শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

হংকংয়ে রাতভর সংঘর্ষ, বিক্ষোভকারীদের ওপর টিয়ার শেল পুলিশের প্রতি তীর নিক্ষেপ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৯ নভেম্বর, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

হংকংয়ের বিক্ষোভকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে তীর ও পেট্রোল বোমা ছুঁড়েছে। রোববার হংকং পলিটেকনিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাদ থেকে তীর ছোঁড়ার এই ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ জানিয়েছে, তাদের এক গণমাধ্যম সংযোগ কর্মকর্তার পায়ে তীর বিদ্ধ হয়েছে। আরেক অফিসারের মাথায় থাকা হেলমেটে ধাতব বল আঘাত হেনেছে। তবে তিনি কোনো ধরনের আঘাতপ্রাপ্ত হননি। বিক্ষোভকারীদের বহুল ব্যবহৃত এলাকা কৌলুন জেলার নাথান রোডে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ টিয়ার গ্যাস ছুঁড়েছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, কৌলুন জেলার মধ্যাঞ্চলে অবস্থিত হংকং পলিটেকনিকে শনিবার রাতভর পুলিশকে লক্ষ্য করে পেট্রোল বোমা ছোঁড়ায় আগুন জ্বলতে দেখা গেছে। বিক্ষোভকারীদেরকে তাদের অবস্থানস্থল থেকে বের করে খোলা স্থানে নিয়ে আসার জন্য পুলিশ বিপুল পরিমাণ টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করেছে। রোববার বিকেলে সংঘাত আরো ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশের জলকামান ব্যবহারের জবাবে তারা পেট্রোল বোমা ছোঁড়ে। ছাতার আড়াল নিয়ে ক্রস হার্বার টানেলে আশ্রয় নেওয়া বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গের চেষ্টা করেছে পুলিশ। এক বিবৃতিতে পুলিশ বলেছে,‘দাঙ্গাকারীরা বড় গুলতি দিয়ে পুলিশ কর্মকর্তাদের লক্ষ্য করে কঠিন বস্তু ও পেট্রোল বোমা ছুঁড়ছে। এ ধরনের গুলতি দিয়ে ৪০ মিটার দ‚রত্বে আঘাত হানা যায়। পুলিশ হংকং পলিটেকনিক ইউনিভার্সিটির সহিংস কর্মীদের সতর্ক করে দিয়ে জানিয়েছে, তারা দাঙ্গার স‚চনা করছে।’ সোমবার স্থানীয় সময় ভোর সাড়ে ৫টার দিকে ক্যাম্পাসের দখল নেওয়ার জন্য পুলিশ অগ্রসর হতে শুরু করলে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন সংঘর্ষ শুরু হয়। এক পর্যায়ে বিক্ষুব্ধ আন্দোলনকারীরা পুলিশের দিকে পেট্রোল বোমা ছুড়লে ক্যাম্পাসে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। কিছুক্ষণ সংঘর্ষ চলার পর পুলিশ পিছু হটে। ক্যাম্পাসের ভেতরে এখনও শত শত বিক্ষোভকারী রয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের দখল নিয়ে রাখা শিক্ষার্থীদের রবিবার সন্ধ্যার মধ্যে ক্যাম্পাস ছেড়ে যেতে বলা হলেও অনেকেই এখনও ক্যাম্পাসে রয়েছেন। পুলিশের মুখপাত্র লুইস লাউ এক ফেসবুক পোস্টে বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, ‘তারা যদি পুলিশের দিকে পেট্রোল বোমা, তীরের মত বিপজ্জনক অস্ত্র ছুড়ে মারা অব্যাহত রাখে; তাহলে গুলিবর্ষণ ছাড়া পুলিশের জন্য আর কোনও পথ খোলা থাকবে না।’ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও এক বিবৃতিতে ক্যাম্পাস দখলে রাখা বিক্ষোভকারীদের ক্যাম্পাস ত্যাগের আহ্বান জানিয়েছে। এর আগে শনিবার চীনা সেনারা টি-শার্ট ও হাফ প্যান্ট পরে রাস্তায় বিক্ষোভের ধ্বংসস্ত‚প পরিস্কার করে এবং ব্যারিকেড সরিয়ে দেয়। বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর এই প্রথম হংকংয়ে থাকা চীনা সেনাদের রাস্তায় দেখা গেলো। সাধারণত তারা ব্যারাক ছেড়ে বের হয় না। গত ৯ জুন থেকে সেখানে কথিত অপরাধী প্রত্যর্পণ বিল বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু হয়। আন্দোলনকারীদের আশঙ্কা, ওই বিল অনুমোদন করা হলে ভিন্নমতাবলম্বীদের চীনের কাছে প্রত্যর্পণের সুযোগ সৃষ্টি হবে। লাখো মানুষের উত্তাল গণবিক্ষোভের মুখে একপর্যায়ে ওই বিলকে ‘মৃত’ বলে ঘোষণা দেন হংকংয়ের চীনপন্থী শাসক ক্যারি ল্যাম। তবে এতে আশ্বস্ত হতে না পেরে বিক্ষোভ অব্যাহত রেখেছে সেখানকার নাগরিকরা। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে হংকংয়ের স্বাধীনতার দাবি। সর্বশেষ গত ৮ নভেম্বর বিক্ষোভ চলাকালে পুলিশের গুলিতে আহত এক শিক্ষার্থীর মৃত্যুতে অঞ্চলটির গণতন্ত্রপন্থীদের চীনবিরোধী বিক্ষোভ আরও তীব্র হয়ে ওঠে। বিবিসি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন