বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

আন্দোলনের মুখে ইভো মোরালেসের পদত্যাগ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১১ নভেম্বর, ২০১৯, ৯:২২ এএম

অক্টোবরে অনুষ্ঠিত পুনঃনির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগে আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করেছেন বলিভিয়ার প্রেসিডেন্ট ইভো মোরালেস।

রোববার (১০ নভেম্বর) নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে বিবৃতি দিয়েছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক সংস্থা। তাদের দাবি, ২০ অক্টোবরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির যথেষ্ট প্রমাণ তাদের হাতে আছে।

আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের তথ্যপ্রমাণ পাওয়ার দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করে বলিভিয়ার নির্বাচনী সংস্থা সংস্কারের ঘোষণা দিয়েছিলেন মোরালেস। কিন্তু দেশটির রাজনীতিবিদ থেকে শুরু করে সেনাবাহিনী ও পুলিশ প্রধানরা মোরালেসকে পদত্যাগের আহবান জানান। এরপর টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে প্রেসিডেন্ট পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন মোরালেস। তার সঙ্গে দেশটির ভাইস-প্রেসিডেন্ট আলভারো গার্সিয়াও পদত্যাগ করেছেন।

মোরালেসের পদত্যাগের ঘোষণার পর আন্দোলনকারীরা রাস্তায় নেমে আতশবাজি ফুটিয়ে উল্লাস প্রকাশ করেন।

ব্যাপক কারচুপির তথ্যপ্রমাণ পাওয়ার কথা জানিয়ে গত নির্বাচনের ফলাফলকে স্বীকৃতি না দেওয়ার কথা জানায় ওই নির্বাচনের পর্যবেক্ষক সংস্থা অরগানাইজেশন অব আমেরিকান স্টেটস (ওএএস)।

প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগে কয়েক সপ্তাহ ধরেই বলিভিয়াতে সরকারবিরোধী আন্দোলন চলছে। এই সময়ে নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে তিন ব্যক্তি নিহত হন। কিন্তু ক্রমেই আন্দোলনের মোড় ঘুরে যায়। এমনকি আন্দোলনকারীদের সঙ্গে যোগ দেন অনেক উর্দি পরা পুলিশ সদস্যও।

আন্দোলনের মুখে ক্রমেই চাপের মুখে পড়ে যাওয়া মোরালেসকে ছেড়ে চলে যেতে থাকে তার রাজনৈতিক সঙ্গীরা। অনেকে তাদের পরিবারের নিরাপত্তা নিয়েও শঙ্কা প্রকাশ করেন। এমন পরিস্থিতিতে মোরালেসকে উদ্দেশ্য করে বলিভিয়ার সেনা প্রধান জেনারেল উইলিয়াম কালিমান পদত্যাগের আহবান জানান।

শুধু মোরালসকে পদত্যাগের আহবান জানিয়েই স্থির থাকেনি, বরং আন্দোলনকারীদের ওপর কোনো রকম আগ্রাসী আচরণ প্রতিহত করার ঘোষণাও দেয় দেশটির সেনাবাহিনী।

এরপর পদত্যাগের ঘোষণা দেওয়ার সময় মোরালেস বলেন, ‘আমার ভাই এবং বোনদের ওপর হামলা না করার জন্য আহবান জানাচ্ছি। জ্বালাও-পোড়াও এবং আক্রমণ বন্ধ করুন।’

২০০৬ সাল থেকে বলিভিয়ার প্রেসিডেন্টের পদে আসীন ছিলেন দেশটির মুভমেন্ট টু ওয়ার্ডস সোশ্যালিজমের শীর্ষ নেতা মোরালেস। দেশটির আদিবাসী জনগোষ্ঠী থেকে নির্বাচিত হওয়া প্রথম প্রেসিডেন্ট ছিলেন তিনি। মূলত বাম ধারার রাজনীতির ধারক মোরালেস দেশটির দরিদ্র জনগোষ্ঠীর কাছে ব্যাপক জনপ্রিয় ছিলেন।

এছাড়া মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার কারণেও মোরালেসের জনপ্রিয়তা ছিল তুঙ্গে। তিনি মূলত কিউবার সমাজতন্ত্রী বিপ্লবী ফিদেল কাস্ত্রো এবং ভেনিজুয়েলার প্রয়াত প্রেসিডেন্ট হুগো শাভেজের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। কিন্তু তার কর্তৃত্ববাদী নেতৃত্বের শৃঙ্খল ক্রমেই দেশটির জনগণের কাছে তাকে অজনপ্রিয় করে তোলে, যার শেষটা হলো তার পদত্যাগ দিয়ে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন