বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ইসলামী বিশ্ব

অন্ধত্ব জয় করে কুরআনের হাফেজা হলেন তুর্কি নারী যায়নাব ইসরা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩ নভেম্বর, ২০১৯, ১২:১৯ পিএম

জন্মগত দৃষ্টি প্রতিবন্ধী যায়নাব ইসরা। ৩১ বছর বয়সী তুর্কি নারী। তুরস্কের হাতায় প্রদেশের মধ্যবিত্ত এক পরিবারে তার জন্ম। শৈশবে যায়নাবের একাডেমিক পড়াশোনার সুযোগ হয়নি। অন্ধ হওয়ায় ঘরে বসেই জীবন অতিক্রম করতে হয় তার। এসময় বাড়ির অন্যান্যদের থেকে খুব আগ্রহ নিয়ে কুরআনে কারীমের তেলাওয়াত শুনতেন তিনি। এভাবে কুরআনের কিছুকিছু অংশ মুখস্থও করতে সমর্থ হন যায়নব।
পরিবারের মানুষ কুরআনের প্রতি যায়নবের আলাদা টান ও আকর্ষণ উপলব্ধি করলেন। তারা সিদ্ধান্ত নিলেন যয়নবকে একটি মাদরাসায় ভর্তি করবেন। গত সপ্তাহে তুরস্কের রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যম আনাদুলু এজেন্সি প্রকাশ করেছে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী যায়নাবের হাফেজা হওয়ার অসামান্য কীর্তিগাঁথা। আনাদুলুর সাক্ষাৎকারে যায়নাব বলেন-
‘শৈশবে যখন বাড়িতে সময় কাটাতাম তখনই আমি কুরআনের তেলাওয়াত শুনতে খুব পছন্দ করতাম। আমার মনে দুর্দান্ত আকর্ষণ ছিল সম্পূর্ণ কুরআনে কারীম হিফজ করার কিন্তু দৃষ্টি প্রতিবন্ধী হওয়াতে সেটি সম্ভব হচ্ছিলো না। ২০১৬ সাল পর্যন্ত ঘরের চৌহদ্দিতেই আমার জীবন কেটেছে। আমি বড়দের তেলাওয়াত শুনতাম অত্যন্ত আগ্রহভরে এবং মনোযোগের সঙ্গে। অবিভাবকরা আমার মধ্যে কুরআনের প্রতি অসীম ভালোলাগার ব্যাপারটি অনুভব করলেন এবং সিদ্ধান্ত নিলেন আমাকে মাদরাসায় ভর্তি করাবেন’।
‘চার বছর আগে তারা আমাকে একটি মেয়েদের মাদরাসায় নিয়ে গেলেন সেখানে ভর্তি করার উদ্দেশ্যে। আমি ওই মাদরাসার হিফজ বিভাগে ভর্তি হলাম। আর এক্ষেত্রে আমাকে সহযোগিতা করলেন মাদরাসার একজন শিক্ষক। ২০১৭ সালে আমি প্রতিষ্ঠানিকভাবে কুরআনে কারীম মুখস্থ করা শুরু করি, তবে আশানুরূপ উন্নতি হচ্ছিলো না পড়াশোনায়। ভর্তির সময় যিনি আমাকে সাহায্য করেছিলেন সেই শিক্ষক সবসময় আমার খেয়াল রাখতেন। তিনি আমার হিফজের অগ্রগতির জন্য দারুণ একটি কৌশলের আশ্রয় নিলেন; আমাকে কিনে দিলেন একটি টেপরেকর্ডার ও এয়ারফোন’।
মাদরাসায় এবং বাড়িতে সব জায়গায় আমি রাতদিন টেপরেকর্ডার চালু করে তেলাওয়াত শুনতাম। এভাবে আমার দারুণ উন্নতি হচ্ছিলো। আলহামদুলিল্লাহ! টেপরেকর্ডারের কল্যাণেই অল্প সময়ে মাত্র আড়াই বছরে আমি সম্পূর্ণ কুরআনে কারীম মুখস্থ করে হাফেজা হওয়ার গৌরব অর্জন করতে সমর্থ হই। তবে আমার এই সাফল্যের পিছনের মূল কারণ টেপরেকর্ডার নয়; বরং কুরআনে কারীমের প্রতি অসামান্য ভালবাসা ও মনের মধ্যে সুপ্ত থাকা হাফেজা হওয়ার দুর্দান্ত আকাঙ্খা। আমার জন্য যারা অনেক কষ্ট করেছেন পরিবার এবং আমার প্রিয় শিক্ষক তাদের সবাইকে আমার অন্তরের অন্তস্তল থেকে শুকরান অফুরান।
আনাদুলুর মাধ্যমে আমি সবার প্রতি আহবান জানাই, আপনাদের উচিত দৃষ্টিশক্তির জন্য সবসময় আল্লাহর কৃতজ্ঞতা আদায় করা। কেননা, এটি মহান রবের পক্ষ থেকে বান্দার প্রতি বিশেষ নেয়ামত। আমি জন্মগতভাবে অন্ধ হয়েও হাফেজা হয়েছি, আর এটা আপনাদের জন্য আরও সহজ বিষয়। আপনারা কুরআন পড়ুন এবং অন্তরে কুরআনের প্রতি মুহাব্বাত সৃষ্টি করুন। হাফেজ হয়ে সুস্থতা প্রাপ্তির নেয়ামত স্বরূপ আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা আদায় করুন। কুরআনে কারীমের হাফেজ হওয়া প্রষ্টার পক্ষ থেকে সৃষ্টির প্রতি বিরাট বড় পুরস্কার!

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (4)
মোঃ আককাছ আলি মোল্লা ৩ নভেম্বর, ২০১৯, ১২:৪৯ পিএম says : 0
আলহামদুলিল্লাহ।মায়ের জন্য শুভকামনা
Total Reply(0)
মজলুম জনতা ৩ নভেম্বর, ২০১৯, ১:০৩ পিএম says : 0
আল্লাহর অসেষ মেহেবান।দয়ালু দাতা।তার রহমাত এ ভাবে বান্দার উপর বর্ষিত হয়।যুগে যুগে হয়েছে ।আজ ও হয়।ভবিস্যাতেও হবে।আপনাকে আললাহ অনেক রহমত দান করুন।।আমিন।।
Total Reply(0)
jack ali ৩ নভেম্বর, ২০১৯, ৪:২৩ পিএম says : 0
Allah [SWT] mentioned in the Qur'an that we are Dumb/Deft and Blind-------even we are worse than four footed animal----We the muslims are millions millions miles away from Qur'an....as such all the calamities we are facing every corner in the world.
Total Reply(0)
Md. Humyun Kabir ৮ নভেম্বর, ২০১৯, ১১:২৯ এএম says : 0
Very very fine.
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন