চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের আর বেশি দেরি নেই। দায়িত্বপালনের শেষ সময়ে এসে মঙ্গলবার মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন তার চার বছরের উন্নয়নের ফিরিস্তি তুলে ধরেন মিট দ্যা প্রেস অনুষ্ঠানে। মেয়র বলেন, মহানগরীর ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকা- এগিয়ে চলেছে। নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী গ্রিন সিটি ক্লিন সিটি বাস্তবায়নে কাজ করছি।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার দিক-নির্দেশনা অনুসারে দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রাম আজ উন্নয়নের মহাসড়কে। এ পরিপ্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম মহানগরীর উন্নয়ন, আধুনিকায়ন এবং নাগরিক সেবার মান নিশ্চিত করা হচ্ছে। এ সময় চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সামসুদ্দোহা, প্রধান প্রকৌশলী লে. কর্নেল সোহেল আহমেদ, প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ একেএম রেজাউল করিম, প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা সুমন বড়ুয়া, মেয়রের একান্ত সচিব আবুল হাশেম এবং কাউন্সিলরদের মধ্যে আবিদা আজাদ উপস্থিত ছিলেন।
মেয়র জানান, বন্যা ও পানিবদ্ধতায় ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাসমূহের উন্নয়ন এবং নালা প্রতিরোধ দেয়াল, ব্রীজ ও কালভার্ট নির্মাণ-পুনঃনির্মাণ শীর্ষক ৭১৬.২৮ কোটি টাকা প্রকল্প, বিভিন্ন এলাকার অবকাঠামো উন্নয়নে ১২৯ কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও ব্রীজসমূহের উন্নয়নসহ আধুনিক যান যন্ত্রপাতি সংগ্রহ ও সড়ক আলোকায়ন শীর্ষক ৪২০.৯৫ কোটি টাকা প্রকল্প, বহদ্দারহাট বারইপাড়া হতে কর্ণফুলী পর্যন্ত খাল খননে ১২৫৬.১৬ কোটি টাকার প্রকল্প, যানজট নিরসনে বাস-ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণে ১২২৯.৯৭ কোটি টাকা প্রকল্প, সেবক ও পরিচ্ছন্নতা কর্মী নিবাস নির্মাণে ২৩১.৪২ কোটি টাকা এবং নগরীকে আলোকায়নের আওতায় আনয়নে ২৬০ কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়ন কাজ চলমান রয়েছে।
মেয়র নাছির বলেন, নগরীর এক হাজার ৩৭৫টি খোলা ডাস্টবিন থেকে ৮২৫টি অপসারণ করা হয়েছে। জনদুর্ভোগ লাঘবে দিনের বেলা থেকে রাতে বর্জ্য অপসারণ করা হচ্ছে। নগরবাসীর মাঝে নয় লাখ বিন বিতরণ করা হয়েছে। বারইপাড়া থেকে কর্ণফুলী নদী পর্যন্ত নতুন খাল খনন চলছে। তিনি বলেন, পরিবহন সঙ্কট নিরসনে এস আল গ্রুপের মাধ্যমে নগরীর তিনটি রুটে তিন রঙের একশটি এসি বাস চালু করা হচ্ছে। জানুয়ারিতে এসব বাস চালু হবে।
মেয়র বলেন, বিমানবন্দর সড়ক চার লেনে উন্নীত করার প্রকল্প নেয়া হয়েছে। সিমেন্ট ক্রসিং পর্যন্ত দুই পাশে ড্রেন তৈরি করা হচ্ছে। জাইকার অর্থায়ন ও ডিজাইনে হচ্ছে পোর্ট কানেকটিং ও এক্সেস রোডের কাজ। নিমতলা থেকে অলংকার পর্যন্ত ছয় দশমিক দুই কিমি পোর্ট কানেকটিং সড়ক। এক্সেস রোডের কাজে এলইডি লাইটিং অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আরাকান সড়কের কাজ ১২টি লটে চলমান আছে। ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ সম্পন্ন হবে।
মেয়র বলেন, জাইকা নিজস্ব স্টাইলে কাজ করে। যতক্ষণ কাজ চলে জাইকার লোক থাকে। পোর্ট কানেকটিং সড়কের কাজ শেষ করতে আরও সময় লাগবে। কাজগুলো নিবিড়ভাবে মনিটরিং করা হচ্ছে। নগরীর ৯৫২ কিমি সড়ক বা ৮০ ভাগ আলোকায়নের আওতায় আনা হয়েছে। এক হাজার ৩০৪ কিমি সড়কে ৬৪ হাজার ৬৮৩টি এলইডি বাতি স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
কাজীর দেউড়ি শিশুপার্ক প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, সেনাবাহিনী জায়গাটি শিশুপার্ক করার জন্য চসিককে দিয়েছিল। শিশুপার্ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে চসিকের চুক্তিটা নবায়নযোগ্য। তাদের আধুনিক রাইডের শর্ত দিয়েছি। ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে তারা আধুনিক রাইড সংগ্রহ করছে। আগ্রাবাদ শিশুপার্ক নিয়ে মামলা চলছে। এ ছাড়া সাড়ে তিনশ মামলা চলছে বিভিন্ন বিষয়ে। তিনি সিটি কর্পোরেশনের সফলতা ও ব্যর্থতা তুলে ধরার পাশাপাশি সঠিক তথ্য না জেনে সংবাদ পরিবেশন না করার জন্য সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানান।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন