ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলায় ৫০ শয্যাবিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। ২০১০ সনে ঘোষণা হলে ২০১৯ সনে জনবল সঙ্কট এ চিকিৎসা সেবা বঞ্চিত রাজাপুরের প্রায় ২ লাখ মানুষ। ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন গরীব অসহায় রোগীরা।
২ জন ডাক্তার দিয়েই চলছে চিকিৎসার কাজ। ২৮ জন ডাক্তারের মধ্যে চিকিৎসাসেবা দিচ্ছে মাত্র ২জন ডাক্তার। এতে চরম জনবল সঙ্কটে রাজাপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মাহাবুবুর রহমান বলেন, ৩ ডিসেম্বরে অবসরে যাচ্ছি আমি। আর আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. উদয় কুমার মিত্র ছুটিতে। অপর ডা. মিতু দেবনাথ এ বছর ১০ অক্টোবর যোগদান করেছেন নলছিটি থেকে রাজাপুরে। তিনি এফসিপিএস সার্জন, তিনিও হয়ত থাকবেন না।
ডাক্তার মাহবুবুর রহমান আরও বলেন, ২০১০ সালে ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত ঘোষণা হলেও সেভাবে জনবল পাওয়া যায়নি। অনেক বার জনবল সঙ্কটের কথা উর্দ্ধতন মহলে জানানো হলেও আজ পর্যন্ত জনবল সঙ্কট কাটেনি। ৩১ শয্যার মনজুরীকৃত চিকিৎসক ১৫জন, ৫০ শয্যার জন্য ২৮ জন চিকিৎসক। দীর্ঘদিন ধরে কোটি টাকা ম‚ল্যের এ-ক্সরে মেশিনসহ বেশ কয়েকটি ম‚ল্যবান মেশিন পড়ে রয়েছে অপরেটরের অভাবে। পরপর ২টি অ্যাম্বুলেন্স নষ্ট হয়ে পড়ে রয়েছে। ইনডেন্ট দিলে বরাদ্দ মেলেনি।
আগত বিভিন্ন রোগীর সাক্ষাতকারে জানা যায়, প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত হাসপাতালে ডাক্তার-স্টাফদের আসার কথা থাকলেও অব্যবস্থাপনার কারণে অনেকেই সকাল সাড়ে ৯টার পর এসে দুপুর ১টার প‚র্বেই কর্মস্থল ত্যাগ করতে দেখা যায়। আর সকল হলেই হাসপাতালের বারান্ধায় ওষুধ কোম্পানির বিক্রয প্রতিনিধিদের উৎপাত ।
রাজাপুর উপজেলায় ৫০ শয্যাবিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপস্থিত একমাত্র ডাক্তার ডা. মিতু দেবনাথ বলেন, ২ জন সহকারী নিয়ে পুরো ৫০ শয্যার হাসপাতাল সামলাতে হচ্ছে। অনেক রোগীকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েই ছেড়ে দিতে বাধ্য হচ্ছে। যেখানে ২৮ জন ডাক্তার সার্বক্ষণিকভাবে চিকিৎসা সেবা দেয়ার কথা থাকলেও ২ জন ডাক্তার ক্লান্ত হয়ে যান।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মনিরুজ্জামান বলেন, উপজেলায় একমাত্র সরকারি হাসপাতালের এমন অবস্থা ভাবতেও কষ্ট হয়। আমি আমার এলাকার সাধারণ মানুষের কথা ভেবে এ বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে আলাপ করেছি, কোন ফল আসেনি, আশা করছি দ্রæতই এর সমাধান হবে। তবে আমাদের এলাকার মাননীয় সংসদ সদস্য হাসপাতালের সভাপতি, মহাপরিচালক পর্যায়ে তদবির করলে সমাধান দ্রæত হতে পারে। এলাকার সাধারণ মানুষ অনতি বিলম্বে সমস্যা সমাধানে স্বাস্থ্য মন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন