পাকিস্তানি মুদ্রায় ৭০০ কোটির টাকার জামিন বন্ডে অসুস্থ নওয়াজ শরিফকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দিল ইমরান খান সরকার। সেইসঙ্গে আরও কিছু শর্তারোপও করা হয়েছে। স্বভাবতই সরকারের এই শর্তে একমত হতে পারেননি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী, পিএমএল-এন সুপ্রিমো নওয়াজ শরিফ। নিজের চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাওয়ার সিদ্ধান্ত তিনি বাতিল করেছেন।
প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রীর বিদেশ যাওয়ার বিষয়ে মঙ্গলবারই একমত হয়েছিল ইমরান মন্ত্রিসভা। কিন্তু, কী শর্তে তিনি অনুমতি পাবেন, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয় বুধবারের বৈঠকে। শর্তে বলা হয়েছে, শরিফকে একবারই বিদেশ যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে। চার সপ্তাহের জন্য এই অনুমতি। তার মধ্যে তাকে ফিরে আসতে হবে। সরকারের শর্ত জানার পরেই নওয়াজ শরিফ তা প্রত্যাখ্যান করেন। পিএমএল-এন সুপ্রিমোর কথায়, ‘সরকারের এই দাবি বেআইনি।’ তিনি যে এই শর্তে বিদেশ যাবেন না, তা-ও স্পষ্ট করে দেন।
রক্তের এক বিরল অসুখে ভুগছেন নওয়াজ শরিফ। প্লাটিলেট কাউন্ট অস্বাভাবিক হারে নেমে যাচ্ছে। স্টেরয়েড দিয়ে অবস্থা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেও, ব্যর্থ হন লাহোরের সার্ভিসেস হাসপাতালের ডাক্তাররা। স্টেরয়ড বন্ধ করলেই, প্লাটিলেট কাউন্ট কমছে। দু-সপ্তাহ ধরে তাকে হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা করেও সুস্থ করে তুলতে ব্যর্থ হন ডাক্তাররা। নওয়াজ শরিফকে তারা বিদেশে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন।
একমাত্র মেয়ে মরিয়ম নাওয়াজ দুর্নীতির মামলায় হাইকোর্টে থেকে জামিনে ছাড়া পাওয়ার পর বাবাকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর তোড়জোড় শুরু করেন। ঠিক হয়, লন্ডনের হাসপাতালে চিকিৎসা হবে শরিফের। সেইমতো সরকারের কাছেও আবেদন জানানো হয়। মঙ্গলবার পাক সরকার সবুজসংকেত দেওয়ায়, ঠিক হয়েছিল রোববার সকালেই এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সে লন্ডনে উড়ে যাবেন নওয়াজ শরিফ। লাহোরে এয়ার অ্যাম্বুল্যান্স আনানোর ব্যবস্থাও হয়। কিন্তু, শেষ মহূর্তে পাক সরকারের সিদ্ধান্তে শরিফ বেঁকে বসায়, তার স্বাস্থ্য নিয়ে সংকট তৈরি হল। যে ভাবে প্লাটিলেট কাউন্ট কমছে, তাতে তার জীবনহানির আশঙ্কা করছেন ডাক্তাররা। নওয়াজ শরিফেরও তা অজানা নয়। সূত্র: টিওআই।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন