শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

কাশ্মীর বিষয়ে মোদি ভুলে গেছেন পূর্বপ্রতিশ্রুতি

ঢাকা লিট ফেস্টের শেষ দিনে শশী থারুর

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১০ নভেম্বর, ২০১৯, ১২:০০ এএম

গুলি না করে, গালি না দিয়ে, বুকে টেনে নিয়ে কাশ্মীর সমস্যার সমাধান করতে হবে। একসময় কাশ্মীর প্রসঙ্গে এমন প্রতিশ্রুতিই দিয়েছেলিনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কাশ্মীর প্রশ্নে আজ সেই পূর্বপ্রতিশ্রুতির কথা মোদী ভুলে গেছেন বলে মন্তব্য করেছেন ভারতীয় রাজনীতিবিদ, লেখক শশী থারুর। গতকাল শনিবার রাজধানীর বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গনে ঢাকা লিট ফেস্টের তৃতীয় ও শেষ দিন সকালে আব্দুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে আয়োজিত ইন্ডিয়া অ্যাগেইনস্ট ইটসেলফ শীর্ষক অধিবেশনে এ কথা বলেন ভারতীয় লোকসভার সদস্য শশী থারুর। এ রাজনীতিবিদ বলেন, আমার মতে, কাশ্মীর সঙ্কট নিরসনে মোদীর ওই পদ্ধতিই কার্যকর উপায় ছিলো। কিন্তু তিনি নিজের দেওয়া সেই প্রতিশ্রুতি এখন ভুলে গেছেন।

অধিবেশনে কাশ্মীরের ভবিষ্যত প্রসঙ্গে দর্শকদের এক প্রশ্নের জবাবে শশী থারুর বলেন, যেভাবে কাশ্মীর ইস্যুর সমাধান করা হচ্ছে, সেটা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার উপায় হতে পারে না। বর্তমানে সেখানে রাজনৈতিক নেতাদের গৃহবন্দি করা হয়েছে। গণতন্ত্রে এটা অগ্রহণযোগ্য পন্থা। সেখানকার সংসদ ভেঙে দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে এখন শুধুমাত্র গর্ভনর সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। এটি মূলত সংসদে আলোচনা করে নেওয়া উচিত। আমি মনে করি, এ বিষয়ে সুপ্রিমকোর্টের শরণাপন্ন হওয়া দরকার। জানি না, কেউ হয়েছেন কিনা। তবে একটা ব্যাপার স্পষ্ট। আর তা হলো- এখানে সংবিধানের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন করা হয়েছে। এভাবে ভারতে গণতন্ত্র প্রচলিত হওয়ার কথা নয়।
ভারতের অন্যান্য প্রদেশের মতো কাশ্মীরের ক্ষেত্রেও রাজনৈতিক সমাধান বের করা যেতো বলে মন্তব্য করেন শশী থারুর। আগামী সপ্তাহে লোকসভার অধিবেশনে নরেন্দ্র মোদীকে কাশ্মীর প্রসঙ্গে তার পূর্বপ্রতিশ্রুতির কথা স্মরণ করিয়ে দেবেন বলেও জানান তিনি। এসময় কাশ্মীর নিয়ে তিনি নিজে বিভিন্ন সময় লোকসভায় কথা বলেছেন বলেও উল্লেখ করেন।

গতকাল শনিবার বাবরি মসজিদের রায় ঘোষণা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করবেন না জানিয়ে শশী থারুর বলেন, আমি আশা করি, মানুষ এটা মনে রেখে, এর সমাপ্তি হিসেবেই দেখবে। এবং উত্তরণের পথে হাঁটবে। আমরা সামাজিকভাবে অনেক ভুগেছি এ নিয়ে। আমাদের জন্য এর চেয়েও বড় চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে।
এদিকে গতকাল শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৫টায় সমাপনী অনুষ্ঠান ‘কালের যাত্রার ধ্বনি’র মাধ্যমে তিন দিন ব্যাপী নবম ঢাকা লিট ফেস্ট ২০১৯ এর ইতি টানা হয়েছে। বৃষ্টি উপেক্ষা করেও নবম ঢাকা লিট ফেস্টের তৃতীয় ও শেষ দিনে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে জড়ো হয়েছেন দর্শনার্থীরা। অংশগ্রহণ করছেন বিভিন্ন সেশনে, ঢু-মারছেন ফুড কোর্টগুলোতেও। এর আগের দুই দিনের মতো গতকালও উৎসবের শুরু হয় আধ্যাত্মিক গানের মধ্য দিয়ে। বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে ভজন কীর্তনের এই অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।

গতকার সকাল থেকে যেসব সেশন চলছে সেগুলো হলো- সকাল ১০টায় ঢাকা ট্রিবিউনের সম্পাদক জাফর সোবহানের সঞ্চালনায় লাভ, আফ্রিকা শীর্ষক সেশন। আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এই সেশনে অংশগ্রহণ করেন পুলিৎজার পুরষ্কার জয়ী সাংবাদিক জেফ্রি গেটলম্যান। একই সময়ে ভাস্কর নভেরা হলে অনুষ্ঠিত হয় বঙ্গবন্ধু ইন হিজ ওউন ওয়ার্ডস শীর্ষক সেশন। এতে অংশগ্রহণ করেন, ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির প্রো-ভিসি ফকরুল আলম, ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড (ইউপিএল) এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহরুখ মহিউদ্দিন এবং প্রখ্যাত লেখক ও লোকগবেষক শামসুজ্জামান খান। বেলা সোয়া ১১টায় আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদ মিলনায়তনে প্রখ্যাত ভারতীয় রাজনীতিক ও লেখক শশী থারুরের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয় ইন্ডিয়া অ্যাগেইন্সট ইটসেলফ শীর্ষক সেশন। এতে সঞ্চালনা করেন সি আর আবরার।

এছাড়া দুপুরে অনুষ্ঠিত হয় দ্য আর্ট অফ কনভারসেশন শীর্ষক সেশন যাতে অংশগ্রহণ করেন ঢাকা লিট ফেস্টের তিন পরিচালক আহসান আকবর, কাজী আনিস আহমেদ ও সাদাফ সায। একই সময়ে সাউথ এশিয়ান ডাইকোটমিস শীর্ষক সেশনে অংশগ্রহণ করেন লেখক এইচএম নাকভি, নাদিম জামান এবং তিশানি দোশি। সঞ্চালনায় ছিলেন সম্রাট চৌধুরী। বিকেল ৩টায় অনুষ্ঠিত হয়েছে বুকার প্রাইজের শর্টলিস্টে স্থান পাওয়া লেখক উইলসেলফ-এর অংশগ্রহণে সেশন উইল, যাতে সঞ্চালনা করেন লেখক খাদেমুল ইসলাম।
সন্ধ্যা সাড়ে ৫টায় সমাপনী অনুষ্ঠান কালের যাত্রার ধ্বনি’র মাধ্যমে তিন দিন ব্যাপী চলা নবম ঢাকা লিট ফেস্ট-২০১৯ এর ইতি টানা হয়েছে। সমাপনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিল শিল্পী চন্দনা মজুমদারের একক পরিবেশনা।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
Shuja Uddoula ১০ নভেম্বর, ২০১৯, ১:২৪ এএম says : 0
ঠিক বলেছেন। মোদি তো উগ্রবাদি
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন