বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

মওলানা ভাসানীর আজ ৪৩তম মৃত্যুবার্ষিকী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৭ নভেম্বর, ২০১৯, ১২:০১ এএম

মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ৪৩তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ১৯৭৬ সালের এই দিনে তিনি ইন্তেকাল করেন। মওলানা ভাসানী তাঁর দীর্ঘ কর্মময় জীবনে সাধারণ মানুষের বেঁচে থাকার অধিকার, জীবনমান উন্নয়ন এবং সমাজ-রাষ্ট্রে গণমানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম করে গেছেন নিরলসভাবে।

দিবসটি যথাযোগ্যভাবে পালনের জন্য বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এ উপলক্ষে টাঙ্গাইলের সন্তোষে মরহুমের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন, আলোচনা সভা ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। মওলানা ভাসানী মৃত্যুবার্ষিকী পালন জাতীয় কমিটি, আওয়ামী লীগ, বিএনপি, স্থানীয় প্রশাসন, ভাসানী স্মৃতি পরিষদ, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, মওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ন্যাপ-ভাসানী, গণদল, বাংলাদেশ ন্যাপসহ বিভিন্ন সংগঠন পৃথক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

মওলানা ভাসানী ১৮৮০ সালের ১২ ডিসেম্বর সিরাজগঞ্জ শহরের অদুরে সয়া ধানগড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা আলহাজ শরাফত আলী খান ও মা মজিরন বিবিকে হারানোর পর কৈশোরেই উপমহাদেশের প্রখ্যাত সূফী সৈয়দ নাসির উদ্দিন আহমদ বোগদাদীর (র: আ:) অনুসারি হন। যৌবনের উন্মেষে চিরদিনের জন্য গৃহত্যাগী হন। সূফীর সহচর্যে ময়মনসিংহ শহরের উপকন্ঠে তিন বৎসর কাটিয়ে আসামে চলে যান। সেখানে ধুবরী মহকুমার জলেশ্বর গ্রামে সৈয়দ নাসির উদ্দিন আহমদ বোগদাদীর (রহ:) তত্ত¡াবধানে কালক্রমে তাসাউফের সাধনা সমাপ্ত করেন। একই সাথে নেন কিতাবী শিক্ষা। সৈয়দ নাসিরউদ্দিন আহমদ বোগদারীর (রহ: আ:) নির্দেশে উত্তর ভারতের দেত্তবন্দ দারুল উলুম- এ অবস্থান করেন। সেখানে শায়খুল হিন্দ মওলানা মাহমুদুল হাসান ও শায়খুল ইসলাম সৈয়দ হেসোইন আহমদ মাদানীর প্রত্যক্ষ সাহচার্যে শিক্ষা লাভ করেন। এদের সাহচর্যেই রবুবিয়াতের রাজনৈতিক দর্শন শিক্ষা লাভ হয়।

১৯১১ সালে মওলানা মোহাম্মদ আলীর সান্নিধ্যে এসে রাজনীতিতে নামেন। ১৯১৭-১৮ সালে তিনি প্রবাসী সরকারের নেতৃত্বে তুরস্কের সাহায্যে ভারতবর্ষ স্বাধীন করার পরিকল্পনা রেশমী রুমাল আন্দোলন করেন এবং ’১৯ সালে কারাবরণ করেন। দেশবন্দু চিত্তরঞ্জন দাসের সাহচর্য লাভ করেন, দেশবন্ধুর স্বরাজ আন্দেলনে অংশ নেন। খিলাফত আন্দোলন ও অসহযোগ আন্দোলনে যোগদান করেন। তিনি ১৯২৫ হতে ১৯২৭ আসামে ও পূর্ব বাংলায় কৃষক-মজুরদের স্বার্থে সংগঠন গড়ে জমিদার ও সুদখোর মহাজনবিরোধী আন্দোলন করেন। ১৯২৮ সালে কলকাতায় খিলাফত সম্মেলন ও ১৯২৯ সালে আসামের ভাসান চরে দ্বিতীয় বারের কৃষক- প্রজা সম্মেলনে যোগদেন।

বন্যাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অধিকার ভাসানী ১৯৩৬ সালে কংগ্রেস ত্যাগ করে মুসলিম লীগে যোগদেন। আসামের প্রাদেশিক মুসলিম লীগের সভাপতি হন। ১৯৩৭ সালে আসামে কুখ্যাত লাইন প্রথাবিরোধী আন্দোলন করেন এবং আসাম প্রাদেশিক পরিষদে বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় সদস্য নির্বাচিত হন। সালে ১৯৪৬ পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে করেন। ১৯৪৭ সালের ৫ মার্চ আসামে আন্দোলনের ডাক দেন অত:পর বাংলাদেশে ফিরে আসেন। ১৯৪৮সালের ১৭ মার্চ পূর্ব বাংলার ব্যবস্থাপক সভায় বাংলা ভাষার পক্ষ সমর্থনে পাকিস্তনে সাপ্তাহিক ইত্তেফাক প্রকাশ করেন।

১৯৪৯ সালের ২৩ জুন আওয়ামী মুসলিম লীগের প্রতিষ্ঠা করে সভাপতি হন। ১৯৫৫ সালের ১৫ জুন পূর্ব বাংলার স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে ঐতিহাসিক পল্টন ময়দানে জনসভা করেন। ১৯৫৭ সালের ৬ থেকে ১১ ফেব্রæয়ারি ঐতিহাসিক কাগমারী সম্মেলনে পশ্চিম পাকিস্তানের উদ্দেশে বিখ্যাত ‘আসসালামু আলাইকুম’ ঘোষণা করেন। ওই বছরের মার্চ মাসে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর সঙ্গে রাজনৈতিক বিরোধে আওয়ামী লীগ ত্যাগ এবং ২৬ জুলাই ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি প্রতিষ্ঠা করেন।

১৯৬৫ সালে আইয়ুববিরোধী নির্বাচনে মিস ফাতেমা জিন্নাহর পক্ষে অংশগ্রহণ করেন। পাক-ভারত যুদ্ধে দেশপ্রেমিকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। ১৯৬৬ সালে ন্যাপের পক্ষ থেকে ১৪ দফা দাবি উত্থাপন করেন, ১৯৬৮ সালে আইয়ূবের পতনের লক্ষে ১০ দফা ‘দাবি সপ্তাহ’ পালন। ১৯৬৯ সালে আইয়ুব আহূত গোলটেবিল বৈঠক বর্জন। ১৯৭০ সালের জানুয়ারিতে সন্তোষে ঐতিহাসিক কৃষক সম্মেলন, পাকিস্তানের টোবাটেক সিং-এ মার্চে কৃষক সম্মেলন, পাঁচবিবির মহিপুরে এপ্রিলে কৃষক সম্মেলন করেন। ৪ ডিসেম্বর পল্টনের জনসভায় স্বাধীন পূর্ব পাকিস্তান ঘোষণা দিয়ে বলেন, ‘লাকুম দ্বীনুকুম ওয়ালইয়া দ্বীন’।

স্বাধীনতার পর তিনি দীর্ঘদিন গৃহবন্দি ছিলেন। কিন্তু গণমানুষের বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলন করেছেন। ১৯৭২ সালে আলোড়ন সৃষ্টিকারী সাপ্তাহিক হক- কথা প্রকাশ করেন। ৯ এপ্রিল ঢাকার পল্টন ময়দানে স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথম জনসভায় ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দেন। তিনি আওয়ামী লীগের দুঃশাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলনের ডাক দেন। দেশব্যাপী দুর্ভিক্ষের প্রেক্ষাপটে ১৯৭৪ ভাসানীর দেশব্যাপী ভুখা মিছিল আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নাড়া দেয়। ১৯৭৬ সালে ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত ফারাক্কা মিছিলের ডাক। ১৬ ও ১৭ মে রাজশাহী হতে কানসাট পর্যন্ত ফারাক্কা অভিমুখে লংমার্চের নেতৃত্ব দেন। ১৭ নভেম্বর ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন।

মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ আব্দুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক পৃথক বাণী দিয়েছেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (8)
MD Anowar Gazi ১৭ নভেম্বর, ২০১৯, ১:০৯ এএম says : 0
হে নেতা লক্ষ কোটি সালাম আপনাকে,,,আল্লাহ পাক আপনাকে জান্নাতের উচ্চ মাকাম দান করুক। আমিন,,,
Total Reply(0)
Mahdi Hasan ১৭ নভেম্বর, ২০১৯, ১:০৯ এএম says : 0
আল্লাহ উনার সকল ভুল ত্রুটি ক্ষমা করে, জান্নাত নসীব করুন
Total Reply(0)
Mahidul Amin ১৭ নভেম্বর, ২০১৯, ১:০৯ এএম says : 0
উনার প্রতি লাখো সালাম, আল্লাহ পাক তাকে জান্নাতুল ফেরদৌস দান করেন,আমিন।
Total Reply(0)
Bashir Mahmudi ১৭ নভেম্বর, ২০১৯, ১:১০ এএম says : 1
মজলুম জননেতা মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাষানী (ভাষানী হুজুর) দেশ ও জাতির জন্য অনেক অবদান রেখেছেন। দেশ ও জাতির দুঃসময হুংকার ও খামোশ বলতেন। দিক-নির্দেশনা দিতেন। আজ দেশে ভাসানী হুজুরের মতো নেতৃত্বের অভাব। ভাষানী হুজুরের রুহের মাগফিরাৎ ও জান্নাতুল ফিরডাউসের জন্য দোয়া ও কামনা করি। আমিন।
Total Reply(0)
Rafiqul Islam Folik ১৭ নভেম্বর, ২০১৯, ১:১০ এএম says : 0
বাংলাদেশ আওয়ামী মুসলিমলীগের প্রতিষ্ঠাতা। হে নেতা লক্ষ কোটি সালাম আপনাকে,,,আল্লাহ পাক আপনাকে জান্নাতের উচ্চ মাকাম দান করুক। আমিন,,,
Total Reply(0)
Salman Khan Salman ১৭ নভেম্বর, ২০১৯, ১:১০ এএম says : 0
উনি তো আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা ঊনার মৃত্যুবার্ষিকীতে আওয়ামী লীগ তাকে কতটুকু স্মরণ করে।
Total Reply(0)
মজলুম জনতা ১৭ নভেম্বর, ২০১৯, ৬:৪০ এএম says : 0
মজলুম জননেতা মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী ছিলেন দেশ প্রেমিক। বাংলাদেশের মজলূম জনতার একমঅত্র নেতা।মনোনশীল রাজনিতির অন্যতম পুরোধা।তার আত্নার মাগফিরাত কামনা করি।১৯সে নভেম্বর মেজর জলিলের মৃর্ত বার্ষিকী।সকল দেশপ্রেমিক মুক্তিযোদ্ধাদের পালন করার জন্য আহবান যানাচ্ছি।
Total Reply(0)
Arif uddin ১৮ নভেম্বর, ২০১৯, ২:৩১ পিএম says : 0
আল্লাহ ভাসানী হুজুরকে জান্নাত দান করুন।
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন