শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

ফায়ার সার্ভিস ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে মতলবের আল-আমিন এতিমখানা ভবন পরিত্যক্ত ঘোষনা করার নির্দেশ

স্থানীয় সংসদ সদস্য ও প্রশাসনের পরিদর্শন

মতলব উত্তর (চাঁদপুর) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৪ নভেম্বর, ২০১৯, ৩:১৭ পিএম

চাঁদপুরে মতলব উত্তর উপজেলার ফরাজীকান্দি আল-আমিন এতিমখানা ভবনের দোতলার বারান্দার ছাদ ধ্বসে অন্তত অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে বর্তমানে চাঁদপুর জেলা সদর হাসপাতালে ১০জন, মতলব উত্তর ও মতলব দক্ষিণ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২২জন চিকিৎসাধীন রয়েছে।এছাড়াও ১৪ দুই হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসার দেয়ার পরে ছেড়ে দেয়া হয়। তবে গুরুতর আহত মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের শিক্ষার্থী সিয়ামসহ তিন শিক্ষার্থী ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিসাধীন রয়েছে।

চাঁদপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে স্কাউট শিক্ষক মোহাম্মদ হোসেন (৫২), শিক্ষার্থী সাব্বির(১৪), নাহিদ-১ (১২), আব্দুল্লাহ(১৩), নাহিদ-২(১২), আইনউদ্দিন(১৪), রিফাত(১৩), বিল্লাল(১২), সজিব(১৪), আব্দুল আজিক(১৫), সিহাব(১১), হোসাইন(০৯), ইব্রাহিম(১০)।

মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধিন রয়েছে ইমন(১৪), আবুল কাশেম(১৫), তানভীর(১৪), মাজহারুল ইসলাম(১৫), জয়নাল আবেদীন(১৬), ইসমাইল(১৪), আল-আমিন(১৩), মেহেদী হাসান(১৪), হাসিব(১৩), ইয়াছিন(১৫), রবিউল্লাহ(১৪)।

মতলব দক্ষিণ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধিন রয়েছে সুজন মিয়া(১২), আকরাম(১৪), শাফায়েত(১৩), তামীম(১২), রাকিব(১৩), হাবিব(১৪), আজহারুল(১৪), আহম্দে(১৫), আরিফ(১৩), ফয়সাল(১২), ইকবাল(১৩)।

এছড়াও দুলাল (১৫), আকরাম হোসেন(১৪), হাবিবুর রহমান(১৩), সুজন মিয়া(১২), মোহাম্মদ হোসেন(১৪), তরিকুল ইসলাম(১৫), রাকিবুল হাসান(১৪), আজহান উদ্দিন(১৩) সহ ১৪জন মতলব উত্তর, মতলব দক্ষিণ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও স্থানীয়ভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা নেয়।

ফরাজীকান্দি আল আমিন এতিমখানার আবাসিক কর্মকর্তা লিটন সরকার জানান- এতিমখানার ছাত্ররা ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের ঢাকা, চাঁদপুর স্টেডিয়াম ও মতলব উত্তর উপজেলা প্রশাসনের কুচকাওয়াজে অংশগ্রহণের জন্য তিনটি টিম পাঠিয়ে থাকে। শনিবার রাত পৌনে দশটায় মতলব উপজেলা প্রশাসনের বিজয় দিবস অনুষ্ঠানে ছোট বাচ্ছাদের যেই টিমটি পাঠানোর কথা সেই টিমটিকে নিয়ে স্কাউট শিক্ষক মোহাম্মদ হোসেন টিম মিটিং করা অবস্থায় চারতলা এতিমখানা ভবনের দ্বিতীয় তলার বারান্দার ছাদের একাংশ ধ্বসে পরে।
মাদ্রাসার ছাত্র ও এলাকাবাসীর সহায়তায় আহত ছাত্রদের উদ্ধার করে দ্রুত মতলব উত্তর ও মতলব দক্ষিণ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রেরণ করা হয়। পরবর্তীতে খবর পেয়ে চাঁদপুর জেলা প্রশাসক মাজেদুর রহমান খান, পুলিশ সুপার মাহবুবর রহমান, উপজেলা নির্বাহি অফিসার শারমিন আক্তার, সহকারি কমিশনার (ভুমি) আনোয়ার হোসাইন পাটোয়ারী, সহকারী পুলিশ সুপার মতলব সার্কেল আহসান হাবিব, মতলব উত্তর থানার ওসি নাছির উদ্দিন মৃধা ঘটনাস্থলে আসেন। ঘটনাস্থলে আসেন ফায়ার সার্ভিস এর একটি টিম।
ঘটনার পরদিন সকালে স্থানীয় সংসদ সদস্য এড. নুরুল আমিন রুহুল দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ দেখে এখানে নতুন ভবন নির্মাণের আশ্বাস দেন। তবে তাৎক্ষণিক বিকল্প বাসস্থানের জন্য আপাদত ১০ বান্ডেল ঢেউ টিন, ৩০ হাজার টাকা ও ৫০টি কম্বল বরাদ্দ দেন।

মাদ্রাসার ফাযিল প্রথম বর্ষের ছাত্র মো. ইসমাইল হোসেন ও হেফজ বিভাগের ছাত্র মো. আল হাসান বলেন, মাদ্রাসার এই ভবনটি দীর্ঘদিন ধরে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এ অবস্থায় আমরা এখানে লেখাপড়ার পাশাপাশি বসবাস করছি। ভবনটি পুরাতন হওয়ায় এই ঘটনাটি ঘটেছে।

স্থানীয় এলাকাবাসী আব্দুল বাতেন প্রধান বলেন, খবর পেয়ে আমরা রাতেই এলাকাবাসী দুর্ঘটনার শিকার ছাত্রদের উদ্ধার করে হাসপাতালে প্রেরণ করি।

তিনি জানান, ভবনটি পুরাতন হওয়ায় এখানে নতুন করে ভবন তৈরি করা প্রয়োজন। ভবিষ্যতে দুর্ঘটনা এড়াতে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের নিরাপদে শিক্ষাদানে নতুন ভবন তৈরির জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানাই।

চাঁদপুর ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক মো. ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, খবর পেয়ে আমরা রাতেই ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। ভবনটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। ভবন নির্মাণে কোনো ধরনের নিয়মনীতি ছিল না। বসবাসের অনুপযোগী ৩তলা ভবনটিতে সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দেয়া হবে।

মতলব উত্তর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন আক্তার বলেন, দুর্ঘটনার খবর জানার পরপরই আমরা ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। আহত শিক্ষার্থীদের প্রশাসনের পক্ষ থেকে চিকিৎসা সহায়তা দেয়া হচ্ছে। এখানে নতুন ভবন নির্মাণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন