ডাকাতি করার কথাও জানিয়েছে। ডাকাত দলের সব সদস্যই নগরীর আকবর শাহ থানা এবং নগরীর উপকণ্ঠের সীতাকুÐ উপজেলার বাসিন্দা।
অভিযানে নেতৃত্ব দেয়া কোতোয়ালি থানার ওসি মো. মহসিন জানান, নগরীতে মধ্যরাত থেকে ভোর পর্যন্ত তারা দল বেঁধে ছিনতাইও করতো। ভোরের দিকে বাস ও ট্রেনে নগরীতে আসা যাত্রীরা ছিল তাদের লক্ষ্যবস্তু। যাত্রীদের রিকশা বা সিএনজিচালিত অটোরিকশা আটকে ছোরার ভয় দেখিয়ে সব ছিনিয়ে নিত। কারও কাছে পাসপোর্ট পেলে ছিনিয়ে নিয়ে পরে বিকাশ নম্বরের মাধ্যমে টাকা আদায় করত। অধিকাংশ সময়ই টাকা আদায়ের পর পাসপোর্ট ও মূল্যবান কাগজপত্র ফেরত দিত না।
কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. কামরুজ্জামান বলেন, গত ১৪ অক্টোবর ও ১৯ অক্টোবর কোতোয়ালি থানা এলাকায় তারা দু’টি ছিনতাই সংঘটিত করে। জাহাজের তিন জন নাবিককে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে তাদের জাহাজে ওঠার কাগজপত্র, লাইসেন্স ছিনতাই করে। পরে আবার সেগুলো ফেরত দেয়ার জন্য টাকা দাবি করে। এসব ঘটনা জানার পর তাদের গ্রেফতারে আমরা জোরদার অভিযান শুরু করি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার শাহ মো. আব্দুর রউফ ও পংকজ বড়ুয়া, কোতোয়ালি জোনের সহকারী কমিশনার নোবেল চাকমা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন