শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হয়েছে, তবে কুশীলবদের বিচার হয়নি: তথ্যমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৭ নভেম্বর, ২০১৯, ৪:৩৭ পিএম

“বিপ্লব ও সংহতি দিবস পালনের কোনও যৌক্তিকতা আমি দেখি না। বরং ৭ নভেম্বরের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে বিচারের মুখোমুখি করতে একটি ‘স্বাধীন কমিশন’ গঠন করা প্রয়োজন। প্রকৃতপক্ষে ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর যা ঘটেছিল তা হলো হত্যাকাণ্ড। সেদিন আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার, উপসেক্টর কমান্ডারসহ অনেককে হত্যার করা হয়েছে। খালেদ মোশাররফকে হত্যার করা হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশ টেলিভিশনের তিন কর্মকর্তাকেও হত্যা করা হয়। তাই এটা আসলে বিপ্লবতো নয়ই, সৈনিক হত্যার মিশন। তাই বিপ্লব ও সংহতি দিবস হিসেবে দিনটি পালন করার কোনও যৌক্তিকতা আমি দেখি না।’-তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এসব কথা বলেছেন।

বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলানায়তনে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের বার্ষিক ক্রিড়া প্রতিযোগিতার উদ্বোধন শেষে এসব কথা বলেন মন্ত্রী।

তিনি আরও বলেন, আমি মনে করি, বাংলাদেশে ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গঠনের জন্য সব হত্যার বিচার হওয়া প্রয়োজন। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার হচ্ছে। বিচারের রায় কার্যকর হয়েছে। বিচার চলছে। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। ৩ নভেম্বর জাতীয় চার নেতা হত্যার হত্যার বিচার হয়েছে। ৭ নভেম্বর অনেককে হত্যা করা হয়েছে, তাদের সবার বিচার হয়নি। ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য এসব হত্যাকাণ্ডের বিচার হওয়া প্রয়োজন।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হয়েছে, তবে কুশীলবদের বিচার হয়নি। তেমনি ৩ নভেম্বরের অনেকের বিচার হলেও সংশ্লিষ্ট অনেকের বিচার হয়নি। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি ৭ নভেম্বর হত্যাকাণ্ডের বিচারের জন্য একটি কমিশন গঠন করে সত্য উদঘাটন করা প্রয়োজন। পাশাপাশি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সবার বিচার হওয়া উচিত। ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ড, ৩ নভেম্বর এবং ৭ নভেম্বরের হত্যাকাণ্ড একই ধারাবিহকতায় হয়েছে।’

ক্র্যাবের বার্ষিক ক্রিড়া প্রতিযোগিতার উদ্বোধনের আগে প্রধান অতিথির বক্তব্যে হাছান মাহমুদ আরও বলেন, ‘অনেকেই ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়ন করে না, অথচ টিএফপি থেকে রেট কার্ড নেয়। মন্ত্রী হয়ে আমি দেখেছি এমনও পত্রিকা আছে, যার ঢাকায় সার্কুলেশন এক হাজার, সারাদেশে পাঁচ হাজার। অথচ সুবিধা নেওয়ার জন্য ঘোষণা দেয় দেড়লাখ। এসব বন্ধ করে তাদের শৃঙ্খলায় আনা হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘পত্রিকাগুলো আমাদের কাছে সার্কুলেশনের এক হিসাব দেয়, ট্যাক্স অফিসে আরেক হিসাব দেয়। সরকারি দুই দফতরের দুই হিসাব চলবে না। তাদের নজরদারি ও শৃঙ্খলায় আনা হবে।’

মন্ত্রী বলেন, টেলিভিশনের বিদেশি বিজ্ঞাপন নিয়ে ঝামেলা ঠিক করছি। এছাড়া ক্যাবল অপারেটররা বাংলাদেশি চ্যানেলগুলোকে সিরিয়ালে দূরে রাখতো। আমরা ১-৪ এর মধ্যে বাংলাদেশ টেলিভিশনের চ্যানেলগুলো ও পরে বেসরকারি চ্যানেলের সিরিয়াল করিয়েছি। তাদের যেভাবে শৃঙ্খলায় আনা হয়েছে, একইভাবে পত্রিকাগুলোকেও শৃঙ্খলায় আনা হবে।’

বন্ড সুবিধায় শুল্কমুক্তভাবে পণ্য আমদানির নাম করে যারা বাজারে পণ্য বিক্রি করছে তাদের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশের অনুরোধ জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, একসময় বেসরকারিভাবে বন্ডেড ওয়্যারহাউজের অনুমোদন ছিল না। সরকার তাদের অনুমতি দিয়েছে। তবে তাদের পণ্য বাজারে চলে আসে, এতে সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে। যেখানে যেখানে সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে আপনারা সে সব সেক্টর ধরে রিপোর্ট করুন। তাহলে কোথায় সমস্যা হচ্ছে তা চিহ্নিত করতে আমাদের সুবিধা হবে।’

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ক্র্যাবের সভাপতি আবুল খায়ের, সাধারণ সম্পাদক দীপু সারোয়ার, সহ-সভাপতি মিজান মালিক, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক জিএম তসলিম উদ্দিন, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদ।

অনুষ্ঠানে ক্র্যাবের সভাপতি আবুল খায়ের বলেন, ক্রাইম রিপোর্টাররা অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে কাজ করেন। সাধারণত যারা রিপোর্ট করেন, প্রতিটি রিপোর্ট কারো পক্ষে ও কারো বিপক্ষে যায়। যাদের বিপক্ষে যায় তারা মামলা দিয়ে সাংবাদিকদের হয়রানি করেন। হয়রানির মামলা এড়াতে তথ্যমন্ত্রীকে দৃষ্টি দেওয়ার অনুরোধ জানান তিনি।

এছাড়াও সাংবাদিকতা পেশায় অরাজকতা বন্ধে ও ৯ম ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়নে তথ্যমন্ত্রীকে নজরদারির অনুরোধ জানান ক্র্যাব সভাপতি।

বক্তব্য শেষে তথ্যমন্ত্রী দাবা খেলে বার্ষিক ক্রিড়া প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন