শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

১৯ বছরেও হয়নি এমপিওভুক্তি

মহম্মদপুরের ছোট কলমধারী দারুস সুন্নাহ দাখিল মাদরাসা

স্টাফ রিপোর্টার, মাগুরা থেকে | প্রকাশের সময় : ১৭ নভেম্বর, ২০১৯, ১২:০২ এএম

মাগুরা মহম্মদপুর উপজেলার ছোট কলমধারী দারুস সুন্নাহ দাখিল মাদরাসা গত ১৯ বছরেও এমপিও হয়নি। গত ২০০০ সালে প্রতিষ্ঠিত। মাদরাসাটি ১৯ বছর ধরে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আলো ছড়িয়ে যাচ্ছে। কোনো ভবন না থাকায় অসমাপ্ত দুটি ঝুঁকিপূর্ণ টিনের ঘরে চলে পাঠদান। ফলে একদিকে শিক্ষকরা যেমন অসহায়ের মত মানবেতর জীবনযাপন করছেন অন্যদিকে শিক্ষার্থীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পাঠ গ্রহণ করছে।
জানা যায়, ২০০০ সালে উপজেলার ছোট কলমধারী এলাকায় প্রতিষ্ঠিত হয় ছোট কলমধারী দারুস সুন্নাহ দাখিল মাদরাসা। শিক্ষক ও জনপ্রতিনিধিদের কিছু সহায়তায় মাদরাসার দুটি অসমাপ্ত টিনের ঘর ও একটি ফুল ওয়াল টিনের ঘর স্থাপন করা হয়। বর্তমানের প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী রয়েছে ২৯৫ জন। শিক্ষক ১৪ জন এবং কর্মচারী রয়েছে ৩ জন। প্রতিষ্ঠানে আছে বিরাট খেলার মাঠ ও খোলামেলা পরিবেশ। প্রধান শিক্ষকের দক্ষতা ও নিষ্ঠাবান শিক্ষকের কারণে ইবতেদায়ী সমাপনী, জেডিসি ও দাখিল পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করেছে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। এরকম সব ধরণের শর্ত পূরণ করা স্বত্তেও প্রতিষ্ঠার দীর্ঘ ১৯ বছর পরও মাদরাসাটি এমপিওভুক্ত হয়নি।

শিক্ষক ও কর্মচারীরা জানান, সংসারের হাল ধরতে এই প্রতিষ্ঠানে চাকরি নেন শিক্ষক ও কর্মচারী। ভেবেছিলেন একদিন আলোর মুখ দেখবেন। কিন্তু চাকরি জীবনের বেশির ভাগ সময় অতিবাহিত হলেও সেই সুখ নামের অচিন পাখির দেখা আজো মেলেনি। একদিকে শিক্ষার্থীদের বেতন নেই অন্যদিকে এমপিওভুক্ত না হওয়ায় সরকারি কোষাগার থেকে বেতনভাতা না পেয়ে তারা মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, বৃষ্টির সময় বেশি সমস্যা হয়। সামান্য বৃষ্টি হলেই ঘরের ভেতরে পানি পড়ে বইখাতা ভিজে যায়। তাছাড়া ঝড়ের সময় ভয়ে থাকতে হয়। ঝড় আসার পূর্বেই অনেকে পার্শবর্তী বাড়িতে আশ্রয় গ্রহণ করে থাকে। এক শিক্ষক জানান, জীবনে সুখ কি সেটা কখনো অনুভব করতে পারিনি। মধ্যবিত্ত পরিবারে অনেক কষ্টে বড় হয়েছি। নিজের লেখাপড়া শেষ করে বাবা মা, ভাই বোন, স্ত্রী সন্তান নিয়ে একসাথে দুবেলা অন্য যোগাড়ের আশায় এই প্রতিষ্ঠানে পাঠদান শুরু করি। কিন্তু ভাগ্যের এতটাই নির্মমতা সেটা আজো হয়নি। পরিবারের কাছে নিজেকে আজ বড় অযোগ্য মনে হয়। কথাগুলো বলতে গিয়ে তার চো থেকে পানি গড়িয়ে পড়তে থাকে।
মাদরাসার সুপার মিজানুর রহমান জানান, অসমাপ্ত টিনের ঘরে ঝুঁকি নিয়ে পাঠদান চালু রেখেছি। শিক্ষক ও জনপ্রতিনিধিদের কিছু সহায়তায় পাঠদানের জন্য দুটি টিনের ঘর নির্মাণ করা হলেও টাকার অভাবে তা আজ পর্যন্ত্র সম্পন্ন করা হয়নি। ঘরগুলোর বেড়া ও জানালা নেই। চালার টিনগুলো ফুটো হয়ে গেছে। মাদরাসাটি অবহেলিত থাকায় শিক্ষক ও এলাকাবাসী হতাশা প্রকাশ করেছেন। মাদরাসাটির উন্নয়নে সংশ্লিষ্টদের সুদৃষ্টি কামনা করেন তিনি।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আসিফুর রহমান বলেন, মাদরাসার ভবন ও এমপিওর বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের অবহিত করা হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন