বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

তাঁত বোর্ডে নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১২:০৭ এএম, ৩ ডিসেম্বর, ২০১৯

বাংলাদেশ তাঁত বোর্ডের কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগে এবং পদোন্নতি নিয়ে বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ে। বোর্ডের চেয়ারম্যান আগামী ১৫ ডিসেম্বর অবসরে যাবেন তার আগে লাখ লাখ টাকা নিয়োগ দিয়ে নিতে চান। অন্যদিকে নিয়োগ বোর্ডের কমিটির এক সদস্য অতিরিক্ত সচিব পদত্যাগ করেছেন বলে সূত্রে জানা গেছে।

বাংলাদেশ তাঁত বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম ইনকিলাবকে ফোনে বলেন, আমি সরকারি বিধি মোতাবেক কাজ করেছি। এখানে কোনো অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়নি। একটি গ্রæপ আমার বিরুদ্ধে লেগেছে।
মন্ত্রণালয়ে অভিযোগে বলা হয়, কিডার পদে যোগ্য ও অভিজ্ঞ কর্মকর্তা থাকা সত্তে¡ও বাংলাদেশ তাঁত বোর্ডের পদোন্নতিযোগ্য ৬টি পদে যথাক্রমে প্রধান (এমই)-১টি, উপ-মহাব্যবস্থাপক (অপারেশন)-১টি, উপ-মহাব্যবস্থাপক (মার্কেটিং)-১টি এবং ব্যবস্থাপক (ক্রয়/মার্কেটিং/এসসিআর)-৩টি) গত ৪ জুলাই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। ৬টি পদে জনবল নিয়োগের লক্ষ্যে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন, পরীক্ষা গ্রহণ, খাতা মূল্যায়ন এবং ফলাফল তৈরির দায়িত্ব দেয়া হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস স্ট্যাডিজ অনুষদের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমস (এমআইএস) বিভাগকে।

কিন্তু তাঁত বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম অসৎ উদ্দেশ্যে নিয়োগ কমিটির সব সদস্যের কাছ থেকে প্রশ্ন চেয়ে পত্র দেয়। নিয়োগ কমিটির কিছু সদস্য চেয়ারম্যানের মতলব বুঝতে পেরে তারা প্রশ্ন করা থেকে বিরত থাকেন এবং নিয়োগ পরীক্ষার যাবতীয় দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চেয়ে পত্র দেন। চেয়ারম্যান তাদের লিখিতভাবে অব্যাহিত দেন। বোর্ডের অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত সচিবও পদত্যাগ করেন বলে জানা যায়। সূত্রে জানা যায়, চেয়ারম্যান তার নিজস্ব অনুসারীদের নিয়ে প্রশ্ন করেন, যা তিনি পরীক্ষা গ্রহণের আগেই নির্দিষ্ট প্রার্থীদের কাছে ফাঁস করেন বলে জানা যায়। উক্ত ফাঁসকৃত প্রশ্ন দ্বারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমস (এমআইএস) বিভাগ গত ৮ নভেম্বর পরীক্ষা গ্রহণ করে। প্রধান (এমই) পদের ফাঁসকৃত ১টি প্রশ্ন পাওয়া গেছে, যার সঙ্গে প্রকৃত প্রশ্নপত্রের ৯৫ শতাংশ মিল রয়েছে। অন্যান্য পদের প্রশ্নও প্রায় একই রকম এবং সেগুলোও ফাঁস হয়েছে। প্রশ্ন ফাঁসের বিষয়টি নিয়োগ কমিটির সব সদস্যই অবগত করা হয়। নিয়মবহির্ভূতভাবে আবেদনের সময়সীমা দেয়া হয় ৩১ জুলাই পর্যন্ত, যা অত্যন্ত স্বল্প সময়। এ কারণে আবেদনকারীর সংখ্যা কম হয় এবং যাচাই-বাছাই শেষে প্রধান (এমই) পদে ৪৯টি, উপ-মহাব্যবস্থাপক (অপারেশন) পদে ৬৭টি, উপ-মহাব্যবস্থাপক (মার্কেটিং) পদে ৪৫টি এবং ব্যবস্থাপক (ক্রয়/মার্কেটিং/এসসিআর) পদে ১৯৫টি আবেদন বৈধ হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের গত ৩০ জুনের ৬টি পদের ছাড়পত্রের ২ নং শর্তে বলা হয়েছে, উল্লিখিত পদ পূরণের ক্ষেত্রে যদি আদালতের কোনো নিষেধাজ্ঞা থাকে, কোনো রিট বা মামলা বিচারাধীন থাকে কিংবা কোনো মামলার রায় বাস্তবায়নের বিষয় অপেক্ষমাণ থাকে, তবে আদালতের নির্দেশনা যথাযথভাবে বাস্তবায়নপূর্বক বিধিমোতাবেক শূন্যপদ পূরণের কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে।

অন্যদিকে উপ-মহাব্যবস্থাপক (অপারেশন) পদের ফিডার পদে নিয়োজিত ব্যবস্থাপক (অপারেশন) মো: মঞ্জুরুল ইসলাম সংক্ষব্ধ হয়ে হাইকোর্টে ১টি রিট পিটিশন (নং-১০৪৭০/২০১৯) করেন। উক্ত রিট পিটিশনে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ তাঁত বোর্ডের চেয়ারম্যান, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (বস্ত্র-২) এবং বাংলাদেশ তাঁত বোর্ডের সচিবকে বিবাদী করা হয়। এ বিষয়ে মহামান্য হাইকোর্ট রুল জারি করেন, যা বিচারধীন।
তাঁত বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম আগামী ১৫ ডিসেম্বর অবসরে যাবেন। তিনি অসৎ উদ্দেশ্যে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের গত ৩০ জুনের ছাড়পত্রের ২ নং শর্ত অমান্য এবং হাইকোর্টে বিচারধীন রিট মামলা নং-১০৪৭০/২০১৯ বিচারধীন থাকা সত্তে¡ও তাঁত বোর্ডের ঊর্ধ্বতন ৬টি পদের যথাক্রমে প্রধান (এমই)-১টি, উপ-মহাব্যবস্থাপক (অপারেশন)-১টি, উপ-মহাব্যবস্থাপক (মাকের্টিং)-১টি এবং ব্যবস্থাপক-৩টি) নিয়োগ পরীক্ষা গ্রহণ করেছেন এবং নিয়োগ প্রদানের জন্য তাড়াহুরা করছেন। তাঁর বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ রয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
Md.Rifatul Islam ৩ ডিসেম্বর, ২০১৯, ৩:৫৯ পিএম says : 0
এসব কোনদিন বন্ধ হবে না....যতদিন না এর সঠিক বিচার হয়....দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে....
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন