দোর্দণ্ড প্রতাপে বাংলাদেশ ও ভারতে ধেয়ে আসা ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ শেষ পর্যন্ত সুন্দরবনে বাধা পেয়ে তার শক্তি হারিয়েছে। মহান আল্লাহ এবারও প্রকৃতির এই ঢাল দিয়ে আমাদেরকে রক্ষা করলেন। কিন্তু আমাদের নিষ্ঠুর ও বিধ্বংসী কর্মকাণ্ডে সৃষ্টিকর্তার অপূর্ব এই নেয়ামত আজ হুমকির মুখে। তাই ধ্বংসের হাত থেকে সুন্দরবনকে বাঁচাতে সরকারের পাশাপাশি সবাইকে এগিয়ে আসতে আকুতি জানিয়েছেন নেটিজেনরা। ঘূর্ণিঝড় বুলবুল বাঁধাপ্রাপ্ত হওয়ার প্রেক্ষিতে এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জোর দাবি জানিয়েছেন সচেতন মহল।
ঘূর্ণিঝড় বুলবুল প্রথমে ভারতীয় অংশের সুন্দরবনের সাগরদ্বীপে আঘাত করে। এরপর এটি বাংলাদেশের সুন্দরবনের সাতক্ষীরা ও খুলনা অংশে প্রবেশ করে। সুন্দরবনের গাছপালায় বাধা পেয়ে দুর্বল হওয়া ‘বুলবুল’র কেন্দ্রে বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় প্রায় ২০ কিলোমিটার কমে যায়। ফলে অনেক বড় ক্ষয়ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পায় বাংলাদেশ।
পরিবেশপ্রেমী আ ক ম শহিদুল ইসলাম লিখেছেন, ‘‘মহান আল্লাহ পাক এই নৈসর্গিক প্রকৃতির সব কিছুই একমাত্র আমাদের কল্যাণেই সৃষ্টি করেছেন। আলহামদুলিল্লাহ্। কিন্তু কজন আমরা তা বুঝি। বুঝে হোক আর না বুঝেই হোক এই প্রক়ৃতির উপর প্রতিদিনই চালাই গণনির্যাতন!’’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃ-বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক রাশেদা রওনক খান লিখেছেন, ‘‘ভালোবাসার প্রতিদান কেবল ভালোবাসা দিয়েই দিতে হয়! তাই আমাদের যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগে ভালোবাসার চাদর দিয়ে ঢেকে রেখে আমাদের বাঁচিয়ে দেয় যে সুন্দরবন, তাকে বাঁচিয়ে রাখার দায়িত্বও আমাদের প্রত্যেকের, রাষ্ট্রের তো বটেই! এবারও রক্ষা পেলাম বুলবুল হতে... ভালো থাকুক, নিরাপদে থাকুক আমাদের প্রিয় সুন্দরবন! তবেই ভালো থাকবো আমি, তুমি, আপনি ও আমরা| প্রিয় সুন্দরবনের জন্য ভালোবাসা রইলো, সাথে কৃতজ্ঞতা|’’
মঞ্জুর জুয়েল লিখেছেন, ‘‘আমাদের বাঁচিয়েছে আল্লাহ রাব্বুল কারিম। আর আমরা যে সুন্দরবনের কথা বলি সেই বনকে বাঁচিয়েছে আল্লাহ পাক রাব্বুল আল-আমিন।
‘‘এই সুন্দর বন আল্লাহর রহমত হয়ে বারবার বাঁচিয়ে দেয় লাখ লাখ প্রাণ। আর এই আমরাই আজ সুন্দরবনের প্রতি কতটা নিষ্ঠুর আচরণ করেই চলেছি। নির্বিচারে গাছ কাটা, সুন্দরবনের প্রাণীদের প্রাণে মারা, আর ব্যাপক উন্নয়নের নামে নিজ দেশ অথবা পাশের গডফাদার দেশের কথাই ভেবেই হোক রামপালের মতো প্রজেক্ট তো আমরা করেই চলেছি। প্রকৃতির প্রতি আমরা কত রুষ্ঠ। এই রুষ্ঠতা যদি প্রকৃতি আমাদের প্রতিও দেখায় তাহলে আর রক্ষা নেই এই অকৃতজ্ঞ আমাদের’’ লিখেছেন সামিয়া হোসাইন।
ড. শেখ ফরিদ আহাম্মদ লিখেছেন, ‘‘এবার বুঝলেন তো আল্লাহ প্রকৃতি দিয়ে আমাদেরকে কিভাবে রক্ষা করলেন। তাই আসুন আল্লাহর সৃষ্ট এই প্রাকৃতিক নিয়ামত আমরা সবাই মলে রক্ষা করি। এরজন্য ঝুঁকি হয় এমন সব কিছু ওই এরিয়া থেকে অপসারণ করি। আসুন সুন্দরবনের পরিবেশ রক্ষা করি।’’
মিজানুর রহমান লিখেছেন, ‘‘সুন্দরবন আমাদের অহংকার। প্রাকৃতিক সম্পদগুলো মানুষের কল্যাণের জন্য আল্লাহপাক সৃষ্টি করেছেন। আর মানুষরূপী জানোয়াররা সেগুলো কেটে সাবাড় করছে। আল্লাহ সবাইকে হেফাজত করুন।’’
‘‘এই সুন্দরবনকেই আমরা আমাদের নিকটস্থ হায়েনা ভাইদের হাতে দিয়ে দিচ্ছি ধ্বংস করার জন্য। ধিক আমাদেরকে, নির্লজ্জ জাতি আমরা। ওইদিন বেশি দূরে না যেদিন শেষ রক্ষা করারও কেউ থাকবে না, না সুন্দরবন না তথাকথিত ওই ভাই ব্রাদার’’ লিখেছেন সোনিয়া হক।
আফ্রিন আহমাদ চৌধুরী লিখেছেন, ‘‘আলহামদুলিল্লাহ্ আল্লাহ্ আমাদের রক্ষা করেছেন। প্রতিবার এই সুন্দরবন উসিলাদার হয়ে রক্ষা করে, আর আমরা এমন অকৃতজ্ঞ জাতি যারা কিনা সুন্দরবনকে ধ্বংস করে ফেলছি। আফসোস। আমাদের সচেতন হতে হবে। সুন্দরবন রক্ষায় এগিয়ে আসতে হবে।’’
দেলওয়ার হোসেন দুলু লিখেছেন, ‘‘আল্লাহপাক পৃথিবীতে গাছপালা, নদীনালা, খালবিল, পাহাড় পর্বত এই সবকিছুই সৃষ্টি করেছেন মানুষের কল্যাণে এবং উপকারের জন্য। কিন্তু আমরা মানুষ জাতি তা না বুঝেই সবকিছু উজাড় করে নিজেই নিজেদের বিপদ ডেকে আনতেছি। আর তাই এর কুফল ও আমাদেরকে ভোগ করতে হবে।’’
‘‘আল্লাহ প্রকৃতিগত ভাবে মানুষের নিরপত্তার সুন্দর প্রতিরোধ ব্যবস্থা করে রেখেছেন। বাংলাদেশকে সাগরে থেকে তৈরি ঘূর্ণিঝড়সহ অন্যান্য সব বিপদ থেকে রক্ষার জন্যই সুন্দরবন সৃষ্টি। কিনতু আমরা সুন্দরবনকে ধ্বংস করে ফেলতেছি’’ লিখেছেন কাজী সুহরিদ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন