বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

মুসলিমদেরও রাম মন্দিরের জন্য খুশি হওয়া উচিত : যোগগুরু রামদেব

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৭ নভেম্বর, ২০১৯, ৫:৩০ পিএম

ভারতের বহু প্রতীক্ষিত অযোধ্যার বাবরি মসজিদ ও রাম মন্দির নিয়ে করা মামলার রায় এরই মধ্যে সুপ্রিম কোর্টে ঘোষণা করা হয়েছে। রায়ে বাবরি মসজিদের বিরোধপূর্ণ জমি রামজন্মভূমি ট্রাস্টকে হস্তান্তরের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগই। সেক্ষেত্রে নতুন একটি মসজিদ নির্মাণে মুসলিমদের জন্য আলাদা স্থানে ৫ একর জমি বরাদ্দের নির্দেশও দেওয়া হয়।
গত ৯ নভেম্বর সকালে ঐতিহাসিক এই রায় ঘোষণা করা হয়। যেখানে প্রধান বিচারপতি ছাড়াও বেঞ্চে ছিলেন বিচারপতি এসএ বোবদে, ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, অশোক ভূষণ এবং এস আব্দুল নাজির। খবর ‘এনডিটিভির’।
এ দিকে বিতর্কিত মামলাটির রায় ঘোষণার পর মুখ খুলেছেন দেশটির যোগগুরু বাবা রামদেব। তিনি বলেছেন, ‘শুধু হিন্দুরাই কেন, মুসলিমদেরও রাম মন্দিরের জন্য খুশি হওয়া উচিত। আমার বিশ্বাস মুসলিমদের জন্যও রাম সমান গুরুত্বপূর্ণ।’
রামদেবের ভাষায়, ‘আমি বিশ্বাস করি ভারতের ৯৯ শতাংশ মুসলিমই আসলে ধর্মান্তরিত।’
শনিবার (১৬ নভেম্বর) অযোধ্যার রায় নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে রামদেব বলেন, ‘আমরা সবাই জানি, অযোধ্যার অর্থই ‘অজেয়’ তাই ওই স্থানে ভগবান রামের মন্দির নির্মাণ হবে এটাই স্বাভাবিক। ভারতের তো সর্বত্র ভগবান বিরাজ করে। খ্রিস্টানদের যেমন পবিত্র ভ্যাটিকানের ক্যাথলিক চার্চ আছে। তেমনই শিখদের আছে অকাল তখত। ঠিক এমনভাবে মুসলমানদের রয়েছে মক্কা। তেমনই হিন্দুদের পবিত্রতম মন্দির হিসেবে গড়ে উঠবে অযোধ্যার রাম মন্দির।’
অপর দিকে বিতর্কিত এই মামলাটির রায় ঘোষণার পর বিষয়টিকে পুনর্মূল্যায়নের দাবি তুলতে শুরু করেছেন দেশটির মুসলিম সমাজের অনেকেই। যদিও শুরুতে মুসলমানদের বড় একটি অংশ বলেছিল, সর্বোচ্চ আদালতের রায় তাদের মেনে নিতেই হবে। তবে গত এক সপ্তাহে মুসলিম সমাজের ধর্মীয়-সামাজিক নেতা এবং আইনজ্ঞদের অনেকেই সেই মনোভাব থেকে সরে এসেছেন।
যার অংশ হিসেবে রবিবার (১৭ নভেম্বর) বৈঠকে বসতে যাচ্ছে অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড। মূলত সেখানেই আদালতের এই রায়কে রিভিউ বা পুনর্মূল্যায়নের জন্য আবেদন করা হবে কি না তা নির্ধারিত হবে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে এরই মধ্যে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন বোর্ডের সচিব ও অযোধ্যার জমি মামলায় মুসলিম পক্ষের অন্যতম প্রধান আইনজীবী জাফরইয়াব জিলানি। তার মতে, ‘প্রথম থেকেই আমাদের মনে হচ্ছিল যে রিভিউ পিটিশন দাখিল করা উচিত। কেননা রায় প্রকাশের পরপরই কয়েকটি বিষয়ে ত্রুটি রয়েছে বলে অনেকের মনে হয়েছিল। সে জন্যই আমরা মনে করছি যে এটি রিভিউ হওয়া উচিত।’
অযোধ্যা মামলার মুসলিম পক্ষের এই আইনজীবী বলেছেন, ‘একটা কারণ হলো, এক নম্বর বাদী-ভগবান রামলালার মূর্তি, যেটি ১৯৪৯ সালে মসজিদের ভেতরে বসানো হয়েছিল, এরই মধ্যে সেটিকে বেআইনি বলে জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট। যে মূর্তিটিকে বেআইনিভাবে বসানো হয়েছিল এবার সেটিকেই জমির অধিকার দেওয়া হলো!’
তিনি আরও বলেন, ‘আদালত তো এটাও স্বীকার করেছেন যে ১৮৫৭ সাল থেকে ১৯৪৯ সাল পর্যন্ত সেখানে নামাজ পড়া হতো। যার অর্থ, সেই সময়েও মুসলিমদের দখলে ছিল এই জমিটি! তাই এই দুটো বৈপরীত্যের সঙ্গে রায়ের কিছুতেই মিল হচ্ছে না।’
এর আগে গত ১৬ অক্টোবর ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগইয়ের নেতৃত্বাধীন ৫ সদস্যের একটি যৌথ বেঞ্চ অযোধ্যা জমি বিতর্কের শুনানি সম্পন্ন করেন। তবে নিরাপত্তার স্বার্থে সে সময় আর রায় ঘোষণা করা হয়নি।
যদিও তখন থেকেই গুঞ্জন উঠছিল আগামী ১৭ নভেম্বর অবসরে যেতে পারেন রঞ্জন গগই। যে কারণে এর আগেই যে কোনো দিন ঐতিহাসিক এই মামলাটির রায় হতে পারে বলে শোনা যাচ্ছিল। মূলত এসব বিষয় বিবেচনা করেই অতি স্পর্শকাতর মামলার রায় ঘোষণার প্রস্তুতি সম্পন্ন করে প্রশাসন।
গত ৮ নভেম্বর রাতে প্রধান বিচারপতি গগই রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশাসনের সর্বোচ্চ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। এমনকি উত্তরপ্রদেশের মুখ্যসচিব এবং পুলিশ প্রধানের সঙ্গেও তার বিশেষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। মূলত সেই বৈঠকেই গগই অন্য বিচারকদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে তিনি অযোধ্যা মামলায় রায় ঘোষণার সিদ্ধান্ত নেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (2)
babu ১৭ নভেম্বর, ২০১৯, ৬:৪১ পিএম says : 0
The verdict of hte trial has been ons sided
Total Reply(0)
babu ১৭ নভেম্বর, ২০১৯, ৬:৪২ পিএম says : 0
judgment not right
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন