বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

মুজিব বর্ষে দেশ শতভাগ বিদ্যুতের আওতায় আসবে

গণভবনে প্রধানমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৪ নভেম্বর, ২০১৯, ১২:০১ এএম

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ২০২০-২১ সাল হচ্ছে মুজিব বর্ষ। এই মুজিব বর্ষে দেশবাসীকে শতভাগ বিদ্যুতের আওতায় আনা হবে। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে পুরো দেশ আলোকিত হবে। দেশকে শতভাগ বিদ্যুৎ সরবরাহের আওতায় আনতে কাজ করে যাচ্ছে সরকার।
গতকাল সাতটি বিদ্যুৎকেন্দ্র ও ২৩ উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুতায়ন প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এসব বিদ্যুৎকেন্দ্র উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ২০২০ সালের মার্চ থেকে ২০২১ সালে মার্চ পর্যন্ত বাংলাদেশ মুজিব বর্ষ পালন করবে।
অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা বলেন, আল্লাহর ইচ্ছায়, আমরা মুজিব বর্ষের মধ্য শতভাগ বিদ্যুৎ সরবরাহে কাজ করছি। অন্ধকারে কেউ থাকবেন না। প্রত্যন্ত এলাকাসহ সবার ঘরে বিদ্যুতের সরবরাহ নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে সরকার।
বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হওয়ার পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ দেশটা আমাদের। দেশের ও জনগণের সম্পদ রক্ষা করা সবার দায়িত্ব। সম্পদ যেন নষ্ট না হয়, সেদিকে সবাইকে লক্ষ রাখতে হবে। এর মাধ্যমে আমরা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলতে পারব।

উন্নয়ন সর্বত্র ছড়িয়ে দেয়ার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পরিকল্পিতভাবে আমরা বিদ্যুৎ উৎপাদন, সরবরাহ ও সঞ্চালন করে যাচ্ছি। যার সুফল দেশের মানুষ পাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধন করা ৭টি বিদ্যুৎকেন্দ্র হলোÑ আনোয়ারা ৩০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র, রংপুরে ১১৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র, কর্ণফুলীতে ১১০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র, শিকলবাহায় ১০৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র, পটিয়ায় ৫৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র, তেঁতুলিয়ায় ৮ মেগাওয়াট সোলার বিদ্যুৎকেন্দ্র ও গাজীপুরে ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র।

নতুন এ সাতটি বিদ্যুৎকেন্দ্রে থেকে ৭৯০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যোগ হওয়ায় গতকাল থেকে দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ২২ হাজার ২৬২ মেগাওয়াটে উন্নিত হয়েছে। এর মাধ্যমে দেশের ৯৪ শতাংশের বেশি জনগণ বিদ্যুৎ সংযোগের আওতায় এসেছে। শতভাগ বিদ্যুতায়নে নিতে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ২০২১ সালের মধ্যে ২৪ হাজার মেগাওয়াট এবং ২০৩০ সালের মধ্যে ৪০ হাজার মেগাওয়াটে নিতে ব্যাপক কর্মসূচির বাস্তবায়ন করছে। প্রধানমন্ত্রী জানান, সরকার ২০২১ সালের মধ্যে ২৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সক্ষমতা অর্জনের লক্ষ্যে দ্রæত কাজ করছে।
শতভাগ বিদ্যুতায়নের আওতাধীন ২৩ উপজেলা হলো বগুড়ার গাবতলী, শেরপুর, শিবগঞ্জ, চট্টগ্রামের লোহাগাড়া, ফরিদপুরের মধুখালী, নগরকান্দা, সালথা, গাইবান্ধার ফুলছড়ি, গাইবান্ধা সদর, পলাশবাড়ী, হবিগঞ্জের মাধবপুর, নবীগঞ্জ, ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ, মহেশপুর, কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ, নাটোরের বড়াইগ্রাম, লালপুর, সিংড়া, নেত্রকোনার বারহাট্টা, মোহনগঞ্জ এবং পিরোজপুরের ভাÐারিয়া, কাউখালী ও ইন্দুরকানী। এসব উপজেলা গতকাল থেকে শতভাগ বিদ্যুতের আওতায় এসেছে।

বিদ্যুৎ বিভাগ জানায়, এই বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো উদ্বোধনের ফলে দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা এখন হয়েছে ২২ হাজার ৫৬২ মেগাওয়াট। একই সঙ্গে দেশের ৯৫ শতাংশ মানুষ বিদ্যুতের সুবিধার আওতায় এসেছে। পাশাপাশি দেশের ৪৬১টি উপজেলার মধ্যে ২৩৪টি উপজেলা শতভাগ বিদ্যুতের আওতায় এল। আরও ১২৭ উপজেলায় শিগগিরই শতভাগ বিদ্যুতায়ন সম্ভব হবে, যেগুলো এখন উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে। এ ছাড়া বাকি একশ’ উপজেলায় আগামী ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে ২০২১ সালের ২৬ মার্চ পর্যন্ত মুজিববর্ষ উদযাপনকালে বিদ্যুতায়ন করা হবে। বর্তমান সরকারের লক্ষ্য ২০২১ সাল নাগাদ দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ২৪ হাজার মেগাওয়াট এবং ২০৩০ সাল নাগাদ ৪০ হাজার এবং ২০৪১ সাল নাগাদ ৬০ হাজার মেগাওয়াটে উন্নীত করা।
অনুষ্ঠানের মঞ্চে ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া, প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি এবং খনিজসম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী, বিদ্যুৎ, জ্বালানি এবং খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মো. শহীদুজ্জামান সরকার উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম, রেলপথমন্ত্রী মো. নুরুল ইসলাম, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী, আইসিটি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী মো. আশরাফ আলী খান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব মো. নজিবুর রহমান অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন। বিদ্যুৎ বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব আহমেদ কায়কাউস দেশের বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে একটি প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন। এ উপলক্ষে আয়োজিত ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী ফরিদপুর, নাটোর, পিরোজপুর ও খুলনা জেলার সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে স্থানীয় জনগণের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। পরে একটি পৃথক ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে ‘শেখ রাসেল ইন্টারন্যাশনাল ক্লাব কাপ টেনিস টুর্নামেন্ট-২০১৯’ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
মজলুম জনতা ১৪ নভেম্বর, ২০১৯, ৮:৪৬ এএম says : 0
বিদ্যুৎ খাতে সরকারের সবচেয়ে বড় সফলতা।এ কথাটা স্বীকার করতেই হবে।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন