বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

লড়াইয়ের তাড়না নিয়ে নাগপুরে বাংলাদেশ

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৯ নভেম্বর, ২০১৯, ১২:০১ এএম

দিল্লিতে দাপুটে জয়ে ভারতকে হারিয়ে তাগিদ নিয়েই রাজকোটে এসেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু এখানে জেতা তো দূরে থাক, ন্যূনতম লড়াই আসেনি মাহমুদউল্লাহদের কাছ থেকে। ১৫৩ রানের পুঁজি নিয়ে লড়াই করার কথা নয়, হয়নিও। রোহিত ৪৩ বলে ৮৫ রানের তা-ব তুলে দেখিয়ে দিয়েছেন নিখাদ ব্যাটিং উইকেটে দুই দলের তফাৎ। বাংলাদেশ খেলা হেরে যায় এখানেই। যেহেতু উইকেটে গতির তারতম্য হচ্ছে না, বাংলাদেশের বোলারদের করার ছিল সামান্যই। পাটা উইকেটে রোমাঞ্চকর শট খেলার মঞ্চ পেয়ে যান রোহিতরা, টপাটপ রান তুলে দ্রুত দৃশ্যপট থেকে সরিয়ে দেন বাংলাদেশকে। তবে নাগপুরের মাঠে জিতে সিরিজ ঘরে তুলতে চান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদরা। আগামীকাল সিরিজ নির্ধারণী তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে স্বাগতিকদের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ।

দিল্লির উইকেটে ব্যাটে বল আসছিল মন্থর গতিতে। ঠিক উল্টো পরিস্থিতি রাজকোটে। এখানকার উইকেটে বল ব্যাটে আসছিল স্বচ্ছন্দে। হিসাব-নিকাশ করে এগিয়ে ঝড় তোলার জন্য সৌরাষ্ট্র ক্রিকেট স্টেডিয়ামের বাইশ গজ ছিল আদর্শ। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশের শুরুটা ছিল খুবই জুতসই। পাওয়ার প্লের ছয় ওভারে আসে ৫৪। কিন্তু এরপরের চার ওভারে আসে মাত্র ২৪। অর্থাৎ প্রথম দশ ওভারে ৭৮, পরের দশ ওভারে যেখানে আসার কথা কমপক্ষে আরও একশো রান, সেখানে বাংলাদেশ আনতে পেরেছে কেবলই ৭৫ রান।

উইকেট হাতে নিয়েও শেষে ঝড় তোলা যায়নি। শুরুতে টানা তিন চারে শুরু করা ওপেনার নাইম শেখ ডট বলে চাপ বাড়িয়ে ফেরেন ৩১ বলে ৩৬ করে (স্ট্রাইক রেট ১১৬.১৩)। লিটন দাস (২১ বলে ২৯) তার আগেই কাবু হন একাধিক জীবন পেয়েও। তার স্ট্রাইক রেট অবশ্য নাইমের চেয়ে বেশি (১৩৮.১০)। এরপর বলার মতো খেলেছেন কেবল সৌম্য সরকার (২০ বলে ৩০) আর মাহমুদউল্লাহ (২১ বলে ৩০)। দুজনের স্ট্রাইক রেটই চাহিদা মেটানো। কিন্তু ইনিংস টেনে নেওয়ার যে চাহিদা, তা তারা কেউই পূরণ করতে পারেননি। শেষ দিকে ঝড় তোলার বদলে বল নষ্ট করেছেন আফিফ হোসেন (৮ বলে ৬) আর মোসাদ্দেক হোসেন (৯ বলে ৭)। দুজনের অ্যাপ্রোচই ছিল দৃষ্টিকটু। নিখাদ ব্যাটিং উইকেটে আগ্রাসন দেখিয়ে নিজেদের মেলে ধরার সুযোগ তারা নিতে পারেননি।

গত কয়েক বছরে ভারতের বিপক্ষে বেশ কিছু ফাইনালে খেলেছে বাংলাদেশ। এর একটিতেও নেই কোনো সুখস্মৃতি। এবার নাগপুরের ম্যাচটিও হয়ে গেছে অলিখিত ফাইনাল। তবে আগের ম্যাচগুলো নিয়ে না ভেবে নতুন শুরুর দিকে তাকিয়ে বাংলাদেশ অধিনায়ক, ‘ফাইনালের কথা যদি বলি,এটি নতুন একটি দিন থাকবে, নতুন একটি ম্যাচ হবে। আমার মনে হয়, বিগত দিনগুলোতে যা যা হয়েছে, সেসব নিয়ে চিন্তা করে লাভ নেই। যেটা হয়ে গেছে তো গেছেই। আমরা ভিন্ন কিছু কী করতে পারি সেটা, গ্রুপ হিসেবে চিন্তা করা উচিত। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এমন গুরুত্বপূর্ণ সময় আসবে। এমন মুহূর্তের মোকাবেলা করতে হতে পারে। কিভাবে আমরা সেই পরিস্থিতিগুলো উতরাতে পারব, সেদিকে মনোযোগ দেওয়াই ভালো হবে, পুরানো চিন্তাগুলো না করে।’

দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে ভারতের কাছে পাত্তাই পায়নি বাংলাদেশ। ১৫৪ রান তাড়ায় অধিনায়কের খুনে ইনিংসে ৮ উইকেটে জিতেছে ভারত। অমন জয়ের পর মোমেন্টাম যে স্বাগতিকদের দিকে থাকবে, সেটি মানছেন মাহমুদউল্লাহ, ‘যেভাবে জিতেছে, অবশ্যই এই ম্যাচের পর ওদের আত্মবিশ্বাস ভালো থাকবে। তবে আমার মনে হয় না আমাদের আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি হবে। প্রথম ম্যাচে দেখিয়েছি আমরা জিততে পারি। এই আত্মবিশ্বাস সবার ধরে রাখতে হবে যেন আমরা সিরিজটা জিততে পারি।’

দেশের মাটিতে কখনও তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে হারেনি ভারত। তাদের হারের তেতো স্বাদ দিতে ধারাবাহিকভাবে ভালো খেলে যাওয়ার কোনো বিকল্প দেখেন না মাহমুদউল্লাহ, ‘ক্রিকেট এমন একটি খেলা, যেখানে আপনি প্রতিদিন শিখবেন। কিছু সময় আমরা একই ভুল বারবার করি। গ্রেট প্লেয়াররা বারবার একই ভুল করে না। তারা ধারাবাহিকভাবে পারফর্ম করে। দল হিসেবে এই ভুলগুলো বারবার না করা আমাদের শিখতে হবে এবং বুঝতে হবে।’

রাজকোটে যেমন উইকেটে খেলা হয়েছে নাগপুরে মিলতে পারে তেমনই উইকেট। সেই ম্যাচে টপ অর্ডারের কোনো একজন ব্যাটসম্যানকে ১৫/১৬ ওভার পর্যন্ত ক্রিজে চান অধিনায়ক, ‘এই ধরণের উইকেটে একজন থিতু ব্যাটসম্যানের ১৫-১৬ ওভার থাকা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। যে কিনা দলকে টানতে পারবে। সঙ্গে যারা থাকবে, তারা ছোট ছোট জুটিতে ২০-৩০ রান করতে পারলে সেটা অনেক সাহায্য করবে। যদি ভারতের ব্যাটিং অর্ডারের দিকে দেখেন যে রোহিত একাই টেনে নিয়ে গেছে, অসাধারণ ব্যাটিং করেছে। আমাদের টপ অর্ডার থেকে যদি এমন একটি ইনিংস আসত, সম্ভবত আমাদের সুযোগ আরও বেশি থাকত ১৭০-১৮০ রান করার।’

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন