শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

লাশঘরে শিশু সোহা হাসপাতালে মা-বাবা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৩ নভেম্বর, ২০১৯, ১২:০১ এএম

ছোট্ট শিশু সোহা। বয়স তিন বছর। আধো আধো কণ্ঠে সারাক্ষণ মুখে লেগে থাকত মা-বাবা। এই দুজনকে ছেড়ে এক মুহ‚র্তও তাকে রাখা যেত না কারো কাছে। মা কিংবা বাবাকে সামনে না দেখলেই জুড়ে দিতো কান্না। অথচ কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে এখন আর বাবা-মার জন্য সোহা মনির কণ্ঠে কোনো আকুতি নেই! অ্যাম্বুলেন্সে করে সোহা মনির কাছ থেকে শত মাইল দ‚রে, আরও দ‚রে ঢাকার উন্নত কোনো হাসপাতালে বাবা-মা। আর সোহার নিথর দেহ পড়ে আছে আরেক হাসপাতালে লাশঘরে।

হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার সোহেল মিয়ার মেয়ে সোহা। মা নাজমা বেগম। গতকাল ভোর রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মন্দবাগে মর্মান্তিক ট্রেন দুর্ঘটনায় তারা তিনজনেই গুরুতর আহত হয়েছেন। তাদেরকে উদ্ধার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকা মেডিকেলে পাঠিয়ে দেয়া হয়।

সোহেল ও নাজমাকে নিয়ে যখন ঢাকায় যাওয়া হচ্ছিল তখন সোহার মামা জামাল মিয়া ভাগনির লাশ বুঝে নিতে হাসপাতালের মর্গ আর পুলিশের কাছে দৌড়াদৌড়ি করছেন। সোহার লাশ ময়নাতদন্ত ছাড়া বাড়ি নিয়ে যেতে চান মামা জামাল মিয়া। ভাগনির লাশ নিতে সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদনপত্র জমা দিয়েছেন তিনি।

নিহত সোহার মামা জামাল মিয়া বলেন, ট্রেন দুর্ঘটনার খবর পেয়ে এখানে ছুটে আসি। হাসপাতালের ফ্লোরে সোহাকে এভাবে দেখব কল্পনাও করিনি। সোহার বাবা-মাকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। সোহার লাশ নিতে আবেদন করেছি আমি।

আবেদনে তিনি বলেন, আমার অধুনামৃত ভাগনি সোহা মনি, বয়স অনুমান ৩ বৎসর, পিতা: সোহেল মিয়া, মাতা: নাজমা বেগম, গ্রাম: বানিয়াচং, পোস্ট বানিয়াচং, থানা বাহিনয়াচং, জেলা: হবিগঞ্জ মন্দবাগ রেলস্টেশনে মর্মান্তিক ট্রেন দুর্ঘটনায় আহত হলে আমার ভাগনিকে উদ্ধার করিয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে আনার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলিয়া ঘোষণা করে। বর্তমান আমার অধুনামৃত ভাগনির লাশ ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালের মর্গে আছে। এ ব্যাপারে আমাদের পরিবারের পক্ষ হইতে আমার ভাগনির মৃত্যুর ব্যাপারে কোন অভিযোগ নাই বা কোনো প্রকার মামলা মোকদ্দমা করিব না বলিয়া আমিসহ আমার পরিবারের লোকজন প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হলাম।

এদিকে, হাসপাতালের ফ্লোরে সোহার নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখে কাঁদছে সবাই। হাসপাতালে আনার পর তার পরিচয় পাওয়া না গেলেও কিছুক্ষণ পর জানা যায় হবিগঞ্জের সোহেল মিয়ার মেয়ে সোহা।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন