মঙ্গলবার , ০৩ অক্টোবর ২০২৩, ১৮ আশ্বিন ১৪৩০, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

ট্রাম্প-এরদোগান বৈঠক আজ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৩ নভেম্বর, ২০১৯, ১২:০৬ পিএম

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগানের মধ্যে সম্পর্ক শীতল যাচ্ছিল বেশ কয়েক মাস ধরে। সেই সম্পর্ককে জোড়া লাগানোর জন্য গতকাল যুক্তরাষ্ট্র গেছেন এরদোগান। আজ বুধবার দুই নেতার বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।

২০১২ সালে ইস্তাম্বুলে ট্রাম্প টাওয়ার উদ্বোধনকালে রিয়েল এস্টেট ব্যবসার মোড়ল ডোনাল্ড ট্রাম্প তুরস্কের জনগণকে বলেছিলেন, ‘তাদের নেতা, প্রধানমন্ত্রী ‘অত্যন্ত সম্মানিত’ ব্যক্তি। ‘তিনি একজন ভালো মানুষ হিসেবে আপনাদের প্রতিনিধিত্ব করছেন।’ মার্কিন প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর ট্রাম্প প্রকাশ্যে এরদোগান এবং তার লড়াইয়ের শৈলীর প্রশংসা করে তাকে ‘বন্ধু’ বলে অভিহিত করেছেন।


আজ বুধবার হোয়াইট হাউজে তুরস্কের প্রেসিডেন্টের সাথে তাঁর সাক্ষাৎ হওয়ার কথা। ট্রাম্পের এ রকম অনুরাগকে তুরস্ক ও আমেরিকার সম্পর্ক পুরোপুরি ভেঙে না যাওয়ার কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। যদিও সাম্প্রতিক মাসগুলোতে তাদের মতবিরোধ তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে পড়েছিল।

ওয়াশিংটন ইনস্টিটিউট ফর নিয়ার ইস্ট পলিসির তুর্কি গবেষণা প্রোগ্রামের পরিচালক সোনার ক্যাগাপ্টে বলেছেন, ‘ন্যাটো জোটের শক্তিশালী প্রেসিডেন্ট হিসেবে দুই নেতার একে অপরের প্রতি সখ্যও রয়েছে যখন তাদের শত্রুতার ব্যাপারে সতর্ক করার সময়।’

সিরিয়াকে কেন্দ্র করে এরদোগান আমেরিকার কুর্দি মিত্রদের বিরুদ্ধে আন্তঃসীমান্ত আক্রমণ এবং সেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উপস্থিতি নিয়ে আপত্তি করার পর ওয়াশিংটন ও আঙ্কারার মধ্যে নতুন করে সঙ্কট তৈরির আশঙ্কা সৃষ্টি হয়। কয়েক মাস আগে তুরস্কের রাশিয়ান ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থা এস-৪০০ কেনার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র তুরস্কের বিরুদ্ধে নানা ধরনের হুমকি দেয়; কিন্তু তুরস্ক যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার হুমকি প্রত্যাহার করে জুলাই মাসে তার প্রথম এস-৪০০ চালান গ্রহণ করে। জবাবে ওয়াশিংটন তুরস্ককে এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান বিক্রির প্রোগ্রাম থেকে সরিয়ে নেয়। তবে এখনো পর্যন্ত এ ব্যাপারে ওয়াশিংটন কোনো নিষেধাজ্ঞা জারি করেনি।

তুরস্কের বিভিন্ন পদক্ষেপ মার্কিন কংগ্রেসকে ক্ষুব্ধ করেছিল। তুরস্কের প্রতি ক্রোধ তীব্র হয়েছিল এ কারণে যে, আঙ্কারা সিরিয়া আক্রমণের পরে ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ওয়াশিংটনের মূল অংশীদার কুর্দি মিলিশিয়াকে বহিষ্কার করেছিল।

যুক্তরাষ্ট্রের হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভস গত মাসে সিরিয়া অভিযানের জন্য তুরস্ককে শাস্তি দিতে নিষেধাজ্ঞার প্যাকেজ পাস করেছে। ট্রাম্পের মিত্র লিন্ডসে গ্রাহামসহ সিনেটের গুরুত্বপূর্ণ সদস্যরা আঙ্কারা কুর্দিদের ক্ষতিগ্রস্ত করলে সেখানে অগ্রসর হওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। সোমবার কয়েকজন পার্লামেন্ট মেম্বার ট্রাম্পকে এরদোগানের আমন্ত্রণটি প্রত্যাহার করার জন্য একটি চিঠিতে অনুরোধ করেছিলেন। তবে এরদোগান এখনো পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা এড়াতে সক্ষম হয়েছেন। গত রোববার হোয়াইট হাউজের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা রবার্ট ওব্রায়ান বলেছিলেন যে, হুমকিটি আসল ছিল। ‘তুরস্ক যদি এস-৪০০ সংগ্রহ থেকে বের না হয়ে আসে নিষেধাজ্ঞার আশঙ্কা রয়েছে। ... তুরস্ক এই নিষেধাজ্ঞার প্রভাব অনুভব করবে’, সিবিএস নিউজকে বলেছেন তিনি।

প্রধান এজেন্ডা ফেটোর বিরুদ্ধে লড়াই

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট গতকাল মঙ্গলবার বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের সাথে বৈঠকে আলোচনার প্রধান এজেন্ডা হবে ফেতুল্লাহ সংস্থার (ফেটো) বিরুদ্ধে লড়াই। যুক্তরাষ্ট্র যাওয়ার প্রাক্কালে ইস্তাম্বুল বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি। তিনি বলেন, ‘পেনসিলভেনিয়ায় সন্ত্রাসী নেতা ফেতুল্লাহ গুলেনের প্রত্যাবর্তনের জন্য আঙ্কারা প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে। তাকে ফেরত আনার জন্য তুরস্ক বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে।’

তুরস্কে ২০১৬ সালের ১৫ জুলাই ব্যর্থ অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন মার্কিন-ভিত্তিক যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত ফেতুল্লাহ গুলেন। সেই ব্যর্থ অভ্যুত্থানে ২৫১ জন নিহত ও দুই হাজার ২০০ জন আহত হয়েছিলেন। তুরস্কের প্রতিষ্ঠানগুলো, বিশেষত সেনা, পুলিশ এবং বিচার বিভাগে অনুপ্রবেশের মাধ্যমে এরদোগান সরকারকে উৎখাত করার দীর্ঘ দিনের প্রচারের পেছনে ফেটোর সংশ্লিষ্টতা থাকার অভিযোগ করেছে। সূত্র : রয়টার্স ও আনাদোলু।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন