শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

রাবি প্রশাসনের দুর্নীতি তুলে ধরে শিক্ষকদের সংবাদ সম্মেলন

রাবি সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২১ নভেম্বর, ২০১৯, ৬:০১ পিএম

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, নিয়োগ বাণিজ্য, ক্ষমতার অপব্যবহার, অর্থের অপচয়, বিভিন্ন প্রকল্পের অর্থ লুটপাট, আইন লঙ্ঘন করে ভিসির অবসর ও পুনরায় দায়িত্ব গ্রহণ, একটি সেমিনারে “জয় হিন্দ” বলে দেশের সার্বভৌমত্বের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা, নিয়মবহির্ভূতভাবে অযোগ্যদের অস্থায়ী নিয়োগসহ বেশ কিছু বিষয় উল্লেখ করে তার প্রতিবাদ ও দূর্নীতিবাজদের অপসারনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেন দুর্নীতি বিরোধী শিক্ষকবৃন্দ। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একাডেমিক ভবনের শিক্ষক লাউঞ্জে এক সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য এসব অভিযোগ তোলেন। 

লিখিত বক্তব্যে সভাপতি প্রফেসর ড. মো. সুলতান-উল-ইসলাম টিপু বলেন, রাবি প্রশাসনের চলমান লাগামহীন দূনীতি যা দুদক পর্যন্ত পৌঁছে গেছে, এবং এটি আমাদের জন্য চরম লজ্জার।
তিনি ভিসি প্রফেসর আব্দুস সোবহানের দুর্নীতির প্রসঙ্গ তুলে ধরে বলেন, প্রথম মেয়াদে যখন তিনি উপাচার্য ছিলেন তখনও তার বিরুদ্ধে অভিযোগের সীমা ছিলো না। দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব পেয়েই আবারো তিনি দুর্নীতি ও অনিয়মের পাহাড় গড়ে তোলেন। এর মধ্যে অন্যতম হলোÑ কন্যা ও জামাতার যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও তাদের নিয়োগ দেয়ার জন্য শিক্ষক নিয়োগ নীতিমালা পরিবর্তন করে অন্যায়ভাবে তাদের নিয়োগ দেয়া, যা সুস্পষ্টভাবে সরকারের বর্তমান অভিন্ন নীতিমালার চরম লঙ্ঘন ও বড় ধরনের দুর্নীতি। কর্মচারি নিয়োগ নীতিমালা পরিবর্তন করে উদ্দেশ্যমূলকভাবে আবেদনের বয়সসীমা ৩০বছর থেকে ৩৫বছর করা, এবং নিয়োগ বোর্ড না করেই অর্ধশতাধিক নিকটআত্মীয়দের নিয়োগ দেয়া। ২১ জুন ২০১৭ সালে আইন লঙ্ঘন করে উপাচার্যের অবসর ও পুনরায় দায়িত্ব গ্রহণ, যা উপাচার্য পদের মর্যাদা ক্ষুণœ করে। প্রো-ভিসির নিয়াগ বানিজ্য নিয়ে ফাঁস হওয়া অডিও নিয়েও চুপ থাকে প্রশাসন এবং প্রো-ভিসির মেয়ে জামাতাকে নিয়োগ দেয়া হয় যার পূর্ব নীতিমালা অনুযায়ী দরখান্ত করার যোগ্যতা ছিলো না।
ভিসি বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯৭৩ সালের অ্যাক্ট ভঙ্গ করে আইন ও ভূমি প্রশাসন বিভাগে যোগ্য শিক্ষক থাকা সত্ত্বেও উদ্দেশ্যমূলকভাবে উক্ত বিভাগে নিয়োগ বাণিজ্য উদ্দেশ্যে সভাপতি নিয়োগ দেয়া হয় যা বেআইনি, এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সভাপতি নিয়োগেও এমন ঘটনা ঘটেছে বলে অভিয়োগ করেন তারা। ৭ পুকুর প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধের গবেষণা প্রকল্প বাস্তবায়নে মাঝ পথে বাতিল করে দেয়া হয়।
দুর্নীতির বিরোধী শিক্ষকদের আহ্বায়ক আরো বলেন, ভিসির অনুমোদনে প্রো-ভিসি চৌধুরী মো. জাকারিয়ার তত্ত্বাবধানে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালযয়ে সৌন্দর্য বর্ধনের নামে প্যারিস রোডসহ বিভিন্ন রাস্তায় অপরিকল্পিত উন্নয়ন, ঘাস লাগানো, আবার সেই ঘাস উঠিয়ে সেখানেই ফুটপাথ তৈরি করে সরকারি অর্থের অপচয় ও লোপাট করা হচ্ছে। স্বজনপ্রীতি করে রাবি স্কুলের শিক্ষক, হলের আবাসিক শিক্ষক, ও অযোগ্য ভায়রাকে খন্ডকালীন শিক্ষক নিয়োগ দেয়ার অভিযোগসহ শিক্ষা ও অভিজ্ঞতাহীন সরকারী কলেজের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষককে বরেন্দ্র রিসার্চ মিউজিয়ামের পরিচালক নিয়োগ দেন উপাচার্য।
অযোগ্যদের নিয়োগ, ১৯৭৩সালের আইন ভঙ্গকরে রেজিস্ট্রার নিয়োগ এবং ছাত্র উপদেষ্টার স্বামীর যোগ্যতা শিথিল করে প্রিন্সিপাল নিয়োগ দিয়ে পড়ালেখার মান ধ্বংস করা হচ্ছে বলে অভিয়োগ করেন উপস্থিত বক্তারা।
এছাড়াও, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায় পুরস্কার থাকা সত্ত্বেও উপাচার্য দায়িত্বগ্রহণের পর থেকে কোনো কারণ ছাড়াই তায়কোয়ান্দ বন্ধ করে দেয়া হয়।
এসময় তারা অভিযোগ করে বলেন, অনিয়ম, অন্যায়, দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা, স্বজনপ্রীতি ধামাচাপা দেবার জন্য তিনি প্রতিবাদকারী শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারির বিরুদ্ধে মামলা, তদন্ত কমিটি, এনওসি না দেয়া, পদোন্নতির ও বিভিন্ন ফাইল আটকে রাখাসহ নানা নির্যাতন - নিপীড়ন করে চলেছেন।
উক্ত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, বাংলা বিভাগের প্রফেসর সফিকুন্নবী সামাদী, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের প্রফেসর ড . মো . সাইফুল ইসলাম , প্রফেসর জিন্নাত আরা, প্রফেসর আলী রেজা অপু, মো . সোলায়মান চৌধুুরী, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর এক্রাম উল্লাহ, সঙ্গীত বিভাগের প্রফেসর অসিত রায় ও প্রফেসর পদ্মীনি দে , আইন বিভাগের প্রফেসর ড. বিশ্বজিৎ চন্দ, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের প্রফেসর দুুলাল চন্দ্র বিশ্বাস , ক্রীড়া উপ-পরিচালক মো. কামরুজ্জামান চঞ্চল প্রমুখ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন