স্টাফ রিপোর্টার : গাজীপুরে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আহসান উল্লাহ মাস্টার হত্যা মামলায় ১১ আসামিকে হাইকোর্টের দেওয়া খালাসের রায় স্থগিত চেয়ে আবেদন করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। এর উপর আজ মঙ্গলবার চেম্বার আদালতে শুনানি হতে পারে।
ওই ১১ আসামির মধ্যে নিম্ন আদালতের রায়ে সাত আসামির মৃত্যুদ- এবং চার আসামির যাবজ্জীবন কারাদ- হয়েছিল। গত ১৫ জুন হাইকোর্টের রায়ে তারা খালাস পান। খালাসের রায়ে স্থগিতাদেশ চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় গতকাল সোমবার আবেদনটি জমা দেয় রাষ্ট্রপক্ষ। বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথের হাইকোর্ট বেঞ্চ তাদের রায়ে বিএনপি নেতা নুরুল ইসলাম সরকারসহ ছয়জনের মৃত্যুদ- বহাল রাখে। সাতজনের সাজা কমিয়ে দেওয়া হয় যাবজ্জীবন কারাদ-। নিম্ন আদালতে যাবজ্জীবন পাওয়া ছয় আসামির মধ্যে একজনের ক্ষেত্রে সেই দ-ই বহাল থাকে। আর যাবজ্জীবনের পলাতক এক আসামি আপিল না করায় তার ক্ষেত্রেও একই সাজা বহাল রয়েছে। মৃত্যুদ- পাওয়া অপর দুই আসামির মৃত্যু হওয়ায় তাদের বিষয়টি নিষ্পত্তি করে দেয় হাই কোর্ট।
অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম গতকাল সাংবাদিকদের বলেন, ‘আহসান উল্লাহ মাস্টার হত্যা মামলায় যে ১১ জনকে খালাস দেওয়া হয়েছে তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষে আমরা প্রভিশনাল পিটিশন দায়ের করেছি। অপরপক্ষ আজ প্রস্তুত ছিল না বলে আগামীকাল চেম্বার বিচারপতির আদালতে বিষয়টি উঠবে।’
রাষ্ট্রের প্রধান এই আইন কর্মকর্তা বলেন, ‘আমাদের বক্তব্য একটাই। এই আসামিদের বিরুদ্ধে যথেষ্ট সাক্ষ্য-প্রমাণ ছিল। অনেকে সাক্ষ্যে বলেছেন যে তারা আসামিদের গুলি করতে দেখেছেন, অস্ত্র হাতে দেখেছেন। হত্যা ষড়যন্ত্রে যুক্ত ছিল এ রকম আসামিদের ছেড়ে দেওয়া সঠিক হয়নি-এমন বক্তব্য রেখে প্রভিশনাল পিটিশনটি দায়ের করা হয়।’
খালাস পাওয়া ১১ : নিম্ন আদালতে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত সাত আসামি হাই কোর্টে খালাস পেয়েছেন, যাদের মধ্যে তিনজন পলাতক ও চারজন কারাগারে আছেন। পলাতক ওই তিনজন হলেন- ফয়সাল, রনি মিয়া ওরফে রনি ফকির ও খোকন। কারাগারে থাকা বাকি চার আসামি হলেন-আমির হোসেন, জাহাঙ্গীর ওরফে বড় জাহাঙ্গীর, লোকমান হোসেন ওরফে বুলু ও দুলাল মিয়া।
নিম্ন আদালতে যাবজ্জীবন কারাদ- পাওয়া ছয় আসামিদের মধ্যে কারাগারে থাকা নুরুল আমিনের দ- বহাল রেখেছে হাই কোর্ট। কারাগারে থাকা অপর চার আসামি খালাস পেয়েছেন। এরা হলেন-রাকিব উদ্দিন সরকার ওরফে পাপ্পু, আইয়ুব আলী, জাহাঙ্গীর ও মনির।
নিম্ন আদালতে যাবজ্জীবন কারাদ-প্রাপ্ত পলাতক আসামি অহিদুল ইসলাম টিপু আপিল করেননি। ফলে নিম্ন আদালতের দেওয়া যাবজ্জীবন দ- তার ক্ষেত্রে বহাল রয়েছে। অভিযোগপত্রে থাকা দুই আসামি কবির হোসেন ও আবু হায়দার ওরফে মিরপুরইয়া বাবু নিম্ন আদালত থেকেই খালাস পান।
রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনের বিষয়ে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মাসুদ হাসান চৌধুরী পরাগ বলেন, ‘এই আবেদনে ১৫ জুন হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের কার্যকারিতা স্থগিত চাওয়া হয়েছে। অনেক আসামি এখনও পলাতক। খালাস পাওয়া আসামিদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে। খালাসের ফলে তারা কারামুক্তি পেয়ে আবার পলাতক হতে পারে-এসব বিবেচনায় আবেদন করা হয়েছে।’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন