শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

বিশ্বমানের নাগরিক গড়ে তুলতে কঠোর নীতি ঘোষণা চীনের

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৬ নভেম্বর, ২০১৯, ৩:৫৭ পিএম

স্বভাব-চরিত্রে নম্র, ভদ্র ও সৎ হতে হবে। সভ্য হতে হবে খাওয়া-দাওয়া, চলা-ফেরায়। সর্বোপরি চিন্তা-চেতনায় হতে হবে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের মতো। বিশ্ব দরবারে চীনের মান-মর্যাদা আরও শক্ত করতে হবে।

নাগরিকদের বিশ্বমানের করে গড়ে তুলতে সম্প্রতি এমনই একটি দূরদর্শী আচরণবিধি জারি করেছে চীন। গত সপ্তাহে দেশের ৭০তম স্বাধীনতা দিবস (৩১ অক্টোবর) উপলক্ষে কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির চতুর্থ প্লেনামে এই বিধিগুলো প্রকাশ করা হয়।

বেইজিংয়ের কেন্দ্রীয় কমিটির উচ্চপদস্থরা এদিন ‘আউটলাইন ফর ইমপ্লিমেনটিং দ্য মোরাল কনস্ট্রাকশন অব সিটিজেনস ইন দ্য নিউ এরা’ তথা ‘নতুন যুগের নাগরিকদের নৈতিকতা নির্মাণ নির্দেশিকা’ শিরোনামে একটি রূপরেখা প্রকাশ করেন।

বিয়ের বাজেট থেকে শুরু করে দৈনন্দিন পোশাক পরিধানের বিধান- কি নেই সেখানে। সব মিলিয়ে মোট ৫৮টি নীতিমালা।
এককথায়, বিশ্ব শাসনের দরজায় পা ফেলা চীন এখন নাগরিকদের বিশ্বমানের করতে চাইছে। আরও নীতিবান করতে চাইছে। বিশ্ব নাগরিকের বীজ বুনতে চাইছে রাষ্ট্রের প্রতিটি জনপদে।

দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, জীবনের সর্বক্ষেত্রে চীনা নাগরিকদের ‘মডেল’ হিসেবে গড়ে তোলার ওপর জোর দেয়া হয়েছে ওই নীতিমালায়। পাশাপাশি দেশের অগ্রগতি ও ভবিষ্যৎ সুনিশ্চিত করতে ওই রূপরেখাগুলোর বাস্তবায়নের পক্ষে উপায়ও বাতলানো হয়েছে ওই নির্দেশিকায়।

একজন নাগরিক কতক্ষণ ইন্টারনেট ব্যবহার করবে, কীভাবে তার সন্তানদের বড় করে তুলবে, সরকারি ছুটি উদযাপন এমনকি বিদেশ ভ্রমণ করার সময় কেমন আচরণ করবে সেই বিষয়েও নির্দিষ্ট নির্দেশনা দেয়া রয়েছে সেখানে।

এ প্রসঙ্গে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যতম সদস্য জাং জিয়ং সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই তরুণদের সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য বৈবাহিক শিক্ষার ওপর বিশেষ নজর দিতে হবে।

পাশাপাশি সমাজের সামগ্রিক উন্নতি ও সচেতনতার প্রসারের জন্য যুব কমিউনিস্ট লিগ, মহিলা ফেডারেশন এবং অন্য বামপন্থী সংগঠনগুলোকে সম্পূর্ণরূপে কাজে লাগাতে হবে।’

একই সঙ্গে চীন সরকারের পক্ষ থেকে দেশের সাংস্কৃতিক ও নৈতিক অগ্রগতির জন্য বেশ কিছু দিকনির্দেশনাও দেখা যায় ওই সরকারি রূপরেখায়। পাশাপাশি ‘চীনা চেতনা, মূল্যবোধ এবং শক্তি’ পুনরুজ্জীবিত করার জন্য সব দেশবাসীকে আহ্বান জানানো হয়েছে।

জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার সময় সঠিক শিষ্টাচার অনুসরণের কথাও বলা হয়েছে শি জিনপিং সরকারের ওই নির্দেশিকায়। একইসঙ্গে নাগরিকদের সঠিক মূল্যবোধ তৈরির জন্য ইন্টারনেটে অশ্লীল ভিডিও ও পর্নোগ্রাফি এড়িয়ে চলারও পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
একটি জাতির সামগ্রিক মানোন্নয়নের জন্য দেশের গ্রন্থাগার এবং যুব কেন্দ্রগুলোর মতো সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর অবশ্যই একটি সঠিক নৈতিক শিক্ষানীতি অনুসরণ করা উচিত বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।

একইসঙ্গে দেশপ্রেম এবং সরকারের প্রতি আনুগত্যের ওপরও বিশেষ জোর দেয়া হয়েছে। যদিও দেশের সংবাদপত্রের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ থেকে শুরু এক শিশু নীতির জন্য বিশ্বের দরবারে একাধিকবার সমালোচনার মুখে পড়েছে চীনের কমিউনিস্ট সরকার।
এখন দেশের নাগরিকদের নৈতিক মানোন্নয়নের ক্ষেত্রে এই নতুন সরকারি নীতিমালা কতটা কাজে দেয় তা সময়ই বলবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন