বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

স্বাস্থ্য

রমজানে ভালো থাকার উপায়

প্রকাশের সময় : ২২ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম

রহমত, মাগফেরাত, নাজাতের মাস রমজান। মুসলমান মাত্রই একথা বিশ্বাস করে। সে কারণে একটু বেশি ইবাদাত-বন্দেগি সবাই করতে চায়। তাছাড়া রমজানে জীবনযাত্রা পাল্টে যায়। বদলে যায় অফিস টাইম। প্রাত্যহিক জীবনযাপন। এই পরিবর্তন অ্যাডডাস্ট হতে একটু সময় লাগে। প্রথম দিকে একটু কষ্ট হয়। পরে ঠিক হয়ে যায়। রমজানে সবচেয়ে ভালো থাকা সম্ভব। যদি না একটু খাবার-দাবার ভেবে খাওয়া হয়। একটু সচেতন থাকা যায়।
শাক-সবজি, ফলমুল, দুধ, দই খাওয়া ভালো। যে খাবার হজম হতে বেশি সময় লাগে। সে ধরনের খাবার বেছে নিন। আঁশ জাতীয় খাবার বেশি খেতে হবে। আঁশ জাতীয় খাবার হজম হতে সময় বেশি লাগে। অধিক ভাঁজা-পোড়া খাবার যেমন, বেগুনি, চপ, চিকেন ফ্রাই, গ্রিল যত কম খাবেন। তত ভালো থাকবেন। এসব খাবার বদহজম, বুক জ্বালাপোড়া ইত্যাদির জন্য দায়ী। হজমেও সমস্যা করে। সৃষ্টি করতে পারে এসিডিটি। ইফতারিতে রিচ ফুড যেমন বিরিয়ানি, তেহারি না রাখা ভালো। একটু কষ্ট  হয়। সে কারণে অনেকেই রোজার সময় ব্যায়াম থেকে বিরত থাকেন। এটি করবেন না। সকালে না হোক। ইফতারের পূর্বে কিছুক্ষণ হাঁটুন। ঘরে তৈরি ইফতারি খাবার চেষ্টা করুন। দোকানের সিংহভাগ ইফতারি মানসম্মত নয়। ভেজাল তৈল, ব্যাশন, কৃত্রিম রঙ ব্যবহার করা হয়। একই তেল বার বার ব্যবহারে পলি নিউক্লিলিয়ার হাইড্রোকার্বন তৈরি হয়। যার মধ্যে থাকে ক্যান্সার সৃষ্টিকারী বেনজা পাইরিন নামক পদার্থ। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে ইফতারি তৈরি হয়। তাই ভালো থাকার জন্য দোকানের ইফতারি পরিহার করা উত্তম। ইফতারিতে খেজুর, ফলের জুস, চিড়া, কলা, আপেল, একটা ডিম, মুড়ি, অল্পকিছু ছোলা (কাঁচা ছোলা হলে ভালো) থাকতে পারে। পানি খেতে হবে কমপক্ষে আট গাস। নামাজের আগে এবং পরে। দু’ভাগে ইফতার সম্পন্ন্ করা যেতে পারে। অতিরিক্ত খাবার ইফতারে পরিহার করতে হবে। ইফতারে অধিক আইটেম খাওয়া শরীরের জন্য ভালো নয়। এসিডিটি হতে পারে। হতে পারে বদহজম। পরিমিত পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। সাহরিতে ভাত বা রুটি সাথে সবজি, ডাল, একটুরো মাছ বা মাংস, এক বাটি সালাদ থাকতে পারে। সাহরি বেগুন চাটনি, পটল পাতুরী থাকতে পারে। করলা ভাজি উত্তম খাবার হতে পারে রোজাদারদের জন্য। বিশেষ করে যাদের ডাইবেটিশ আছে। খাবার শেষে এক গাস দুধ খাওয়া যেতে পারে। সাহরিতে অতি ভোজন দোষণীয়। বেশি খেলে ক্ষুধা কম লাগবে। এটা মনে করে অনেকেই গলা অবধি খান। পরে অসুস্থ হয়ে পড়েন। কারণ পাকস্থলির খাবার হজমের ক্ষমতারও একটা লিমিট আছে। বেশি খেলে ক্ষুধা কম লাগবে এটা ভুল ধারণা। বরং পরিমিত খেয়ে ভালো থাকা সম্ভব। রমজানে চা, কফি খাওয়া কমিয়ে দিন। এগুলো বেশি খেলে পানি শূন্যতা, কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। ধূমপানসহ অনান্য নেশাদ্রব্য ত্যাগ করুন। অনেকে পানে মুখভর্তি জদ্দা খান। জদ্দা তৈরি হয় তামাক দিয়ে। তামাক ক্যান্সারের সৃষ্টি করতে পারে। মুখের মধ্যে গুল ভরে রাখেন অনেকে। এটাও ক্ষতিকর। পানি খাবেন খানিকটা পর পর। ইফতারের পর থেকে। তারাবির নামাজে যাবার সময় হাতে একটা পানির বোতল নিয়ে যেতে পারেন। অনেকের লক্ষ্য থাকে, রমজানে ওজন কমাবেন। তারা শর্করা আছে এমন খাবার পরিহার করতে পারেন। আমিশজাত, সবজি খেয়ে পেট ভরুন। চিনিযুক্ত খাবার বাদ দিতে হবে। হালকা লেবুর শরবত খেতে পারেন। রমজান সংযমের মাস। উদরপূর্তির বেলায় এ সত্য ভুলে যাওয়া যাবে না। বেশি খেলে আর আত্মশুদ্ধি হলো কই? ইফতারের আয়োজন এমন না হয়। সাহরিতে এত পদ যেন না থাকে। যে খাদ্যের অপচয় হয়। সংযমের মাসে যেন আমরা অসংযমী না হই। একটু সচেতন হয়ে পরিমিত খাবার খেয়ে আমরা সকলে সুস্থ থাকতে পারি।
ষ মুহাম্মদ শফিকুর রহমান
ফ্রী ল্যান্স সাংবাদিক ও কলাম লেখক

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন