বুধবার ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আন্তর্জাতিক সংবাদ

মারাথওয়াদায় পানির জন্য হাহাকার

ভারতের অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ : বন্যা অথবা খরা-২

নিউ ইয়র্ক টাইমস | প্রকাশের সময় : ২ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১২:০০ এএম

পশ্চিম ভারতের বিস্তীর্ণ মারাথওয়াদা অঞ্চলটি উত্তপ্ত গ্রীষ্মের জন্য পরিচিত। নদীহীন এই এলাকার লোকেরা পানির ক‚প পূরণে কালো মাটিতে চাষের জন্য প্রায় পুরোপুরি নির্ভর করে বর্ষার উপর। জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের যে কোন যোগসূত্র নেই, তার বাস্তব ও বেদনাদায়ক উদাহারণ হতে পারে মারাথওয়াদা।

অক্টোবর মাসে, ঐতিহ্যবাহী ফসল কাটার মৌসুম শুরুর কয়েক সপ্তাহ আগে, মারাথওয়াদার এক কৃষক ফকির মোহাম্মদ তার পারিবারিক দেড় একর ফসলি জমি দেখাতে প্রতিবেদককে নিয়ে যান। সেখানে মাঠের মাঝখানে একটি নিম গাছ দাঁড়িয়ে ছিল। ফকির মোহাম্মদ তাকে গর্বের সাথে বলেন, এই গাছের নিচে শুয়ে থাকুন, আপনি কখনই অসুস্থ হবেন না। তবে এই গাছ তার জমির কোন উপকারে আসেনি।

গত নয় বছরের বেশিরভাগ সময় মারাথওয়াদা এলাকায় বৃষ্টিপাতের ঘাটতি ছিল। এই বছর, বর্ষা অনেক দেরিতে আসে এবং রুক্ষ জমি সব পানি টেনে নেয়। তারপরে, এক পোঙ্গ-পালের আক্রমণের শিকার হয় ফকির মোহাম্মদের ক্ষেত। ভ‚ট্টাগুলো মাছির আক্রমণে নষ্ট হয়ে যায়। তুলা গাছগুলোতে ফুল আসলেও ফকির মোহাম্মদ জানান, যা পাওয়া যাবে তা খুবই নগন্য। তিনি বলেন, ‘আমরা খুব পরিশ্রম করেছি, তবে আমরা এর থেকে কিছুই পাব না।’

সবচেয়ে খারাপ ব্যপার, এই বছরের বৃষ্টিপাতে এই এলাকার খাবার পানির সংকট প্রায় কিছুই কমেনি। এমনকি বর্ষা শেষ হতেই অনেক কুয়া শুকিয়ে যায়। এখানকার একটি বাঁধ, যা প্রায় ২০ গ্রামে খাবার পানী সরবরাহের জন্য তৈরি করা হয়েছিল, সেটি এখন গরুর চারণভ‚মিতে পরিণত হয়েছে।

এই এলাকায় পানি এতই মূল্যবান যে, ফকির মোহাম্মদের পরিবারের মহিলারা বলেছিলেন যে, তাদের পুরো এক কাপ পানি পানের ইচ্ছা করলেও তারা আর্ধেক পান করতেন। তারা এমনকি নিয়মিত গোসলও করতে পারেন না যাতে তাদের বাচ্চারা পরিষ্কার এবং সতেজ হয়ে স্কুলে যেতে পারে। এমনকি দুর্ঘটনাক্রমে একটি পানি ভরা কাপ ছিটিয়ে ফেলার কারণে তারা এতটাই রেগে যায় যে, সেই ‘অপরাধে’ তারা একটি শিশুকে আঘাত করে।

প্রতিদিন চারটি সরকারী ট্রাক মাটির রাস্তা দিয়ে আসে তার গ্রামের পানির ট্যাঙ্ক ভরতে। এটি গ্রামের চাহিদার মাত্র একটি অংশ পূরণ করে। বেশিরভাগ বাসিন্দা দূর থেকে খাবার পানি কিনে আনে। ফকির মোহাম্মদ এই বছর প্রকৃতি যেটুকু পানি দিয়েছে তার জন্য কৃতজ্ঞ। তবে তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘খাবার মতো পানি নেই। তবে বৃষ্টি যা হয়েছে তা ক্ষেতের জন্য ভাল। ভবিষ্যতে কী হতে চলেছে এই চিন্তায় আমি শঙ্কিত।’ ৬০ বছর বয়সী ফকির মোহাম্মদের আশঙ্কিত হওয়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে।

ইন্ডিয়ান ট্রপিকাল মেটেরোলজি ইনস্টিটিউট-এর আবহাওয়া বিশেষজ্ঞ রক্সি ম্যাথিউ কোলের বিশ্লেষণ, ১৯৫০ সাল থেকে মারাথওয়াদা এলাকায় বার্ষিক বৃষ্টিপাত ১৫ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। একই সময়ে, বৃষ্টিপাতের ঘটনাও তিনগুণ কমেছে। (আগামী পর্বে সমাপ্য)

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (6)
মোঃসালাম মৌলভীচক খাদিম বাড়ি ২ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১:০৬ এএম says : 0
এসব না লিখে বেকার দের কথা কিছু লেখেন
Total Reply(0)
Zamal U Ahmed ২ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১:০৬ এএম says : 0
ভারতীয়দের উচিৎ আল্লাহর কাছে ক্ষমা চেয়ে প্রার্থনা করা।
Total Reply(0)
Mamunul Islam ২ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১:০৯ এএম says : 0
আল্লাহর বিচার।
Total Reply(0)
Rakibul Islam ২ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১:০৯ এএম says : 0
ভারতের প্রতি সহানুভূতিমূলক কমেন্ট করতে পারলাম না।
Total Reply(0)
Miah Muhammad Adel ২ ডিসেম্বর, ২০১৯, ৪:৪৩ এএম says : 0
Talk about homeland's problems. Upstream looted the homeland's ecosystem's elixir water.
Total Reply(0)
আবেদ খান ২ ডিসেম্বর, ২০১৯, ৯:৩২ এএম says : 0
পরে জন্য কূপ খনন করলে সেই কূপে নিজেকেই পরতে হয়
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন