বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

গৌহাটির হারানো স্বর্ণ কাঠমন্ডুতে ফিরবে তো?

জাহেদ খোকন | প্রকাশের সময় : ১৬ নভেম্বর, ২০১৯, ১২:০০ এএম

দক্ষিণ এশিয়ার অলিম্পিক খ্যাত সাউথ এশিয়ান (এসএ) গেমস পুরুষ ফুটবলে ৯ বছর আগে সেরার খেতাব জিতেছিল বাংলাদেশ। ২০১০ সালে ঢাকা এসএ গেমসে স্বর্ণ জিতলেও পরের আসরেই গৌহাটিতে তা হাতছাড়া করে লাল-সবুজরা। শুধূ সোনাই নয়, রুপাও ভাগ্যে জুটেনি তাদের। ফলে ২০১৬ সালে গৌহাটি-শিলং এসএ গেমসে ব্রোঞ্জপদক নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয় বাংলাদেশ পুরুষ ফুটবল দলকে। তবে এবার প্রেক্ষাপট ভিন্ন। ব্রিটিশ প্রধান কোচ জেমি ডে’র ছোঁয়ায় যেন দিনকে দিন বদলাচ্ছে বাংলাদেশের ফুটবল। বিশেষ করে ২০২২ কাতার বিশ্বকাপ ও ২০২৩ এশিয়ান কাপের বাছাই পর্বে জাতীয় দলের খেলা দেখে তাই মনে হচ্ছে দেশের ফুটবলবোদ্ধাদের। তাই তারা আশা করছেন আসন্ন নেপাল এসএ গেমসে স্বর্ণ পুনরুদ্ধার করবে লাল-সবুজরা। কিন্তু তা কি সম্ভব! লাল-সবুজ ফুটবলে গৌহাটির হারানো স্বর্ণ কাঠমান্ডুতে ফিরবে কি? দেশের ফুটবলপ্রেমীদের মনে যখন এমন প্রশ্ন ঠিক তখনই আশা দেখাচ্ছেন জাতীয় দলের ব্রিটিশ কোচ জেমি ডে। তিনি মনে করেন গৌহাটির হারানো স্বর্ণ কাঠমান্ডুতে ফিরে পাওয়ার বা পুনরুদ্ধারের সামর্থ্য রয়েছে বাংলাদেশ দলের। জেমি বলেন, ‘এসএ গেমসে আমি সরাসরি চ্যাম্পিয়ন হওয়ার কথা বলব না। তবে আমাদের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সামর্থ্য রয়েছে এটা বলব। ছেলেদের মধ্যে সেই আতœবিশ্বাস জন্মেছে।’

চলতি মাসেই মাঠে গড়ানোর কথা ছিল বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ আন্তর্জাতিক ফুটবল টুর্নামেন্টের। দিনক্ষণও চূড়ান্ত ছিল। ২১ নভেম্বর আন্তর্জাতিক এই টুর্নামেন্টের ষষ্ঠ আসরের খেলা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও ক’দিন আগে হঠাৎ করেই বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) ঘোষণা দেয় পূর্ব নির্ধারিত তারিখে এই টুর্নামেন্ট আয়োজন সম্ভব হচ্ছে না। আর এই ঘোষণায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন কোচ জেমি। তার কথায়,‘ছেলেদের একটু বিশ্রাম ও রিকভারি প্রয়োজন ছিল। এসএ গেমসের আগে এখন রিকভারির সময় বেশি পাওয়া যাবে। ফলে কাঠমান্ডুতে স্বাচ্ছন্দে খেলতে পারবে তারা।’

আগামী ১ থেকে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত নেপালের কাঠমান্ডু ও পোখরায় বসছে এসএ গেমসের ১৩তম আসর। আসরেরর ২৭ ডিসিপ্লিনের মধ্যে বাংলাদেশ অংশ নিচ্ছে ২৫টিতে। যেখানে গুরুত্বপূর্ণ ডিসিপ্লিনগুলোর অন্যতম ফুটবল। গেমসের ফুটবলে এবার লাল-সবুজের পুরুষ দল খেললেও অংশ নিচ্ছে না নারীরা। ফলে যত আশা পুরুষ ফুটবলারদের ঘিরেই।

সব সময়ই এসএ গেমসের পুরুষ ফুটবলে অনুর্ধ্ব-২৩ দল খেলে থাকে। যেই দলে তিন জন সিনিয়র ফুটবলার খেলাতে পারে অংশগ্রহণকারীরা। নেপাল এসএ গেমসের জন্য কোচ জেমি ইতোমধ্যে তিনজন সিনিয়র ফুটবলার চূড়ান্ত করেছেন।

এরা হলেন- ফরোয়ার্ড নাবীব নেওয়াজ জীবন, জাতীয় দলের অধিনায়ক ও মিডফিল্ডার জামাল ভূইয়া এবং ডিফেন্ডার ইয়াসিন খান। গোলবারে অনুর্ধ্ব-২৩ দলের আনিসুর রহমান জিকোর উপরই ভরসা রাখছেন জেমি। আশরাফুল ইসলাম রানা বিশ্বকাপ বাছাইয়ে দুর্দান্ত খেললেও সিনিয়র কোটা পূরণ হওয়ায় তাকে এসএ গেমস দলে নিতে পারছেন না কোচ।

বাংলাদেশ জাতীয় ও যুব দলে অতীতে গোলকিপিংয়ে বড় সমস্যা থাকলেও এখন তা আর মনে করছেন না ব্রিটিশ কোচ। সিনিয়র রানার পরেই তাই তিনি জিকোর উপর ভরসা রাখছেন। জেমি বলেন, ‘জিকো ঘরোয়া লিগে ভালো খেলেছে। সে দলে ডাক পাওয়ার যোগ্য।’ নেপাল এসএ গেমস ফুটবলের গ্রুপিং এখনো হয়নি। কিন্তু এরই মধ্যে ভারতকে ফেভারিট মনে করছেন বাংলাদেশের ব্রিটিশ কোচ,‘আমাদের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী ভারতই। তবে আমরা তাদের মোকাবেলার জন্য প্রস্তুত।’

জাতীয় দলের একাদশে রয়েছেন অনূর্ধ্ব-২৩ দলের ছয় ফুটবলার। সাম্প্রতিক সময়ে জাতীয় দলের পারফরম্যান্স জেমিকে স্বপ্ন দেখাচ্ছে নেপাল এসএ গেমসে ভালো কিছু করার। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন,‘ছেলেরা একটা গতির মধ্যে রয়েছে। বেশ ভালো ফুটবলই খেলছে তারা। এই ধারা এসএ গেমসে ধরে রাখতে পারলে অবশ্যই ভালো কিছু পাওয়া সম্ভব।’ এখন দেখবার বিষয় কোচের আশা কতটা পূরণ করতে পারেন ফুটবলাররা।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন