মঞ্জুশ্রী দত্ত পাপিয়া
আমার বাবা আমার কাছে প্রিয়। ছোট বেলা থেকেই আমি আমার বাবার সাথে সব কথা বিনিময় করতাম। বাবাও করতেন। উনিও খুব মজা পেতেন। বাবা আমাদের এলাকার চেয়ারম্যান ছিলেন। উনি সমাজসেবক, তাই সময় পেতেন খুব কম। অথচ, বিভিন্ন ব্যস্ততার মধ্যেও আমাকে অনেক সময় দিতেন এবং আদর করতেন। আপনারা অবাক হবেন যে, বাবা এত ব্যস্ততার মধ্যেও আমাকে সময় দিতেন সেটাই তার ভালোবাসা। উনি কখনোই বুঝাতে দেননি যে আমার জন্য তাঁর সময় নেই। ১ এপ্রিল আমার জন্মদিন। এই জন্মদিনে বাবা কখনো কোন কাজ রাখতেন না। ঐদিন উনি শুধু আমাকেই সময় দিতেন।
আমার পড়ালেখার পেছনে বাবার অনেক অবদান। আমি পড়তে পড়তে ঘুমিয়ে পড়তাম। বাবা আদর করে শুইয়ে দিতেন। আবার ভোর পাঁচটায় আমাকে ডেকে পড়তে বসাতেন। এছাড়া গানের টিচার এলে ছোটবেলায় লুকোতাম। বাবা আমাকে কোলে করে নিয়ে আসতেন গানের টিচারের কাছে। বাবা মিষ্টান্ন খুব পছন্দ করতেন। আমিও ঠিক তদ্রুপ। পরিচিতজনরা বলেন, আমার নাকি বাবার সাথে অনেক মিল। আমার বাবার কাছে কোন জিনিস চাইতে দেরি, কিন্তু বাবার দিতে দেরি হয়নি। তৎক্ষণাত কিনে দিতেন। এজন্য সারাক্ষণ বাবার পিছু পিছু থাকতাম। আসলে সব বাবাই এমন হয়। সন্তানের জন্য তাঁরা তাঁদের জীবনটাই উৎসর্গ করে থাকেন। কিন্তু বড় হয়ে আমরা কী করি? বাবাকে বৃদ্ধ হলে উনাকে বৃদ্ধাশ্রমে দিয়ে আসি, যখন চলার ক্ষমতা থাকে না। এটা ঠিক না। আমাদের সবার বাবার বৃদ্ধ বয়সে তাঁকে ভালোবাসা এবং দেখভাল করা উচিত। আমি আমার বাবার সবকিছু অনুকরণ করি। ঠিক বড় হয়েও তদ্রুপ। আমি বাবার মতো সমাজসেবার পথ বেছে নিয়েছি। কেননা, বাবার সাথে আমার অনেক মিল। বাবাই আমার আমার স্বপ্ন ও পথ প্রদর্শক।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন