ছোট্ট শিশু মিম। দুপুরের খাবার শেষে বন্ধুদের সাথে লুকোচুরি খেলছিল। এসময় আমজাদ নামে ব্যক্তি তাকে চকলেট দেওয়ার কথা বলে ঘরে ডেকে নিয়ে যায়। প্রিয় চকলেটে খেতে গিয়ে পাশবিক নির্যাতনের শিকার মীম। এসময় ব্যাপক রক্তক্ষরণে প্রাণ গেল বাবা মায়ের আদরের সন্তান মিমের। এমন নির্মম ঘটনা ঘটেছে দিনাজপুরের পার্বতীপুর। এ ঘটনায় অভিযুক্ত আমজাদ পলাতক রয়েছে।

এছাড়া কুষ্টিয়ায় স্বামী পরিত্যক্তা নারী, বরিশালে ৪র্থ শ্রেণির স্কুলছাত্রী, কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে প্রতিবন্ধী যুবতী ও স্বামী পরিত্যক্তা নারী রাজধানী ঢাকায় ৪ মাসের শিশুকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে ৬ জনকে আটক করা হয়েছে।

ঢাকা : রাজধানীর মোহাম্মদপুরে চার মাসের এক শিশুকে ধর্ষণের চেষ্টায় এক রিকশাচালককে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। গত শুক্রবার মোহাম্মদপুরের ঢাকা উদ্যান এলাকায় নিজ রুমে প্রতিবেশীর মেয়েকে ধর্ষণের চেষ্টা চালায় রিকশাচালক জিয়াউল। গত শনিবার এ ঘটনায় শিশুটির পরিবার থানায় মামলা করে। মামলা নম্বর ১২৫। মামলার ভিত্তিতে আসামিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এদিকে গতকাল রোববার চিকিৎসার জন্য শিশুটিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

মোহাম্মদপুর থানার এসআই চয়ন সাহা জানান, ঢাকা উদ্যানের বাসায় পাশাপাশি রুমে থাকে শিশুটির পরিবার ও আসামি জিয়াউল। গত ২৯ ডিসেম্বর বিকেলে শিশুটিকে কোলে নেয় জিয়াউল। এরপর তার রুমে নিয়ে শিশুটিকে ঘুম পাড়ায়। পরে ঘুমন্ত অবস্থায় শিশুটিকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। জানতে পেরে পরিবারের লোকজন শিশুটিকে স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেন। স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও চিকিৎসার জন্য শিশুটিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস (ওসিসি) সেন্টারে ভর্তি করানো হয়েছে।

পার্বতীপুর (দিনাজপুর) : দিনাজপুরের পার্বতীপুরে ধর্ষণের শিকার হয়ে আবিদা সুলতানা মিম নামের সাড়ে ৩ বছরের এক শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। শনিবার রাতে পার্বতীপুর উপজেলার পলাশবাড়ী ইউনিয়নের রঘুনাথপুর ডাঙ্গাপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত শিশু মিম ওই গ্রামের আরিফুল ইসলামের মেয়ে।

লাশ ঘরে তালাবদ্ধ রেখে ধর্ষক নিজেই এলাকায় নিখোঁজের মাইকিংয়ে অংশ নেন। পরে সুকৌশলে সটকে পড়ে সে। নিহত ওই শিশুকে পার্বতীপুর মডেল থানাপুলিশ উদ্ধার করে। এঘটনায় বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী বিক্ষোভ করে ধর্ষকসহ সংশ্লিষ্টদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। সেই সাথে ওই ধর্ষকের বাড়ির আসবাবপত্র ভাঙচুর করেছে উত্তেজিত জনগণ ।

নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, গত শনিবার (৩০ নভেম্বর) বেলা ৩টা থেকে আবিদা ইসলাম মীম নামের ওই শিশুকণ্যা নিঁখোজ ছিলো। বেলা ৪টার পর তাকে খুঁজে না পেয়ে এলাকায় মাইকিংয়ের মাধ্যমে শিশুর নিখোঁজের বিষয়টি প্রচার করে তার পরিবার। প্রচারের সময় একই এলাকার আমিনুল হকের ছেলে ধর্ষক আমজাদ হোসেন (২১) নিজে মাইকিংয়ের ভ্যানে ছিলো বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা।

এদিকে মাইকিংয়ের সময় শাহিনুর আলম(৪০) নামের ওই ব্যক্তি মোবাইল ফোনে ধর্ষকের পিতা আমিনুল হককে ঘটনার বিবরণ দেয়ার সময় তার কথপোকথন শুনতে পায় এলাকাবাসী। এতে তাদের মধ্যে সন্দেহের সৃষ্টি হয়। মীমের বন্ধু একই এলাকার রাশেদুল ইসলামের ছেলে জিহাদ(৫) তার পরিবারকে জানায়, অভিযুক্ত আমজাদ হোসেন নামে ওই যুবকের বাড়ির পাশে মীমসহ তার বন্ধুরা খেলতে গেলে চকলেটের প্রলোভন দেখিয়ে ঘরের নিয়ে যায়। তার কথার ভিত্তিতে মীমের পরিবার ধর্ষক আমজাদের বাড়িতে গেলে তালাবদ্ধ দেখতে পাওয়ায় পুলিশে খবর দেন। পুলিশ রাত আনুমানিক পৌনে ৮টায় তার শয়ন ঘরের দরজা ভেঙে টেবিলের নিচ থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় ওই শিশুর নিথর দেহ পরে থাকতে দেখে। পুলিশ তাকে উদ্ধার করে পার্বতীপুর উপজেলা স্বাস্খ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় নিহতের পিতা আরিফুল ইসলাম বাদী হয়ে ধর্ষক আমজাদ হোসেন (২১), চাচা শাহিনুর আলম (৪০) ও দাদী মমিনা বেগম (৫৫) তিন জনের নাম উল্লেখ করে পার্বতীপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। পার্বতীপুর মডেল থানার অফিসার্স ইনচার্জ মোখলেছুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে শনিবার রাতেই অপর আসামী শাহিনুর আলম (৪০) ও দুপুরে দাদি মমিনা বেগম (৫৫) কে গ্রেফতার করা হয়েছে। পলাতক ধর্ষক আমজাদকে গ্রেফতারের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

বরিশাল : বরিশালের গৌরনদী উপজেলার দক্ষিন চাঁদশী গ্রামের ৪র্থ শ্রেণির এক কিশোরী স্কুল ছাত্রীকে গত ৪ মাসের ব্যাবধানে প্রতিবেশী শহিদ সরদার (৫৫) ও তার ভাতিজা নাহিয়ান সরদার (১৪) দুইদফা ধর্ষণ করেছে। এ ঘটনায় ওই দুই লম্পট চাচা-ভাতিজাকে আসামি করে গত শনিবার মধ্যরাতে গৌরনদী থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ রাতেই উপজেলার দক্ষিণ চাঁদশী গ্রামের মৃত সৈয়দ আলী সরদারের ছেলে লম্পট ধর্ষক শহিদ সরদারকে গ্রেফতার করেছে।

ধর্ষিতার পরিবার, গত ৩০ জুলাই সকালে তার বাবা কাজে যায়। এ সময় ৪র্থ শ্রেণির ওই কিশোরী স্কুলছাত্রী ঘরে একা ছিল। এ সুযোগে ওই দিন সকাল ১০টার দিকে প্রতিবেশী লম্পট শহিদ সরদার তাদের ঘরে ঢুকে মুখে গামছা গুজে দিয়ে কিশোরীকে ধর্ষণ করে। এতে কিশোরীর রক্তক্ষরণ হয়।

ঐ ঘটনার প্রায় ৪ মাস পরে বাবা মা বাড়িতে না থাকার সুযোগে কিশোরীকে তাদের ঘরের মধ্যে একা পেয়ে ধর্ষক শহিদ সরদারের ভাতিজা একই গ্রামের সাহিদুল সরদারের ছেলে লম্পট কিশোর নাহিয়ান সরদার (১৪) শনিবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ধর্ষণ করে। ঘটনার পর থেকে সে পলাতক ।

গৌরনদী থানার ওসি (তদন্ত) মো. মাহাবুবুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, এ ঘটনায় ধর্ষিতা কিশোরী স্কুল ছাত্রীর মা বাদি হয়ে ধর্ষক শহিদ সরদার ও নাহিয়ান সরদারকে আসামি করে গত শনিবার দিবাগত রাত সোয়া ১টার দিকে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ তাৎক্ষনিক অভিযান চালিয়ে ধর্ষক শহিদ সরদারকে গ্রেফতার করেছে। অপর আসামীকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

চট্টগ্রাম : চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে চলন্ত বাসে যৌন হয়রানির অভিযোগে বাসটির চালক, সুপারভাইজার ও হেলপারসহ তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শনিবার রাতে নগরীর বহদ্দারহাট বাস টার্মিনাল ও চান্দগাঁও বাহির সিগন্যাল এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করে মহানগর গোয়েন্দা উত্তর বিভাগের সাইবার ক্রাইম টিম। গ্রেফতারকৃতরা হলেন, বাসের সুপারভাইজার মোঃ আলী আব্বাস ওরফে আব্বাস (৩৫), চালক এহছান করিম ওরফে এহছান (২৭) ও হেলপার মো. ফারুক রহমান ওরফে ভুট্টু (৩৪)।

গত বুধবার পটিয়ার মুন্সেফ বাজার থেকে নগরীতে ফেরার পথে সোহাগ এক্সপ্রেস পরিবহনের বাসের চালক ও হেলপারদের দ্বারা যৌন হয়রানির শিকার হন ওই ছাত্রী। বাসটি নগরীর বহদ্দারহাট আসলে চলন্ত বাসে ওই ছাত্রীকে নিয়ে টানা হেঁচড়া শুরু করেন তারা। এক পর্যায়ে বাস থেকে নেমে লাফিয়ে নেমে পড়ে নিজেকে রক্ষা করেন ওই শিক্ষার্থী। পরদিন বিষয়টি প্রকাশ করে নিজের ফেইসবুকে স্ট্যাটাস দেয়ার পর তা পুলিশের নজরে আসে।

কুষ্টিয়া : কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে ১৯ বছরের এক প্রতিবন্ধী যুবতীকে ধর্ষণের অভিযোগে ধর্ষক ও ধর্ষণে সহায়তাকারীকে আটক করেছে পুলিশ। গত শুক্রবার উপজেলার শিলাইদহ ইউনিয়নের কল্যাণপুর গ্রামের আন্নুর ছেলে ধর্ষক সুজন (২০) ও একই গ্রামের শাহাদত সর্দারের ছেলে সহযোগী আকাশ (১৬) এই ঘটনা ঘটায়।
এদিকে, স্বামী পরিত্যক্তাকে ধর্ষণের পর বিয়ের প্রলোভনে দিনের পর পর শারীরিক সম্পর্কে গৃহবধূ এখন তিন মাসের অন্তস্বত্তা। এই মর্মে অভিযোগের ভিত্তিতে আসামি সোহেলকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।