বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

দুই দফায় সময় বাড়িয়েও শেষ হয়নি দ্বিতীয় তিস্তা সেতু

প্রকাশের সময় : ২২ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম

গঙ্গাচড়া উপজেলা সংবাদদাতা : ধীরগতিতে চলছে উত্তরাঞ্চলের মানুষের স্বপ্ন দ্বিতীয় তিস্তা সড়ক সেতুর নির্মাণকাজ। নির্ধারিত সময় শেষে আরো দুই দফা সময় বাড়ানো হলেও তাতে কাজ শেষ হয়নি। এ অবস্থায় হতাশ ও ক্ষুব্ধ এই অঞ্চলের মানুষ। আর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দাবি, ৭০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। বাকি কাজ চলতি বছরেই শেষ হবে।
স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্র জানায়, ২০১২ সালের ২০ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দ্বিতীয় তিস্তা সড়ক সেতুর নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন। ২০১৪ সালের জুনে  সেতুর কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা না হওয়ায় ২০১৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়। তাতেও কাজ শেষ না হওয়ায় দ্বিতীয় দফায় চলতি বছরের জুন পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়।সরেজমিন জানা যায়, সেতুর ১৬টি পিলারের ওপর ৮৫টি গার্ডারের মধ্যে ৪০টি স্থাপন করা হয়েছে। ১৭টি স্প্যানের মধ্যে বসানো হয়েছে ৬টি। এসব কাজ শেষ হওয়ার পর সেতুর দুই দিকে রেলিং নির্মাণ করতে হবে। তারপর আলোর ব্যবস্থা। অন্যদিকে সেতুর উত্তর দিকে সংযোগ সড়ক নির্মিত হলেও দক্ষিণ দিকে এখনো সংযোগ সড়কের কাজ শুরু করা হয়নি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন প্রকৌশলী বলেন, সেতুটির এখনো অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ বাকি রয়েছে। সেই সঙ্গে বর্ষাকাল চলে এসেছে। চলতি বছরেও কাজ শেষ করা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
লালমনিরহাটের বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে উত্তরাঞ্চলের ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালিত হয়। এই বন্দর দিয়ে ভারত থেকে পাথর, ফল, কয়লা, কাচসহ আরো অনেক পণ্য আমদানি হয়ে আসে।  সেই সঙ্গে বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি হয়ে যায় জুস, বিস্কুটসহ আরো কিছু ভোগ্যপণ্য। এছাড়া ভারতের দার্জিলিংসহ আরো কিছু দর্শনীয় স্থানে যাওয়ার জন্যও বুড়িমারী স্থলবন্দর হয়ে যেতে হয়। রংপুর হয়ে গেলে লালমনিরহাট শহর হয়ে অনেক পথ ঘুরতে হয়। কিন্তু  সেতুটি নির্মিত হলে রংপুর থেকে সড়কপথে বুড়িমারী যেতে ৫০ কিলোমিটার পথ কমবে।
রংপুরের আমদানিকারক শাহজাহান বাবু বলেন, সেতুটি নির্মিত হলে রংপুর আসতে সময় অর্ধেকে নেমে আসবে। সেই সঙ্গে পরিবহন খরচও কমে যাবে।
এই বন্দর দিয়ে প্রায়ই চলাচল করেন প্রকৌশলী এ টি এম  মোহসীন। তিনি বলেন, স্থলবন্দরে যেতে লালমনিরহাট হয়ে ঘুরে চার ঘণ্টা সময় লাগে। সেতু হলে তা দেড় ঘণ্টায় নেমে আসবে। জরুরি ভিত্তিতে সেতুটির নির্মাণকাজ শেষ করার দাবি জানান তিনি।
সেতুটির এক প্রান্তে রংপুরের গঙ্গাচড়া ও অন্য প্রান্তে লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ। সেতুর দৈর্ঘ্য ৮৫০ মিটার ও চওড়া ৯ দশমিক ৫ মিটার। এটি নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ১২১ কোটি টাকা। এটি নির্মাণ করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ডব্লিউএমসিজি-নাভানা গ্রুপ।
জানতে চাইলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নাভানা কনস্ট্রাকশন লিমিটেডের প্রকল্প ব্যবস্থাপক সাধন কুমার পাল দাবি করেন, ইতোমধ্যে সেতুর নির্মাণকাজ ৭০ শতাংশ শেষ। দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করা সম্ভব হয়নি। আশা করা হচ্ছে, এ বছরই কাজ শেষ হবে।
এলজিইডির লালমনিরহাট কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী আল আমিন বলেন, সংযোগ সড়ক নির্মাণ করতে সময় লেগে যায়। এই সংযোগ সড়ক না থাকায় সেতুর কাছে মালামাল নিয়ে যেতে অনেক বেগ পেতে হতো। এখন একদিকে সংযোগ সড়ক নির্মিত হওয়ায় মালামাল নিয়ে যেতে সুবিধা হচ্ছে। তিনি চলতি বছরের মধ্যে কাজ শেষ করা সম্ভব হবে বলে মন্তব্য করেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন