বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

জিডিপি নির্ণয় সঠিকভাবে হয়নি বিশ্বব্যাংক

প্রকাশের সময় : ২৩ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১২:০২ এএম, ২৩ জুন, ২০১৬

অর্থনৈতিক রিপোর্টার : আগামী ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেটে জিডিপির (মোট দেশজ উৎপাদন) যে সংখ্যা নির্ণয় করা হয়েছে, তা সঠিকভাবে হয়নি বলে জানিয়েছেন বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের প্রধান অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন। তিনি বলেন, এ নিয়ে বিতর্ক আছে। কারণ এবারও বাজেটে জিডিপির ফোর কাস্টিংয়ে (পূর্বানুমান) গলদ রয়ে গেছে।
বুধবার সকালে রাজধানীর শেরে বাংলা নগরে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসে ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেট পর্যালোচনা বিষয়ক সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে জাহিদ হোসেন আরো বলেন, জিডিপির সংখ্যা নিয়ে যতই বিতর্ক থাকুক, গত কয়েক বছরে আমাদের অর্জন ভালো। তবে আগামী অর্থবছরের ঘোষিত বাজেট বাস্তবায়নযোগ্য বলে বিশ্বব্যাংক মনে করে। এ বিষয়ে জাহিদ হোসেন বলেন, পাইপলাইনে যে বৈদেশিক সহায়তা আছে, যদি তা সঠিকভাবে ব্যবহার করা যায়, তবে বাজেট বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে।
উল্লেখ্য, চলতি অর্থবছরের চূড়ান্ত জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ০৫ শতাংশ হয়েছে বলে দাবি সরকারের। তাই আগামী ২০১৬-১৭ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ধরা হয়েছে ৭ দশমিক ২ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের বাজেটে এই লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৭ শতাংশ।
বাজেট শুধু আয়-ব্যয়ের হিসাব নয়, মধ্যমেয়াদি সংস্কারও থাকে। প্রস্তাবিত বাজেটে রাজস্ব আয় এবং এডিপিতে প্রকল্প বাস্তবায়নে উচ্চাকাক্সক্ষা লক্ষ করা যাচ্ছে, যা অন্য বছরের বাজেটের চেয়ে খুব বেশি পরিবর্তন নেই। এ বাজেটকে আরও মানসম্মত করা যেত।
বিশ্বব্যাংকের বাজেট প্রতিক্রিয়ায় বলা হয়, বর্তমান অর্থনীতিতে মিশ্র অবস্থা বিরাজ করছে। একদিকে ব্যক্তি খাতে ঋণপ্রবাহ, রাজস্ব আয়সহ বিভিন্ন খাতের অবস্থা গত অর্থবছরের তুলনায় ভালো হচ্ছে। অন্যদিকে, শিল্পের কাঁচামাল আমদানি, যন্ত্রপাতি আমদানি, নির্মাণ সামগ্রী আমদানি এবং রেমিটেন্স প্রবাহ গত অর্থবছরের তুলনায় কম।
একদিকে বলা হয়েছে প্রবৃদ্ধি বাড়বে, অন্যদিকে মূল্যস্ফীতি কমবে এ দুটি একসঙ্গে অর্জন সম্ভব নয়। বাজেটে জোগান বৃদ্ধির বিষয়ে দিক-নির্দেশনা নেই। সামগ্রিক উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর উদ্যোগ আছে বাজেটে, কিন্তু কর্মসংস্থানের মাধ্যমে প্রবৃদ্ধি বাড়াতে হলে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়াতে হবে।
নতুন ভ্যাট আইনের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে বাজেটে ভ্যাট আইন বাস্তবায়নের জন্য কিছু প্রস্তুতি রয়েছে। ভ্যাট সংস্কারের কথা প্রতিবছর বলা হলেও সংস্কার আসে না। আগামী অর্থবছর হয়তো এই সংস্কার আসবে। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, বছরের শুরুতে নতুন প্রকল্প কম থাকলেও পরবর্তীতে তা বেড়ে যায়। এডিপির যে আকার ধরা হয়েছে তা বাস্তবায়নযোগ্য নয়। এডিপি বাস্তবায়ন দেরি হয় কারণ শুরু থেকেই প্রস্তুতি থাকে না। ১ জন প্রকল্প পরিচালক নিয়োগসহ বেশ কিছু সংস্কারের উদ্যোগ আছে। কিন্তু সেগুলোর বাস্তবায়ন চ্যালেঞ্জ রয়েছে। ফাস্ট ট্র্যাক প্রকল্পে প্রয়োজনমতো বরাদ্দ নিশ্চিত করতে হবে। বলা হয়েছে ভর্তুকির ক্ষেত্রে মূল চ্যালেঞ্জ হচ্ছে যে সাপোর্ট দেওয়া হচ্ছে তা দরিদ্রবান্ধব কি না। সেটি নিশ্চিত করা।
ড. জাহিদ হোসেন বলেন, ব্যবসায়ীরা বলছেন বাজেট বিনিয়োগ ও ব্যবসাবান্ধব নয়। এক্ষেত্রে কর জিডিপি বাড়াতেই হবে। ফলে যারা কর দেবে তাদের উপর করের বোঝা বাড়বে। এক্ষেত্রে করের অর্থ বিনিয়োগের ক্ষেত্রে যদি ব্যয় হয় তাহলে ব্যালেন্স হবে।
তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা থাকলেও বিনিয়োগ বাড়তে পারে। যদি বিনিয়োগের পরিবেশ সৃষ্টিতে অন্যান্য বিষয়গুলো ঠিক থাকে। সংবাদ সম্মেলনে বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর চিনিয়াও ফানসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন