সাউথ এশিয়ান (এসএ) গেমস ফুটবলে ঘরের মাঠে ২০১০ সালে সোনালী ট্রফি জিতলেও ১৯৯৯ সালে এই ডিসিপ্লিনে বাংলাদেশ প্রথম স্বর্ণপদক জিতেছিল নেপালেই। বিশ বছর পর এখানেই ফের বিজয়োৎসব করতে চায় লাল-সবুজের ফুটবল। কাঠমুন্ডুতেই উৎসবে মততে চান জামাল ভূঁইয়ারা। এসএ গেমস ফুটবলে তৃতীয়বারের মতো স্বর্ণ জয়ের স্বপ্ন নিয়ে সোমবার মাঠে নামছে বাংলাদেশ অলিম্পিক ফুটবল দল। প্রথম ম্যাচে তাদের প্রতিপক্ষ ভুটান। বাংলাদেশ সময় দুপুর সোয়া একটায় শুরু হবে ম্যাচটি।
দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলে বাংলাদেশের সাফল্য খুঁজেতে গিয়ে পেছন ফিরে দেখলে কিছুটা কষ্টই পেতে হবে। ২০১৩ সালে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে কাঠমান্ডুর হালচকের এই স্টেডিয়ামেই ভারতের বিপক্ষে ড্র নিয়ে মাঠ ছেড়েছিল বাংলাদেশ। যদিও বিজয়ী বেশেই লাল-সবুজদের মাঠ ছাড়ার কথা ছিল। কিন্তু ম্যাচের শেষ মুহুর্তে অধিনায়ক সুনীল ছেত্রির গোলে ড্র নিয়ে মাঠ ছেড়েছিল ভারত। সেই সঙ্গে বিদায় নিয়েছিল টুর্নামেন্টের গ্রুপ পর্ব থেকেও। একই মাঠে রোববার জামাল ভূইয়ারা যখন অনুশীলন করছিলেন,তখন ছয় বছর আগের দু:সহ স্মৃতিতে হয়তো হারিয়ে গিয়েছিলেন অনেকেই। তবে এবারের এসএ গেমস ফুটবলে অংশ নিতে নেপাল এসে কিছুটা বিরক্ত বাংলাদেশের ব্রিটিশ কোচ জেমি ডে। আয়োজনে ত্রুটির পাশাপাশি তিনি হতাশ হন ফুটবলের ফিকশ্চার নিয়েও। আগে দু’টি গ্রুপ থাকলেও ভারত না খেলায় রাউন্ড রবিন লিগ পদ্ধতিতেই খেলতে হবে পাঁচ দলকে। ডেমি ডে’র অনুযোগ ছিল হোটেলে জিম এবং ফুটবলারদের জন্য সুইমিংয়ের ব্যবস্থা না থাকায়। তাছাড়া চারদিনে তিনটি ম্যাচ খেলতে হবে তার দলকে। সূচীতে পরিবর্তণ আসার পরই আটঘাট বেঁধে নামে জেমি ডের দল। শুরুতে নেপালের প্রচন্ড ঠান্ডা আর উচ্চতার সঙ্গে মানিয়ে নিতে বেগ পেতে হলেও আস্তে আস্তে কন্ডিশনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিয়েছেন জামাল-জীবন-সাদ’রা। কোচ জেমি ডে তার শিষ্যদের নিয়ে লক্ষ্য পূরণে এখন বেশ আতœবিশ^াসী। কাল অনুশীলন শেষে জেমি ডে বলেন, ‘ছেলেরা সবাই তৈরি মিশন শুরু করতে। ১৯৯৯ সালে সাফ গেমস ফুটবলে স্বর্ণপদক জিতেছিল বাংলাদেশ। এবারও আমাদের লক্ষ্য স্বর্ণ জেতা। তবে এটা কঠিন। কারণ সবাই এখানে জিততে এসেছে। দলটা অনূর্ধ্ব-২৩ হওয়ার কারণে এখানে শক্তির ব্যবধানটাও খুব বেশি নেই।’ প্রতিপক্ষ ভুটান কী বড় বাঁধা? এমন প্রশ্নে বাংলাদেশ কোচের উত্তর, ‘ভুটান অবশ্যই ভাল দল। ঢাকায় আমরা তাদেরকে হারিয়েছিলাম। সেটা এখন অতীত। সব টুনামেন্টেই প্রথম ম্যাচ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই আমরা জয় দিয়েই শুরু করতে চাই।’
হিমালয় জয়ে বাংলাদেশের সামনে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে স্বাগতিক নেপাল ও মালদ্বীপ। তবে কাগজ-কলমের হিসাব বলছে, এই দু’টি দলের চেয়ে অনেক এগিয়ে গেমস শুরু করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। তিনটি দলের সম্ভাব্য একাদশের দিকে তাকালেই স্পষ্ট হয়ে যাবে বাংলাদেশের শক্তি। যেখানে অভিজ্ঞ ও আনকোরা খেলোয়াড়ের সংমিশ্রণে একাদশ গঠন করতে হবে নেপাল ও মালদ্বীপকে, সেখানে একেবারে জাতীয় দলের নিয়মিত খেলোয়াড়দের নিয়ে একাদশ গড়ার সুযোগ পচ্ছে বাংলাদেশ। আবহাওয়ার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়ার জন্য পাঁচ দিন সময়ও পেয়েছে দলটি। তাইতো উদ্বোধনী ম্যাচে ভুটানকে বড় ব্যবধানে হারানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করছেন বাংলাদেশ দলের ব্রিটিশ কোচ। আয়োজকদের নানা সীমাবদ্ধতা মাঠের খেলায় প্রভাব পরবে না বলেই বিশ^াস তার। সাম্প্রতিক সময়ে ভুটানের সঙ্গে তিন সাক্ষাতের তিনটিতেই বড় ব্যবধানের জয় পেয়েছে লাল-সবুজরা।
অন্যদিকে নিজেদের আন্ডারডগ হিসেবে ধরে নিয়েই বাংলাদের বিপক্ষে লড়াইয়ের কথা জানান ভুটান অধিনায়ক চেনচো গেইলশেন। তিনি বলেন, ‘আমরা সর্বশেষ বাংলাদেশের বিপক্ষে দু’টি ম্যাচ খেলেছি। তাদের সর্স্পকে আমাদের ধারণা আছে যথেষ্ট। তা এই ম্যাচে কাজে লাগাবো।’ চার দিনে তিন ম্যাচে নিয়ে চেনচো বলেন, ‘এটা কঠিন। ফিফা নিয়মে এক ম্যাচের পর কমপক্ষে ৭২ ঘন্টা বিরতী থাকার কথা কিন্তু এখানে ৪৮ ঘন্টাও নেই। তারপরেও আমরা তৈরী আছি খেলার জন্য।’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন