শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

পূর্বাচলে পোষা কুকুরের রহস্যজনক মৃত্যু

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৯ নভেম্বর, ২০১৯, ১২:০১ এএম

বিষ প্রয়োগে হত্যায় থানায় জিডি
ময়নাতদন্তে পশু হাসপাতালে প্রেরণ
রাজধানীর পূর্বাচল পিংক সিটি আবাসিক এলাকায় তিনটি পোষা কুকুরের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও নিখোঁজ রয়েছে আরও ৮টি কুকুর। মৃত তিন কুকুরের দুটির মালিক চলচ্চিত্র নির্মাতা শাহনেওয়াজ কাকলী এবং অপরটির মালিক আবাসিকের বাসিন্দা ও অ্যানিমেল লাভার অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট সাদিয়া সালমা সিদ্দিকা সাথি। এই ঘটনায় খিলক্ষেত থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন তিনি।

তাদের অভিযোগ, পরিকল্পিতভাবে বিষ প্রয়োগ করে কুকুরগুলোকে হত্যা করা হয়েছে। মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে দুটি কুকুর ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকার সেন্ট্রাল ভেটেরিনারি হসপিটালে (কেন্দ্রীয় পশু হাসপাতাল) পাঠানো হয়েছে। এর আগে গত মঙ্গলবার ও বুধবার কুকুরগুলোর রহস্যজনক মৃত্যু ঘটে।

তাদের অভিযোগ, তিনটি কুকুর একইভাবে মারা গেছে। শরীরের কোথাও কোনও আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তবে মৃত্যুর পর কুকুরগুলোর মুখ দিয়ে রক্ত বের হয়। বিষাক্ত কিছু খাইয়ে কুকুরগুলোকে মারা হয়েছে বলে তারা ধারণা করছেন। পিংক সিটির ভেতরের কোন বাসিন্দা এই কাজ করেছে তারা সন্দেহ করছেন।

চলচ্চিত্র নির্মাতা শাহনেওয়াজ কাকলী বলেন, কেউ রাস্তার কুকুরও মেরে ফেলার অধিকার রাখে না। সেখানে গৃহপালিত প্রাণী হত্যা করা বিশাল অপরাধ। তিনি বলেন, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বাটার (তার কুকুরের ডাক নাম) শুয়ে ছিল। ডাক দিলে একবার লেজ নেড়ে সায় দিলেও ওঠেনি। কাছে গিয়ে দেখি পায়খানার সাথে রক্ত প্র¯্রাব করেছে। এর ১০ মিনিটের মধ্যে কুকুরটি মারা যায়। শরীরে কোথাওকোনও জখম ছিল না। কিন্তু মৃত্যুর সময় মুখ থেকে রক্ত বের হচ্ছিলো।

তিনি আরও বলেন, আমরা সিসিটিভি ফুটেজ চেক করেছি। ৫ নভেম্বর বেলা ১১টা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত পিংক সিটির সিসিটিভি ক্যামেরা বন্ধ ছিল। আমরা ধারণা করছি, ওই সময়ের মধ্যে কে বা কারা কুকুরগুলোকে বিষ প্রয়োগ করেছে।

এ বিষয়ে পিংক সিটি আবাসিক এলাকার ম্যানেজমেন্ট কমিটির হিসাবরক্ষক মো. মিরাজ বলেন, পিংক সিটিতে মোট ২৪০টি বাড়ি রয়েছে। এসব বাড়ির নিরাপত্তায় মাত্র ২০টি সিসিটিভি ক্যামেরা রয়েছে। তবে কিছুদিন ধরে সবগুলো ক্যামেরা একসঙ্গে কাজ করে না। মেরামতের পর ১৩টি সিসিটিভি ক্যামেরা এখন সচল রয়েছে। নষ্ট না হলে ক্যামেরা বন্ধ থাকে না। আর কুকুরগুলো কীভাবে মারা গেছে সেটিও আমরা জানি না। তবে খবরটি শুনে খুবই খারাপ লাগছে।

এদিকে, কুকুরের অস্বাভাবিক মৃত্যু ও নিখোঁজের বিষয়ে রাজধানীর খিলক্ষেত থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) দায়ের করেছেন পিংক সিটি আবাসিক এলাকার বাসিন্দা ও অ্যানিমেল লাভার অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট সাদিয়া সালমা সিদ্দিকা সাথি।

তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ৮টি কুকুর বসবাস করলে মঙ্গলবার দুপুরের পর থেকে সবগুলো নিখোঁজ রয়েছে। আমার ধারণা, বেআইনিভাবে কুকুরগুলোকে কে বা কারা অপসারণ অথবা হত্যা করেছে। যা বাংলাদেশ প্রাণী কল্যাণ আইনে-২০১৯ ভঙ্গের লক্ষণ।
তিনি জিডিতে আরও উল্লেখ করেন, কিছুদিন আগে হাবিব আহমেদ নামে একজন মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সব কুকুর মেরে ফেলার হুমকি দেয়। এরপর মঙ্গলবার বেলা ১২টা ১৩ মিনিটে আবারও ওই ব্যক্তি একই হুমকি দেয়। একইদিন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে অন্য একটি কুকুরকে অস্বাভাবিকভাবে মেরে ফেলা হয়েছে। পরদিন আরও দুটি কুকুরের মৃত্যু হয়। আমরা এই কুকুরগুলোর অস্বাভাবিক মৃত্যুর কারণ জানতে তাদের ময়নাতদন্ত জরুরি বলে মনে করছি। এ বিষয়ে সাদিয়া সামলা সিদ্দিকা সাথি বলেন, ‘হাবিব আহমেদ নামে ওই ব্যক্তি হুমকিতে বলেছিল- কুকুর তো যাবে যাবেই, আপনাকেও দেখে নেবো, র‌্যাব-পুলিশ দিয়ে আপনাকে ধরে নেওয়া হবে বলেও হুমকি দেয়।

জিডির তদন্ত কর্মকর্তা খিলক্ষেত থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সজল বলেন, কুকুর মৃত্যু ও নিখোঁজের ঘটনায় একটি জিডি দায়ের করা হয়েছে। আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে দুটি মৃত কুকুর উদ্ধার করেছি। তবে কী কারণে কুকুরগুলোর মৃত্যু হয়েছে সেটি জাান যায়নি।

তিনি আরও বলেন, মৃত দুটি কুকুর ময়নাতদন্তের জন্য পুরান ঢাকার সেন্ট্রাল ভেটেরেনারি হসপিটালে (কেন্দ্রীয় পশু হাসপাতাল) পাঠানো হয়েছে। ময়নাতন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে জানা যাবে। এছাড়াও ঘটনার সঙ্গে কেউ জড়িত কি না সেটিও তদন্ত করা হচ্ছে।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন