রাজবাড়ীর পর এবার যশোরের কেশবপুরের মাদরাসায় ভারপ্রাপ্ত সুপার হিসেবে হিন্দু শিক্ষককে দায়িত্ব দেয়ার ঘটনায় সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন নেটিজেনরা। এ নিয়ে সমালোচনার ঝড় বইছে ফেইসবুকে।
ঘটনাটি কেশবপুরের আড়–য়া ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসার। মাদরাসার অভিভাবক সদস্য মো. মতিয়ার রহমান এ ব্যাপারে মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
জানা যায়, মাদরাসার সভাপতি আব্দুস সামাদ কানাইডাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। তিনি কেশবপুর আড়–য়া ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসার সুপারের পদ শূন্য হলে সহ সুপার ও সহ মৌলভী ৩ জনকে টপকিয়ে হিন্দু শিক্ষক বিঞ্চুপদ মল্লিককে ভারপ্রাপ্ত সুপারের দায়িত্ব দিয়েছেন। যা নিয়ে মাদরাসা শিক্ষক অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রচন্ড ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
ফেইসবুকে এম আব্দুর রহমান লিখেছেন, ‘‘মাদ্রাসায় কামিল পাশ আলেম ছাড়া সুপার নিয়োগ কোনো মতেই মেনে নেওয়া যাবেনা। এ বিষয়ে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’’
ক্ষোভ জানিয়ে আব্দুল কাইয়ুম লিখেছেন, ‘‘মুসলমানদেরকে ধ্বংস করার চক্রান্ত চলছে। বাংলাদেশের মুসলমানদের জাগতে হবে। এখন আর বসে থাকলে চলবে না। কাদের চক্রান্তে এই সমস্ত কাজ হচ্ছে তাদেরকে চিহ্নিত করুন। শতকরা ৯৫ ভাগ মুসলমানের দেশে কেমন করে একজন হিন্দু প্রধান বিচারপতি সরকার নিয়োগ দিয়েছিল, এইটা
চিন্তা করে দেখুন কি উদ্দেশ্যে ছিল। তখন প্রতিবাদ করলে আজকে মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক হিন্দু নিয়োগ দেয়া হতনা।’’
‘‘দুঃখ জনক কথা। বাংলাদেশে উচ্চ পর্যায়ের জায়গায় কেবল মাত্র হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন অবস্থান করছেন, এদেশে উচ্চ পর্যায়ের মুসলিম ব্যক্তি নেই? ভারতে কয়জন মুসলিম ব্যক্তি উচ্চ পর্যায়ের জায়গায় অবস্থান করছেন?’’ প্রশ্ন মো. হামিদের।
শবুজ মিয়ার মন্তব্য, ‘‘ছাগল দিয়ে যদি হাল চাষ করা যেত তাহলে মানুষ গরু কেনা বাদ দিত। আসলে এটা একটা গভীর ষড়যন্ত্র।’’
মোহাম্মাদ তরিকুল ইসলাম লিখেছেন, ‘‘মাদ্রাসায় হিন্দু শিক্ষক থাকতে পারে সেটা নিয়া আপত্তি নাই কিন্তু প্রধান শিক্ষক হওয়াটা অবশ্যই আপত্তিকর।’’
‘‘একে যারা নিয়োগ দিয়েছে তাদেরকে চিহ্নিত করুন। সরকার চিহ্নিতকরণে ব্যর্থ হলে জনগণ এদের চিহ্নিত করে মুসলমানদের সকল বিষয় থেকে অবাঞ্চিত করে দিতে হবে’’ লিখেছেন আনাস ভুইয়া।
সাংবাদিক শাহজাহান খান লিখেছেন, ‘‘মাদ্রাসার সুপার হিন্দুধর্মের অনুসারী এমন আজব কথা বিশ্বের আর কোথাও আছে বলে আমার মনে হয় না।আমি মনে করি দেশ থেকে মুসলমান সম্প্রদায়ের ধ্বংসের একটা ষড়যন্ত্র। কাজেই মুসলমান হিসেবে এ নিয়ে আমাদের সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে যারা ষড়যন্ত্রে মরিয়া হয়ে উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে দুর্বার প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।হিন্দু সুপার নিয়োগ দিয়ে শুধু আমাদের ধর্মের অবমাননাই করেনি আমাদের ধর্মীয় পবিত্রতাও নষ্ট করেছে।’’
আবুল হাসান মোহাম্মাদ আব্দুল্লাহ লিখেছেন, ‘‘এভাবেই আলিয়া মাদ্রাসার ঐতিহ্য নিজস্ব স্বকীয়তা ইসলামী শিক্ষা-দীক্ষার কেন্দ্র এই পরিচয় হারিয়ে যাবে৷ হয়তো একদিন কলকাতার আলিয়া মাদ্রাসার মতো নামেই মাদ্রাসা হয়ে যাবে অথবা এদেশের নিউ স্কিম মাদ্রাসার মতো স্কুল-কলেজে পরিণত হবে৷’’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন